
খুলনার কয়রা উপজেলার উত্তর বেদকাশি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি সরদার মতিয়ার রহমান পদত্যাগ করেন ২০১৮ সালের ২৫ ডিসেম্বর। এরপর থেকে তিনি আওয়ামী লীগের মিছিল-সমাবেশে নিয়মিত উপস্থিত হতে থাকেন। এমনকি আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নির্বাচনী জনসভায় নৌকা প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেও বক্তৃতা দিয়েছেন তিনি। গত বছরের ৫ আগস্টের আগে পর্যন্ত আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করেছেন। বর্তমানে তাঁকে ওই ইউনিয়ন বিএনপির ‘সার্চ কমিটি’র প্রধান করা হয়েছে। সেখানে প্রকৃত বিএনপি খুঁজে বের করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাঁকে।
তবে এমন ঘটনা কেবল উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নে নয়। উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের সার্চ কমিটিতেই মতিয়ার রহমানের মতো বিতর্কিতরা স্থান পেয়েছেন। এতে স্থানীয় বিএনপি নেতা-কর্মীদের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। এর প্রতিবাদে রোববার (২৭ জুলাই) বিকালে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন স্থানীয় বিএনপি ও এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। সমাবেশে বক্তারা বিতর্কিত সার্চ কমিটি বিলুপ্তের আহ্বায়ক জানান।
গত ২৩ জুলাই ইউনিয়ন বিএনপির কর্মী সভায় কয়রা উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে ‘সার্চ কমিটি’ ঘোষণা করা হয়। সভায় খুলনা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোল্লা খায়রুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু। সেখানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কয়রা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও খুলনা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোমরেজুল ইসলাম।
গত ২৩ জুলাই ইউনিয়ন বিএনপির কর্মী সভায় কয়রা উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে ‘সার্চ কমিটি’ ঘোষণা করা হয়। সভায় খুলনা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোল্লা খায়রুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু। সেখানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কয়রা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও খুলনা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোমরেজুল ইসলাম।
প্রতিবাদ সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য ও যুবদলের সদস্যসচিব মোহতাসিম বিল্লাহ অভিযোগ করেন, তড়িঘড়ি করে জেলা বিএনপি নেতারা কয়রায় ইউনিয়ন বিএনপির ‘ইনডোর কর্মী সভা’ করেছেন। ওই সভায় কেন্দ্রিয় বিএনপির নির্দেশনা উপেক্ষা করে অর্থের বিনিময়ে আওয়ামী লীগের সহযোগীদের বিএনপি’র সার্চ কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে। প্রকৃত বিএনপি অনুসন্ধানের দায়িত্ব যাদেরকে দেওয়া হয়েছে গত ১৬ বছর তারা স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের দালালি করেছে।
কয়রা উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও উপজেলা ওলামা দলের সভাপতি মাওলানা গোলাম মোস্তফা বলেন, কেন্দ্রিয় বিএনপির স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে, আওয়ামী লীগের পাতানো নির্বাচনে যারা অংশ নিয়েছেন অথবা যারা ওই নির্বাচনে প্রচার-প্রচারনায় অংশ নিয়েছেন তাদের সঙ্গে বিএনপির কোন সম্পর্ক থাকবে না। এমনকি ওই সব লোকের সঙ্গে বিএনপির কোন নেতার যোগাযোগও থাকতে পারবে না। অথচ যারা দুঃসময়ে দল ছেড়ে আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করেছে এখন তাদেরকে আবার অর্থের বিনিময়ে দলে ভেড়ানো হচ্ছে। এটা দলের ত্যাগী কর্মীদের সাথে বেঈমানি করা হচ্ছে।
কয়রা উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও উপজেলা ওলামা দলের সভাপতি মাওলানা গোলাম মোস্তফা বলেন, কেন্দ্রিয় বিএনপির স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে, আওয়ামী লীগের পাতানো নির্বাচনে যারা অংশ নিয়েছেন অথবা যারা ওই নির্বাচনে প্রচার-প্রচারনায় অংশ নিয়েছেন তাদের সঙ্গে বিএনপির কোন সম্পর্ক থাকবে না। এমনকি ওই সব লোকের সঙ্গে বিএনপির কোন নেতার যোগাযোগও থাকতে পারবে না। অথচ যারা দুঃসময়ে দল ছেড়ে আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করেছে এখন তাদেরকে আবার অর্থের বিনিময়ে দলে ভেড়ানো হচ্ছে। এটা দলের ত্যাগী কর্মীদের সাথে বেঈমানি করা হচ্ছে।
প্রতিবাদ সমাবেশে জানানো হয়, মহেশ্বরীপুর ইউনিয়ন বিএনপির ১৯ সদস্যের সার্চ কমিটির মধ্যে ৯ জনই আওয়ামী লীগের। দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের সার্চ কমিটিতে বর্তমান ইউপি সদস্য গোলাম কিবরিয়ার নাম রয়েছে। তিনি ওই ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান আছের আলী মোড়লের হয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়েছিলেন। আমাদি ইউনিয়নের সার্চ কমিটিতে স্থান পাওয়া সোহেল রানা আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আকতারুজ্জামান বাবুর আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত। তিনি ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে আকতারুজ্জামান বাবুর নির্বাচনী প্রচারনায় সরাসরি অংশ নিয়েছেন। এছাড়া তিনি ওই ইউনিয়নের নৌকা প্রতিকের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জুয়েলের সার্বক্ষণিক সহযোগী। মহারাজপুর ইউনিয়নের সার্চ কমিটিতে স্থান পাওয়া ফয়জুল করিম খোকন ওই ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের নির্বাচনী এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন। এছাড়া কয়রা সদর ইউনিয়নের সার্চ কমিটির সদস্য এফ এম মনিরুজ্জামান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহসীন রেজার নির্বাচনী জনসভায় ভোট প্রার্থনা করে বেড়িয়েছেন। এসব ব্যক্তির ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন সাংগঠনিক ব্যবস্থা না নিয়ে ।
জানতে চাইলে খুলনা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাংগঠনিক কমিটির প্রধান মোল্লা খায়রুল ইসলাম বলেন, সার্চ কমিটিতে বিতর্কিত লোক ঢুকেছে এমন অভিযোগ এখনও পাওয়া যায়নি। যদি বিতর্কিত কেউ ঢুকে থাকে এবং সুস্পষ্ট কোন অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে আমরা তাকে কমিটি থেকে বাদ দেব।
জানতে চাইলে খুলনা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাংগঠনিক কমিটির প্রধান মোল্লা খায়রুল ইসলাম বলেন, সার্চ কমিটিতে বিতর্কিত লোক ঢুকেছে এমন অভিযোগ এখনও পাওয়া যায়নি। যদি বিতর্কিত কেউ ঢুকে থাকে এবং সুস্পষ্ট কোন অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে আমরা তাকে কমিটি থেকে বাদ দেব।