১০:৫২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গোয়ালন্দের পায়াকট বাংলাদেশ “সেফহোমে খেলনা, খাবার আর ভালোবাসা ‘বাবা’ হয়ে এলেন ওসি রাকিবুল”

বাবা নেই। কেউবা মা হারিয়েছে। আবার অনেকেরই দুজনেই নেই। অথচ বয়সটুকু এখনো খেলাধুলা, ভালোবাসা আর মমতার ছায়ায় বড় হওয়ার। এমন ১৫জন অবহেলিত শিশু একসাথে বসবাস করছে পায়াক্ট বাংলাদেশ নামের একটি সামাজিক সংগঠনের সেফহোমে। দৌলতদিয়া যৌনপল্লীর এ সমস্ত শিশুদের লেখাপড়া থেকে শুরু করে জীবনের সব দায়িত্বই পালন করছে এই সংগঠনটি।
“পায়াক্ট বাংলাদেশ” সামাজিক এই সংগঠন ইতিপূর্বে সেফহোমের ১১টি মেয়েকে সামাজিক ভাবে বিয়ে দিয়েছেন। এই সকল মেয়েরা স্বামী-সন্তান নিয়ে এখানে বেড়াতে আসে। এবং একটি ছেলে কোরআনে উচ্চতর শিক্ষা নিচ্ছেন ঢাকায় ও একটি মেয়ে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ালেখা করছেন।
২০০১-২০০৭ পর্যন্ত দাতা সংস্থার সহযোগিতা থাকলেও ২০০৭ সাল এর পর থেকে পায়াক্ট বাংলাদেশ নামের এই মানবিক প্রতিষ্ঠানটি অনাথ ও অবহেলিত শিশুদের আশ্রয়, লালন-পালন ও শিক্ষার দায়িত্ব পালন করে আসছে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক সংকটে থাকা সংগঠনটি বর্তমানে টিকে আছে কেবল নিজেদের সামর্থ্যের ওপর নির্ভর করে। ফলে এই শিশুদের ভবিষ্যৎ আজ বড়ই অনিশ্চিত।
ঠিক এই সময় পাশে এসে দাঁড়ালেন গোয়ালন্দ ঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম। হঠাৎ করেই তিনি হাজির হন পায়াক্ট বাংলাদেশ এর সেফহোমে। সকল শিশুদের জন্য নিয়ে আসেন খেলনা সামগ্রী। শুধু তাই নয়, শিশুদের সঙ্গে দীর্ঘ সময় কাঁটান, একসাথে খেয়েছেন উন্নতমানের দুপুরের খাবারও। একদিনের জন্য অসহায় শিশুরা বাবার পরশ, ¯েœহ, মায়া, আদর-সোহাগ ও ভালবাসা পেল।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম বলেন, “এই ব্যস্ত জীবনে একটি সুন্দর দিন কাঁটালাম। এখানে না এলে বুঝতেই পারতাম না বাবা-মা হারা শিশুদের জীবন কতটা কষ্টের। এই মুহূর্ত আমার কর্মজীবনের অন্যতম সুন্দর একটি স্মৃতি হয়ে থাকবে।”
তিনি আরও জানান, যতদিন এই এলাকায় কর্মরত থাকবেন, ততদিন এই ১৫ জন শিশুর জন্য শিক্ষা সামগ্রী প্রদান করে যাবেন। পাশাপাশি সমাজের দানশীল ও সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের এগিয়ে আসার আহ্বানও জানান তিনি।
সামাজিক সংগঠন “পায়াক্ট বাংলাদেশ” এর ম্যানেজার মো. মজিবুর রহমান জুয়েল বলেন, “এখানে যারা আছে তারা সবাই যৌনপল্লীর অবহেলিত শিশু। অনেকের বাবা নেই, কারো কারো মা-ও নেই। আমরা চেষ্টা করছি তাদের স্বাভাবিক একটি জীবনের পথে ফিরিয়ে আনতে।”
এই ধরনের মানবিক উদ্যোগ ও ভালোবাসার স্পর্শ এসব শিশুদের মুখে একটু হাসি ফোঁটায়। সমাজের প্রতিটি স্তরে এ ধরনের উদ্যোগ ছড়িয়ে পড়লেই গড়ে উঠবে একটি সহানুভূতিশীল ও দায়িত্ববান বাংলাদেশ।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

আওয়ামীলীগ কচুপাতার পানির দল নয়,কেউ নিষিদ্ধ করলেই নিষিদ্ধ হবে

গোয়ালন্দের পায়াকট বাংলাদেশ “সেফহোমে খেলনা, খাবার আর ভালোবাসা ‘বাবা’ হয়ে এলেন ওসি রাকিবুল”

পোস্ট হয়েছেঃ ০৭:৩৬:৪৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫
বাবা নেই। কেউবা মা হারিয়েছে। আবার অনেকেরই দুজনেই নেই। অথচ বয়সটুকু এখনো খেলাধুলা, ভালোবাসা আর মমতার ছায়ায় বড় হওয়ার। এমন ১৫জন অবহেলিত শিশু একসাথে বসবাস করছে পায়াক্ট বাংলাদেশ নামের একটি সামাজিক সংগঠনের সেফহোমে। দৌলতদিয়া যৌনপল্লীর এ সমস্ত শিশুদের লেখাপড়া থেকে শুরু করে জীবনের সব দায়িত্বই পালন করছে এই সংগঠনটি।
“পায়াক্ট বাংলাদেশ” সামাজিক এই সংগঠন ইতিপূর্বে সেফহোমের ১১টি মেয়েকে সামাজিক ভাবে বিয়ে দিয়েছেন। এই সকল মেয়েরা স্বামী-সন্তান নিয়ে এখানে বেড়াতে আসে। এবং একটি ছেলে কোরআনে উচ্চতর শিক্ষা নিচ্ছেন ঢাকায় ও একটি মেয়ে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ালেখা করছেন।
২০০১-২০০৭ পর্যন্ত দাতা সংস্থার সহযোগিতা থাকলেও ২০০৭ সাল এর পর থেকে পায়াক্ট বাংলাদেশ নামের এই মানবিক প্রতিষ্ঠানটি অনাথ ও অবহেলিত শিশুদের আশ্রয়, লালন-পালন ও শিক্ষার দায়িত্ব পালন করে আসছে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক সংকটে থাকা সংগঠনটি বর্তমানে টিকে আছে কেবল নিজেদের সামর্থ্যের ওপর নির্ভর করে। ফলে এই শিশুদের ভবিষ্যৎ আজ বড়ই অনিশ্চিত।
ঠিক এই সময় পাশে এসে দাঁড়ালেন গোয়ালন্দ ঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম। হঠাৎ করেই তিনি হাজির হন পায়াক্ট বাংলাদেশ এর সেফহোমে। সকল শিশুদের জন্য নিয়ে আসেন খেলনা সামগ্রী। শুধু তাই নয়, শিশুদের সঙ্গে দীর্ঘ সময় কাঁটান, একসাথে খেয়েছেন উন্নতমানের দুপুরের খাবারও। একদিনের জন্য অসহায় শিশুরা বাবার পরশ, ¯েœহ, মায়া, আদর-সোহাগ ও ভালবাসা পেল।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম বলেন, “এই ব্যস্ত জীবনে একটি সুন্দর দিন কাঁটালাম। এখানে না এলে বুঝতেই পারতাম না বাবা-মা হারা শিশুদের জীবন কতটা কষ্টের। এই মুহূর্ত আমার কর্মজীবনের অন্যতম সুন্দর একটি স্মৃতি হয়ে থাকবে।”
তিনি আরও জানান, যতদিন এই এলাকায় কর্মরত থাকবেন, ততদিন এই ১৫ জন শিশুর জন্য শিক্ষা সামগ্রী প্রদান করে যাবেন। পাশাপাশি সমাজের দানশীল ও সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের এগিয়ে আসার আহ্বানও জানান তিনি।
সামাজিক সংগঠন “পায়াক্ট বাংলাদেশ” এর ম্যানেজার মো. মজিবুর রহমান জুয়েল বলেন, “এখানে যারা আছে তারা সবাই যৌনপল্লীর অবহেলিত শিশু। অনেকের বাবা নেই, কারো কারো মা-ও নেই। আমরা চেষ্টা করছি তাদের স্বাভাবিক একটি জীবনের পথে ফিরিয়ে আনতে।”
এই ধরনের মানবিক উদ্যোগ ও ভালোবাসার স্পর্শ এসব শিশুদের মুখে একটু হাসি ফোঁটায়। সমাজের প্রতিটি স্তরে এ ধরনের উদ্যোগ ছড়িয়ে পড়লেই গড়ে উঠবে একটি সহানুভূতিশীল ও দায়িত্ববান বাংলাদেশ।