১০:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নীলফামারীর সৈয়দপুরে শহরের এক মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির কাছে তিন লাখ ৬৯ হাজার ৫২ টাকা পাওয়া গেছে

  • MA Rabby
  • পোস্ট হয়েছেঃ ০৭:১০:৫৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫
  • 59

গত শনিবার বিকেলে হিউম্যানিটি বাংলাদেশ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠনের সদস্যরা ওই ব্যক্তিকে গোসল করাতে গিয়ে তার কাছ থেকে ওই পরিমাণ টাকা উদ্ধার করেছেন। এ সময় তার কাছে থাকা বস্তায় (গাট্টি) জমির একাধিক দলিল-দস্তাবেজও পাওয়া যায়।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রেলওয়ে ও বাণিজ্যিক প্রধান শহর সৈয়দপুরের বিভিন্ন এলাকায় রয়েছেন অনেক মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিতাদের মধ্যে কেউ কেউ শহরের যত্রতত্র চলাফেরা করেন। আবার কেউ বা একটি নির্দিষ্ট এলাকায় অবস্থান নিয়ে থাকেন। এসব মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষের একজন হচ্ছেন আব্দুল গনি (৬৫)। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ শহরের শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়কের জামে মসজিদের সামনে কিংবা জিআরপি ক্যান্টিন এলাকায় অবস্থান করে আসছেন।এ সড়ক দিয়ে চলাফেরা করা মানুষেরা সবাই তাকে কমবেশি চেনে।তিনি দীর্ঘদিন ধরে গোসল করেন না। গরম কি শীত সার্বক্ষণিক ময়লা-অপরিচ্ছন্ন একাধিক পোশাক পরিহিত অবস্থায় থাকেন তিনি। তবে তিনি কাঁধে সব সময় গাট্টি (বস্তা) নিয়ে চলাফেরা করতেন।তিনি লোকজনের সঙ্গে কথাবার্তাও তেমন একটা বলেন না। পথচারীদেরও কোনো রকম বিরক্ত করেন না। কারো কাছেই কোনো কিছু চেয়ে দাবি কিংবা আবদার করেন না। তবে মুখে বিড় বিড় করে কী যেন বলেন অনবরত। একটি হাত সব সময় নড়াচড়া করেন।শনিবার বিকেল আনুমানিক ৪টার দিকে আব্দুল গনি নামের ওই মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে গোসল করানোর উদ্যোগ নেয় হিউম্যানিটি বাংলাদেশ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠনের সদস্যরা। রংপুর বিভাগ এলাকায় মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষকে নিয়ে কাজ করা এই সংগঠনের সদস্যরা তার কাছে গিয়ে পরনে থাকা ময়লা, অপরিচ্ছন্ন ও নোংরা পোশাক খোলার চেষ্টা করেন। এ সময় তার পরনে থাকা শার্টের হাতা, কলার ও শার্টের বিভিন্ন জায়গায় মোড়ানো অবস্থায় অনেক টাকা দেখতে পাওয়া যায়। আর তার সঙ্গে থাকা বস্তা থেকে বিপুল পরিমাণ এক হাজার, পাঁচ শ, এক শ টাকার নোট ও কয়েন পাওয়া যায়। পরে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা বিষয়টি সৈয়দপুর থানা পুলিশকে অবহিত করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশ এসে টাকাসহ ওই মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে থানায় নিয়ে যায়। সেখানে তার কাছে থাকা টাকাগুলো থানা পুলিশ ও উপজেলা সমাজসেবা দপ্তরের কর্মকর্তার কার্যালয়ের ইউনিয়ন সমাজকর্মী রশিদুল ইসলামের উপস্থিতিতে গভীর রাত পর্যন্ত গণনা করা হয়। এতে তার কাছে তিন লাখ ৬৯ হাজার ৫২ টাকা নগদে মিলেছে। টাকাগুলো বর্তমানে সৈয়দপুর থানায় গচ্ছিত রয়েছে।সৈয়দপুর উপজেলা সমাজসেবা দপ্তরের কর্মকর্তার কার্যালয়ের ইউনিয়ন সমাজকর্মী রশিদুল ইসলাম জানান, মানসিক ভারসাম্যহীন আব্দুল গনির পরিবারের সদস্যদের খোঁজ-খবর করা হচ্ছে।একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির কাছে এত পরিমাণ টাকা কী করে এলো- এমন প্রশ্ন এখন শহরের সবার মুখে মুখে। তবে অনেকের জানান, শহরের বিভিন্ন মানুষ তাকে খাওয়ার জন্য নগদ টাকা-পয়সা দিতেন। তিনি মানুষের দেওয়া সেই টাকা-পয়সা খরচ না করে মূলত বস্তা বা শার্টের বিভিন্ন জায়গায় গুঁজে রাখেন।সৈয়দপুর থানার ওসি মো. ফইম উদ্দিন জানান, শহরের একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির কাছ থেকে উল্লিখিত পরিমাণ টাকা উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তার পরিবারের সদস্যদের খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। তাদের সন্ধান পাওয়া গেলে উদ্ধার হওয়া টাকাগুলোসহ তাকে পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।

ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

উপদেষ্টা পরিদর্শন করলো রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ

নীলফামারীর সৈয়দপুরে শহরের এক মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির কাছে তিন লাখ ৬৯ হাজার ৫২ টাকা পাওয়া গেছে

পোস্ট হয়েছেঃ ০৭:১০:৫৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫

গত শনিবার বিকেলে হিউম্যানিটি বাংলাদেশ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠনের সদস্যরা ওই ব্যক্তিকে গোসল করাতে গিয়ে তার কাছ থেকে ওই পরিমাণ টাকা উদ্ধার করেছেন। এ সময় তার কাছে থাকা বস্তায় (গাট্টি) জমির একাধিক দলিল-দস্তাবেজও পাওয়া যায়।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রেলওয়ে ও বাণিজ্যিক প্রধান শহর সৈয়দপুরের বিভিন্ন এলাকায় রয়েছেন অনেক মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিতাদের মধ্যে কেউ কেউ শহরের যত্রতত্র চলাফেরা করেন। আবার কেউ বা একটি নির্দিষ্ট এলাকায় অবস্থান নিয়ে থাকেন। এসব মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষের একজন হচ্ছেন আব্দুল গনি (৬৫)। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ শহরের শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়কের জামে মসজিদের সামনে কিংবা জিআরপি ক্যান্টিন এলাকায় অবস্থান করে আসছেন।এ সড়ক দিয়ে চলাফেরা করা মানুষেরা সবাই তাকে কমবেশি চেনে।তিনি দীর্ঘদিন ধরে গোসল করেন না। গরম কি শীত সার্বক্ষণিক ময়লা-অপরিচ্ছন্ন একাধিক পোশাক পরিহিত অবস্থায় থাকেন তিনি। তবে তিনি কাঁধে সব সময় গাট্টি (বস্তা) নিয়ে চলাফেরা করতেন।তিনি লোকজনের সঙ্গে কথাবার্তাও তেমন একটা বলেন না। পথচারীদেরও কোনো রকম বিরক্ত করেন না। কারো কাছেই কোনো কিছু চেয়ে দাবি কিংবা আবদার করেন না। তবে মুখে বিড় বিড় করে কী যেন বলেন অনবরত। একটি হাত সব সময় নড়াচড়া করেন।শনিবার বিকেল আনুমানিক ৪টার দিকে আব্দুল গনি নামের ওই মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে গোসল করানোর উদ্যোগ নেয় হিউম্যানিটি বাংলাদেশ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠনের সদস্যরা। রংপুর বিভাগ এলাকায় মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষকে নিয়ে কাজ করা এই সংগঠনের সদস্যরা তার কাছে গিয়ে পরনে থাকা ময়লা, অপরিচ্ছন্ন ও নোংরা পোশাক খোলার চেষ্টা করেন। এ সময় তার পরনে থাকা শার্টের হাতা, কলার ও শার্টের বিভিন্ন জায়গায় মোড়ানো অবস্থায় অনেক টাকা দেখতে পাওয়া যায়। আর তার সঙ্গে থাকা বস্তা থেকে বিপুল পরিমাণ এক হাজার, পাঁচ শ, এক শ টাকার নোট ও কয়েন পাওয়া যায়। পরে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা বিষয়টি সৈয়দপুর থানা পুলিশকে অবহিত করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশ এসে টাকাসহ ওই মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে থানায় নিয়ে যায়। সেখানে তার কাছে থাকা টাকাগুলো থানা পুলিশ ও উপজেলা সমাজসেবা দপ্তরের কর্মকর্তার কার্যালয়ের ইউনিয়ন সমাজকর্মী রশিদুল ইসলামের উপস্থিতিতে গভীর রাত পর্যন্ত গণনা করা হয়। এতে তার কাছে তিন লাখ ৬৯ হাজার ৫২ টাকা নগদে মিলেছে। টাকাগুলো বর্তমানে সৈয়দপুর থানায় গচ্ছিত রয়েছে।সৈয়দপুর উপজেলা সমাজসেবা দপ্তরের কর্মকর্তার কার্যালয়ের ইউনিয়ন সমাজকর্মী রশিদুল ইসলাম জানান, মানসিক ভারসাম্যহীন আব্দুল গনির পরিবারের সদস্যদের খোঁজ-খবর করা হচ্ছে।একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির কাছে এত পরিমাণ টাকা কী করে এলো- এমন প্রশ্ন এখন শহরের সবার মুখে মুখে। তবে অনেকের জানান, শহরের বিভিন্ন মানুষ তাকে খাওয়ার জন্য নগদ টাকা-পয়সা দিতেন। তিনি মানুষের দেওয়া সেই টাকা-পয়সা খরচ না করে মূলত বস্তা বা শার্টের বিভিন্ন জায়গায় গুঁজে রাখেন।সৈয়দপুর থানার ওসি মো. ফইম উদ্দিন জানান, শহরের একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির কাছ থেকে উল্লিখিত পরিমাণ টাকা উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তার পরিবারের সদস্যদের খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। তাদের সন্ধান পাওয়া গেলে উদ্ধার হওয়া টাকাগুলোসহ তাকে পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।