
‘জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে শপথ’—এই প্রতিপাদ্যে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় সম্পন্ন হয়েছে এক ব্যতিক্রমধর্মী গণসচেতনতামূলক আয়োজন। শনিবার (২৬ জুলাই) সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে উপজেলা পরিষদ হলরুমে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে, উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক কার্যালয়ের সহযোগিতায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি সারা দেশের সঙ্গে একযোগে যুক্ত হন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
শ্রদ্ধা ও স্মৃতিচারণায় শুরুঃ-
অনুষ্ঠানের শুরুতে গভীর শ্রদ্ধার সাথে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয় জুলাই মাসে শহীদ হওয়া সকল বীর সন্তানদের স্মরণে। একই সঙ্গে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয় সাম্প্রতিক সময়ে বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো মাইলস্টোন স্কুলের শিক্ষার্থীসহ সকল নিহতদের স্মরণে। এরপর ভার্চুয়ালী সারা দেশের মানুষ একযোগে বিশেষ মোনাজাতে অংশগ্রহণ করেন।
সমগ্র দেশ একযোগে শপথে অংশগ্রহণঃ-
পরে সারা দেশের ন্যায় নান্দাইলেও লাখো মানুষের সঙ্গে একযোগে “লাখো কণ্ঠে শপথ” পাঠ অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশগ্রহণকারীরা সমাজ গঠনে নৈতিক দায়িত্ব পালনের অঙ্গীকার করেন। শপথ পাঠের মূল বক্তব্যে উঠে আসে—
সহিংসতা, দারিদ্র্য, নারী ও শিশু নির্যাতন ও বৈষম্য দূর করার প্রতিশ্রুতি।
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য সেবার সহজলভ্যতা নিশ্চিত করার অঙ্গীকার।
নারী ও শিশুদের জন্য শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত নিরাপদ সমাজ গঠনের সংকল্প।
সব শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণে একটি মানবিক ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র নির্মাণের লক্ষ্য।
এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও পৌর প্রশাসক মো. ফয়জুর রহমান, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রাশেদা বেগম, জামায়াতে ইসলামী নান্দাইল পৌর শাখার আমীর মো. মাহতাবউদ্দিন, সিনিয়র সাংবাদিক আলম ফরাজী, বৈষম্যের শিকার বিশেষ শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি শেখ সাদী, জুলাই শহীদ পরিবারের সদস্যগণ, সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মী এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা।
উপস্থিত বক্তারা বলেন, “এই ধরনের উদ্যোগ সমাজ পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে মানবিক মূল্যবোধ ও সামাজিক দায়িত্ববোধ জাগ্রত করাই আজকের মূল প্রেরণা।”
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে সারা দেশের সঙ্গে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে সবাই একযোগে শপথ পাঠ করেন। এ সময় পুরো হলরুম জুড়ে এক আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হয়।
এই ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজনের মাধ্যমে একটি স্পষ্ট বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়— “সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ একত্রিত হয়ে একটি ন্যায়ভিত্তিক, নিরাপদ ও মানবিক বাংলাদেশ গঠনে সক্রিয় ভূমিকা রাখবে।”