০৮:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মাইলস্টোন ট্রাজেডি-ভোলায় পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত মাসুমা

  • শরীফ হোসাইন
  • পোস্ট হয়েছেঃ ১০:৫৩:৩৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫
  • 18
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত অফিস সহকারী মাসুমা বেগমকে (৩৮) ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার বড়মানিকা ইউনিয়নের কুড়ালিয়া গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়েছে। রবিবার (২৭ জুলাই) সকাল ৯টায় তাঁর গ্রামের বাড়ি  কুড়ালিয়া গ্রামে জানাযা নামাজ শেষে রুন্দি বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। নিহত মাসুমা উপজেলার কুড়ালিয়া গ্রামের সেলিম রুন্দির স্ত্রী। তিনি মাইলস্টোন স্কুলের অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। প্রশিক্ষণবিমান বিধ্বস্তের দিন তিনি বাচ্চাদের উদ্ধার করতে যেয়ে আগুনে দগ্ধ হন।  শনিবার (২৬ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। শনিবার (২৬ জুলাই) মধ্যরাতে মাসুমা বেগমের মরদেহ বহনকারী গাড়িটি কুড়ালিয়া গ্রামে আসে।   গাড়িটি গ্রামে আসলে স্বজনদের আর্তনাদে পুরো এলাকার  পরিবেশ ভাড়ী হয়ে ওঠে। মাসুমার মৃত্যুর খবরে পুরো গ্রামে নেমে আসে শোকের ছায়া।  মাসুমার স্বামী সেলিম সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন। সেলিম জানান, দুর্ঘটনার দিন মাসুমা মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজে কর্মরত ছিলেন। আমরা খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে গিয়ে জানতে পারি আগুন দগ্ধ হয়ে তার শরীরে ৯০ শতাংশ পুরে গিয়েছে। এরপর টানা ৫ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকে গতকাল দুটি সন্তান ও আমাদের রেখে চলে গেছেন। এখন সবই স্মৃতি।
তিনি আরও জানান, ঘটনার দিন স্কুলটি ছুটি হওয়ার পর মাসুমা বাচ্চাদের নিয়ে বের হচ্ছিলেন। এমন সময় দুর্ঘটনাটি ঘটে। ইচ্ছে করলে সে বাহিরে এসে নিজের জীবন রক্ষা করতে পারতেন। কিন্তু আমাদেরও বাচ্চা আছে সেই চিন্তা থেকে অন্য বাচ্চাদের বাঁচাতে গিয়ে মাসুমা আগুনে দগ্ধ হন।  এদিন সকালের বৃষ্টি উপেক্ষা করে বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রায়হান-উজ্জামানসহ স্থানীয় রাজনৈতিক, সামাজিক ও সকল ধর্মপ্রান মুসল্লিরা মাসুমার জানাযা নামাজে অংশগ্রহণ করেন। এ সময় নির্বাহী কর্মকর্তা ওই পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা করেন। ভবিষ্যতেও নিহতের পরিবারকে সাধ্যমতো সহযোগিতা প্রদান করা হবে বলে তিনি জানান।  মাসুমার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ভোলা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো: হাফিজ ইব্রাহিম ও তাঁর সহধর্মিণী মাফরুজা সুলতানা। তারা মাসুমার পরিবারের পাশে থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতার কথা জানিয়েছেন।  উল্লেখ্য, দুর্ঘটনার দিন মাসুমা আগুনে দগ্ধ হন। এসময় তার শরীরের প্রায় ৯০ শতাংশ পুড়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হলে অবস্থার অবনতি দেখে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউতে) রাখা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কাছে হার মেনে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। শুধু ছবিটি তার স্মৃতি হিসেবে রয়ে গেল।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

পাঁচ মাস ২৫ দিনে কোরআনের হাফেজ হলো শাহরাস্তির তানভীর

মাইলস্টোন ট্রাজেডি-ভোলায় পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত মাসুমা

পোস্ট হয়েছেঃ ১০:৫৩:৩৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত অফিস সহকারী মাসুমা বেগমকে (৩৮) ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার বড়মানিকা ইউনিয়নের কুড়ালিয়া গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়েছে। রবিবার (২৭ জুলাই) সকাল ৯টায় তাঁর গ্রামের বাড়ি  কুড়ালিয়া গ্রামে জানাযা নামাজ শেষে রুন্দি বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। নিহত মাসুমা উপজেলার কুড়ালিয়া গ্রামের সেলিম রুন্দির স্ত্রী। তিনি মাইলস্টোন স্কুলের অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। প্রশিক্ষণবিমান বিধ্বস্তের দিন তিনি বাচ্চাদের উদ্ধার করতে যেয়ে আগুনে দগ্ধ হন।  শনিবার (২৬ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। শনিবার (২৬ জুলাই) মধ্যরাতে মাসুমা বেগমের মরদেহ বহনকারী গাড়িটি কুড়ালিয়া গ্রামে আসে।   গাড়িটি গ্রামে আসলে স্বজনদের আর্তনাদে পুরো এলাকার  পরিবেশ ভাড়ী হয়ে ওঠে। মাসুমার মৃত্যুর খবরে পুরো গ্রামে নেমে আসে শোকের ছায়া।  মাসুমার স্বামী সেলিম সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন। সেলিম জানান, দুর্ঘটনার দিন মাসুমা মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজে কর্মরত ছিলেন। আমরা খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে গিয়ে জানতে পারি আগুন দগ্ধ হয়ে তার শরীরে ৯০ শতাংশ পুরে গিয়েছে। এরপর টানা ৫ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকে গতকাল দুটি সন্তান ও আমাদের রেখে চলে গেছেন। এখন সবই স্মৃতি।
তিনি আরও জানান, ঘটনার দিন স্কুলটি ছুটি হওয়ার পর মাসুমা বাচ্চাদের নিয়ে বের হচ্ছিলেন। এমন সময় দুর্ঘটনাটি ঘটে। ইচ্ছে করলে সে বাহিরে এসে নিজের জীবন রক্ষা করতে পারতেন। কিন্তু আমাদেরও বাচ্চা আছে সেই চিন্তা থেকে অন্য বাচ্চাদের বাঁচাতে গিয়ে মাসুমা আগুনে দগ্ধ হন।  এদিন সকালের বৃষ্টি উপেক্ষা করে বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রায়হান-উজ্জামানসহ স্থানীয় রাজনৈতিক, সামাজিক ও সকল ধর্মপ্রান মুসল্লিরা মাসুমার জানাযা নামাজে অংশগ্রহণ করেন। এ সময় নির্বাহী কর্মকর্তা ওই পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা করেন। ভবিষ্যতেও নিহতের পরিবারকে সাধ্যমতো সহযোগিতা প্রদান করা হবে বলে তিনি জানান।  মাসুমার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ভোলা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো: হাফিজ ইব্রাহিম ও তাঁর সহধর্মিণী মাফরুজা সুলতানা। তারা মাসুমার পরিবারের পাশে থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতার কথা জানিয়েছেন।  উল্লেখ্য, দুর্ঘটনার দিন মাসুমা আগুনে দগ্ধ হন। এসময় তার শরীরের প্রায় ৯০ শতাংশ পুড়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হলে অবস্থার অবনতি দেখে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউতে) রাখা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কাছে হার মেনে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। শুধু ছবিটি তার স্মৃতি হিসেবে রয়ে গেল।