
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মারুফা আক্তার (২৪) নামে এক নারীর দায়ের করা যৌতুক ও নির্যাতনের মামলায় তার স্বামী, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্য তরিকুল ইসলামের (২৮) বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন মহামান্য আদালত।
গত ১৫ এপ্রিল জয়পুরহাট সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক নিশীথ রঞ্জন বিশ্বাস এ সমন জারি করেন।
মামলার বাদী মারুফা আক্তার উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের ধনতলা গ্রামের বাবলু মিয়ার মেয়ে। অভিযুক্ত তরিকুল ইসলাম একই ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের ব্যালায়েত হোসেনের ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, প্রায় ছয় বছর আগে ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী পারিবারিকভাবে চার লাখ টাকা দেনমোহরে মারুফা ও তরিকুলের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের একমাত্র পুত্র সন্তান মাজহারুল ইসলাম তাসরিফ (১০ মাস) জন্ম নেয়।
মারুফার অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই তরিকুল ইসলাম এবং তার মা যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকেন এবং তরিকুল ইসলাম নিয়মিত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন। একপর্যায়ে বিষয়টি ৪৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসারকে লিখিতভাবে জানালে সাময়িক সমঝোতা হলেও কিছুদিন পর আবার বড় অংকের যৌতুক দাবি করা হয়।
২০২৩ সালের ২৪ জুলাই মারুফার পরিবার চৌমুহনী বাজারে বাড়ির নির্মাণ করার জন্য তরিকুলকে ৪ লাখ টাকা প্রদান করে। এরপর কিছুদিন সংসার ভালো চললেও আবারও যৌতুকের দাবি শুরু হয়। টাকা না দিলে সংসার না করার হুমকি দিয়ে পুনরায় মারধরসহ অমানবিক নির্যাতন শুরু করেন তরিকুলের আত্মীয়-স্বজন গ্রামে বিভিন্ন মানুষদের বলেন মারুফাকে তালাক দিয়েছে এমন অভিযোগ করেন মারুফা।
অভিযোগে আরও বলা হয়, তরিকুল ইসলাম নারী আসক্ত ও পরকীয়ায় জড়িত। বিজিবিতে চাকরি পাওয়ার পর নিজের খালাতো বোন তামান্নাকে বিয়ে করেন তিনি। তবে পরকীয়ার কারণে পারিবারিকভাবে ৫ লাখ টাকায় বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর দ্বিতীয় বিয়ে করেন মারুফাকে। বর্তমানে তরিকুল বগুড়ায় একটি নার্সিং ইনস্টিটিউটে কর্মরত এক নারীর সঙ্গে সম্পর্ক রেখেছেন বলে দাবি করেছেন মারুফা।
বাদীপক্ষের আইনজীবী জয়পুরহাট জেলা জজ কোর্টের অ্যাডভোকেট অনিক জানান, ২০১৮ সালের যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ ধারা অনুযায়ী আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সমন জারি করেছেন।
অভিযুক্ত বিজিবি সদস্য তরিকুল ইসলাম বলেন, “সংসারে একটু ঝগড়া-বিবাদ হতেই পারে, তাই বলে মামলা করতে হবে। আমি এখন ডিউটিতে আছি পরে আপনার সাথে কথা বলবো বলে ফোন কেটে দেন।
ভুক্তভোগী মারুফা বলেন, “২০২০ সালে আমাদের বিয়ে হয়। শুরুতে ভালো চললেও পরে সে অসৎ উদ্দেশ্যে আমাকে নির্যাতন করতে থাকে। আমি দশ মাসের সন্তানের মুখের দিকে চেয়ে তার সাথে সংসার করতে চাই,, সে আদালতের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করে নিলে আমি তার বাসায় যাব।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাঙামাটি বরকল ৪৫ বিজিবির কমান্ডিং অফিসার বলেন, “আমার ইউনিটের কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে যদি ফৌজদারি আইনে মামলা হয়। এছাড়াও উনার স্ত্রী নিয়মিত আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে, দাপ্তরিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে৷