০৪:৪৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মানিক ব্যাপারীর জীবনসংগ্রাম

  • Md Shohag Mridha
  • পোস্ট হয়েছেঃ ০৮:১৮:১৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫
  • 57
মানিক ব্যাপারী ছোটবেলা থেকেই বাস্তব জীবনের কঠিন সত্যের সঙ্গে পরিচিত ছিলেন। গ্রামের এক দরিদ্র পরিবারে জন্ম তাঁর। বাবা ছিলেন একজন দিনমজুর, মা গৃহিণী। পরিবারের অভাব-অনটনের কারণে মানিককে খুব ছোট বয়সেই বাবা মা চেষ্টা করলেও হয়ে ওঠে না স্কুল জীবনের পড়ালেখা ,নামতে হয় কাজে।
তবুও তিনি হাল ছাড়েননি। জীবনের প্রতি ছিল অগাধ বিশ্বাস, আর পরিশ্রমের প্রতি অসীম শ্রদ্ধা। মাত্র ১৩ বছর বয়সে স্থানীয় একটি বিস্কুট ফ্যাক্টরিতে কাজ নেন। সকাল সকাল উঠে কাজে যান, সারাদিন ঘাম ঝরিয়ে পরিশ্রম করেন, এরপর এই শুরু হয় জীবনের আরেকটি ধাপ আস্তে আস্তে একটি মেয়ের প্রতি ভালোবাসা শুরু হওয়া মানে হলো—সে অনুভূতির জন্ম ধীরে ধীরে, নিঃশব্দে এবং স্বাভাবিকভাবে ঘটে। এটা হয়ত শুরুতে শুধুই কৌতূহল ছিল, কিংবা তার ব্যবহার বা হাসির প্রতি মুগ্ধতা। তারপর ছোট ছোট মুহূর্তে, তার উপস্থিতি যখন ভালো লাগে, তার কথা মনে পড়ে, কিংবা তার আনন্দে নিজের আনন্দ খুঁজে পাওয়া শুরু হয়
মানিক ব্যাপারী ও শারমিন আক্তার—ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ এক যুগল, যাঁরা পরিবারের অজান্তে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। যদিও শুরুতে পরিবার এই সম্পর্ক মেনে নেয়নি, তবে সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে মানিকের পরিবার ধীরে ধীরে সম্পর্কটিকে স্বীকৃতি দেয়।
তিন বছর পার করেছে তাদের সংসারজীবন। এ সময়ের মধ্যে অনেক চড়াই-উতরাই পার করলেও একে অপরের প্রতি ভালোবাসায় কোনো ঘাটতি ছিল না। একে অপরকে চোখে চোখে রেখে চলেছে, সুখ-দুঃখের সাথী হয়ে।
তবুও, তাদের জীবনে রয়েছে একটি অপূর্ণতা—একটি সন্তানের অভাব। মানিক ও শারমিন কেবল দাম্পত্য জীবনের সুখই খুঁজছিলেন না, তারা চেয়েছিলেন সেই সুখকে পরিপূর্ণ করতে একটি নতুন অতিথির আগমন হোক। নবজাতকের জন্য ছিল তাদের দুজনেরই অগণিত স্বপ্ন। সন্তান যেন তাদের ভালোবাসার সাক্ষী হয়ে ওঠে, যেন মানিকের বাবা-মাও দাদা-দাদি হয়ে স্নেহে ও দুষ্টামিতে সময় কাটাতে পারেন।
তাদের সংসার সুখের হলেও, সন্তানহীনতার যন্ত্রণা মাঝে মাঝে তাদের মানসিকভাবে কুরে কুরে খায়। তবুও, তারা হার মানেননি। নিজেদের ভালোবাসা আর একে অপরের প্রতি আস্থা দিয়ে আগামীর জন্য পথ চলছেন, বিশ্বাস করছেন—একদিন না একদিন তাদের স্বপ্ন পূরণ হবেই।
তার সাফল্য আজ শুধু ব্যক্তিগত পর্যায়ে সীমাবদ্ধ নয়, বরং সমাজের প্রতিটি স্তরে ছড়িয়ে পড়ছে ইতিবাচক পরিবর্তনের বার্তা। অনেকে বলছেন, “মানিক ব্যাপারী প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, ইচ্ছাশক্তি থাকলে সবকিছুই সম্ভব।”
সমাজ বিশ্লেষকদের মতে, যদি দেশের প্রতিটি তরুণ মানিক ব্যাপারীর মতো স্বপ্ন দেখে এবং কাজ করে, তবে আগামী দিনের বাংলাদেশ হবে আত্মনির্ভর, উন্নত ও মানবিক মূল্যবোধে সমৃদ্ধ এক রাষ্ট্র।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

আ.লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধের ঘোষণায় শাহবাগে ছাত্র-জনতার উল্লাস

মানিক ব্যাপারীর জীবনসংগ্রাম

পোস্ট হয়েছেঃ ০৮:১৮:১৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫
মানিক ব্যাপারী ছোটবেলা থেকেই বাস্তব জীবনের কঠিন সত্যের সঙ্গে পরিচিত ছিলেন। গ্রামের এক দরিদ্র পরিবারে জন্ম তাঁর। বাবা ছিলেন একজন দিনমজুর, মা গৃহিণী। পরিবারের অভাব-অনটনের কারণে মানিককে খুব ছোট বয়সেই বাবা মা চেষ্টা করলেও হয়ে ওঠে না স্কুল জীবনের পড়ালেখা ,নামতে হয় কাজে।
তবুও তিনি হাল ছাড়েননি। জীবনের প্রতি ছিল অগাধ বিশ্বাস, আর পরিশ্রমের প্রতি অসীম শ্রদ্ধা। মাত্র ১৩ বছর বয়সে স্থানীয় একটি বিস্কুট ফ্যাক্টরিতে কাজ নেন। সকাল সকাল উঠে কাজে যান, সারাদিন ঘাম ঝরিয়ে পরিশ্রম করেন, এরপর এই শুরু হয় জীবনের আরেকটি ধাপ আস্তে আস্তে একটি মেয়ের প্রতি ভালোবাসা শুরু হওয়া মানে হলো—সে অনুভূতির জন্ম ধীরে ধীরে, নিঃশব্দে এবং স্বাভাবিকভাবে ঘটে। এটা হয়ত শুরুতে শুধুই কৌতূহল ছিল, কিংবা তার ব্যবহার বা হাসির প্রতি মুগ্ধতা। তারপর ছোট ছোট মুহূর্তে, তার উপস্থিতি যখন ভালো লাগে, তার কথা মনে পড়ে, কিংবা তার আনন্দে নিজের আনন্দ খুঁজে পাওয়া শুরু হয়
মানিক ব্যাপারী ও শারমিন আক্তার—ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ এক যুগল, যাঁরা পরিবারের অজান্তে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। যদিও শুরুতে পরিবার এই সম্পর্ক মেনে নেয়নি, তবে সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে মানিকের পরিবার ধীরে ধীরে সম্পর্কটিকে স্বীকৃতি দেয়।
তিন বছর পার করেছে তাদের সংসারজীবন। এ সময়ের মধ্যে অনেক চড়াই-উতরাই পার করলেও একে অপরের প্রতি ভালোবাসায় কোনো ঘাটতি ছিল না। একে অপরকে চোখে চোখে রেখে চলেছে, সুখ-দুঃখের সাথী হয়ে।
তবুও, তাদের জীবনে রয়েছে একটি অপূর্ণতা—একটি সন্তানের অভাব। মানিক ও শারমিন কেবল দাম্পত্য জীবনের সুখই খুঁজছিলেন না, তারা চেয়েছিলেন সেই সুখকে পরিপূর্ণ করতে একটি নতুন অতিথির আগমন হোক। নবজাতকের জন্য ছিল তাদের দুজনেরই অগণিত স্বপ্ন। সন্তান যেন তাদের ভালোবাসার সাক্ষী হয়ে ওঠে, যেন মানিকের বাবা-মাও দাদা-দাদি হয়ে স্নেহে ও দুষ্টামিতে সময় কাটাতে পারেন।
তাদের সংসার সুখের হলেও, সন্তানহীনতার যন্ত্রণা মাঝে মাঝে তাদের মানসিকভাবে কুরে কুরে খায়। তবুও, তারা হার মানেননি। নিজেদের ভালোবাসা আর একে অপরের প্রতি আস্থা দিয়ে আগামীর জন্য পথ চলছেন, বিশ্বাস করছেন—একদিন না একদিন তাদের স্বপ্ন পূরণ হবেই।
তার সাফল্য আজ শুধু ব্যক্তিগত পর্যায়ে সীমাবদ্ধ নয়, বরং সমাজের প্রতিটি স্তরে ছড়িয়ে পড়ছে ইতিবাচক পরিবর্তনের বার্তা। অনেকে বলছেন, “মানিক ব্যাপারী প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, ইচ্ছাশক্তি থাকলে সবকিছুই সম্ভব।”
সমাজ বিশ্লেষকদের মতে, যদি দেশের প্রতিটি তরুণ মানিক ব্যাপারীর মতো স্বপ্ন দেখে এবং কাজ করে, তবে আগামী দিনের বাংলাদেশ হবে আত্মনির্ভর, উন্নত ও মানবিক মূল্যবোধে সমৃদ্ধ এক রাষ্ট্র।