
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার জগৎবেড় ইউনিয়নের তিন নং ওয়ার্ডের শুকুরের টারী এলাকার দিনমজুর নজরুল ইসলাম (৫৫) সীমান্ত এলাকায় বসবাস করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। অভাব অনটনের সংসারের মাঝে দুই ছেলে মেয়ের লেখাপড়া ও খাওয়াদাওয়া চালানোই কঠিন। এরপরেও ছোট থেকেই স্বপ্ন দেখে আসে কোন একদিন পাকা ঘরে ঘুমাবে নজরুল ইসলাম। সেই স্বপ্নের গল্প শেয়ার করে স্ত্রী ফিরোজা বেগমের কাছে। স্বামী-স্ত্রীর প্রবল ইচ্ছা শক্তির কারণে গরুর দুধ বিক্রি করে তিলে তিলে জমা করতে থাকে টাকা। গত বছর সেই লালিত স্বপ্ন পূরণের জন্য কিছু ইট সিমেন্ট কিনে পাকা বাড়ির কাজ শুরু করে। ইট গাঁথুনি শেষ হতে হতেই টাকা শেষ হয়ে যায়। বন্ধ হয়ে যায় কাজ। এভাবে চলে যায় আরো ৬ মাস। পাড়ি দেয় দক্ষিণাঞ্চলে ইটভাটায় কাজ করে কিছু টাকা নিয়ে আসে এবং স্ত্রীর কষ্টার্জিত কিছু জমানো টাকা দিয়ে আবারো শুরু করে ঘরে ছাউনি দেওয়ার কাজ। কিন্তু এবার বাধা হয়ে দাঁড়ায় বিজিবি। বিএসএফের অনুরোধে বিজিবি ঐদিনমজুরের বাড়ি নির্মাণের অবশিষ্টকাজে বাধা দেয় এবং নির্মাণ ধীন বাড়ি ভেঙ্গে ফেলতে বলে। এটাই নজরুল ফিরোজা দম্পতির স্বপ্ন নিমিষেই দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়।
সরো জমিনে গিয়ে দেখা যায় কান্না থামছেই না নজরুল ফিরোজা দম্পতির। ভারতে উত্তর তেতুলের ছাড়া এলাকার একটি ছোট পকেট প্রবেশ করে জগউবেড় ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ড শুকরের টারি এলাকায়। প্রস্তর দিক থেকে ওই পকেটে প্রশস্ত হবে ৫০ গজের মতো। পকেটের পাশ দিয়ে বাংলাদেশের শুকরের টারী গ্রামে স্বাধীনতার আগে থেকেই বসবাস করে প্রায় ৫০ টি পরিবার। সেখানে গত ১০ বছরে প্রায় ২০ টি পাকা ও আধা পাকা বাড়ি নির্মাণ করেছে বাংলাদেশিরা। তখন কোন বাধা প্রদান করেনি বিজিবি কিংবা বিএসএফ। শুকুরের টারী মহল্লাটি ভারতের উত্তর তেতুলের ছড়া এলাকার মেইন পিলার থেকে ৫০০ গজ ভেতরে। প্রতিবেশীদের একাধিক বাড়ি নির্মাণে বিজিবি পক্ষ থেকে কোন বাধা না দেওয়ায় অন্যদের দেখাদেখি নজরুল ইসলাম গত ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি বাড়ি নির্মাণ শুরু করে। নিয়মিত বিজিবি টহল দল গেলেও বাড়ি নির্মাণে কোন বাধা প্রদান কিংবা সতর্ক করেনি বলে জানান নজরুল ইসলাম। কিন্তু গত সপ্তাহে টিনের ছাউনি দিতে গেলে বাধা দেয় বিজিবি এবং ভেঙ্গে ফেলতে বলে নির্মনধীন ঘড়টি।
এ বিসয়ে শমসেরনগর নগর বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না। আপনারা ৬১ বিজিবি তে যোগাযোগ করেন।