০৬:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যুবদলের কমিটি বাতিলের দাবিতে পদবঞ্চিতদের বিক্ষোভ,দুই গ্রুপের মধ্যে উক্তেজনা

পাবনায় জাতীয়তাবাদী যুবদলের নবগঠিত কমিটি বাতিলের দাবিতে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। এ সময় আরেকটি পক্ষ পাল্টা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামলে শহরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তবে পুলিশি তৎপরতায় বড় ধরনের সংঘর্ষ হয়নি।
শনিবার (৫ জুলাই) সকালে পদবঞ্চিতদের ব্যানারে জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তসলিম হাসান খান সুইটের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের মহিষের ডিপু থেকে বের হয়ে টেকনিক্যাল মোড় হয়ে শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে নেতাকর্মীরা “কমিটি মানি না মানব না”, “হিমেলের দুই গালে জুতা মারো”, “অবৈধ পকেট কমিটি বাতিল করো”—এমন নানা স্লোগান দেন,বিক্ষোভ শেষে শহীদ মিনারে সমাবেশ হয়।
এতে বক্তব্য রাখেন, তসলিম হাসান খান সুইট, রাশেদ রানা, গিয়াস উদ্দিন রাফসান, বাহার হোসেন, বাপ্পী সরদারসহ অনেকে। তারা বলেন, তিন বছর ধরে দুই সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে জেলা যুবদল চলেছে। কিন্তু সম্মেলন ছাড়াই একতরফাভাবে নতুন পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে আন্দোলনের পরীক্ষিত ও ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে অযোগ্যদের জায়গা দেওয়া হয়েছে।
সমাবেশ থেকে বক্তারা বলেন, অবিলম্বে এই কমিটি বাতিল করে ত্যাগী নেতাকর্মীদের নিয়ে নতুন কমিটি গঠন করতে হবে। তা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।
এর আগে তসলিম হাসান খান সুইটের নেতৃত্বে পদবঞ্চিতরা পাবনা সরকারি কলেজের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় যুবদলের নবগঠিত কমিটির আহ্বায়ক হিমেল রানার অনুসারীরা র‍্যালি বের করলে দু’পক্ষ মুখোমুখি হয়ে পড়ে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলেও পুলিশের হস্তক্ষেপে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি।
পরে হিমেল রানার নেতৃত্বে যুবদলের নতুন কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে শহরের শহীদ চত্বর থেকে একটি মিছিল বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক ঘুরে একই স্থানে এসে শেষ হয়। এরপর সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে যুবদলের আহ্বায়ক ইলিয়াস আহমেদ হিমেল রানা, সদস্য সচিব মনির হোসেনসহ অন্যান্য নেতারা বক্তব্য দেন। তারা বলেন, একটি কুচক্রী মহল ষড়যন্ত্র করে নতুন কমিটি বাতিলের চেষ্টা করছে। কিন্তু এই কমিটি ত্যাগী কর্মীদের দিয়েই গঠন করা হয়েছে।
অন্যদিকে তসলিম হাসান খান সুইট অভিযোগ করে বলেন, “যারা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত না, এমন অনেক আওয়ামী ঘরনার লোকজনকে কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে। এমনকি মাদকের সঙ্গে জড়িতরাও জায়গা পেয়েছে। এটি একটি পকেট কমিটি।”
এই অভিযোগের জবাবে হিমেল রানা বলেন, “যারা পদ পাননি, তারা এখন বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। ত্যাগী কর্মীদের নিয়েই কমিটি করা হয়েছে। যারা সত্যিকার অর্থে দল করেন, তারাই দলে মূল্যায়িত হবেন। অরাজকতা তৈরি করে লাভ নেই।”
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম বলেন, “দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির জন্য সকাল থেকেই শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল। ফলে বড় কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি হয়নি।”
উল্লেখ্য, গত ২৬ জুন ইলিয়াস আহমেদ হিমেল রানাকে আহ্বায়ক ও মনির হোসেনকে সদস্য সচিব করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট পাবনা জেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

কুমিল্লা চৌদ্দগ্রামে যৌথবাহিনীর অভিযানে শ্রমিকলীগ নেতাসহ ৪ মাদক ব‍্যবসায়ী আটক

যুবদলের কমিটি বাতিলের দাবিতে পদবঞ্চিতদের বিক্ষোভ,দুই গ্রুপের মধ্যে উক্তেজনা

পোস্ট হয়েছেঃ ০২:১২:১২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৬ জুলাই ২০২৫
পাবনায় জাতীয়তাবাদী যুবদলের নবগঠিত কমিটি বাতিলের দাবিতে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। এ সময় আরেকটি পক্ষ পাল্টা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামলে শহরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তবে পুলিশি তৎপরতায় বড় ধরনের সংঘর্ষ হয়নি।
শনিবার (৫ জুলাই) সকালে পদবঞ্চিতদের ব্যানারে জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তসলিম হাসান খান সুইটের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের মহিষের ডিপু থেকে বের হয়ে টেকনিক্যাল মোড় হয়ে শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে নেতাকর্মীরা “কমিটি মানি না মানব না”, “হিমেলের দুই গালে জুতা মারো”, “অবৈধ পকেট কমিটি বাতিল করো”—এমন নানা স্লোগান দেন,বিক্ষোভ শেষে শহীদ মিনারে সমাবেশ হয়।
এতে বক্তব্য রাখেন, তসলিম হাসান খান সুইট, রাশেদ রানা, গিয়াস উদ্দিন রাফসান, বাহার হোসেন, বাপ্পী সরদারসহ অনেকে। তারা বলেন, তিন বছর ধরে দুই সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে জেলা যুবদল চলেছে। কিন্তু সম্মেলন ছাড়াই একতরফাভাবে নতুন পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে আন্দোলনের পরীক্ষিত ও ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে অযোগ্যদের জায়গা দেওয়া হয়েছে।
সমাবেশ থেকে বক্তারা বলেন, অবিলম্বে এই কমিটি বাতিল করে ত্যাগী নেতাকর্মীদের নিয়ে নতুন কমিটি গঠন করতে হবে। তা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।
এর আগে তসলিম হাসান খান সুইটের নেতৃত্বে পদবঞ্চিতরা পাবনা সরকারি কলেজের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় যুবদলের নবগঠিত কমিটির আহ্বায়ক হিমেল রানার অনুসারীরা র‍্যালি বের করলে দু’পক্ষ মুখোমুখি হয়ে পড়ে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলেও পুলিশের হস্তক্ষেপে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি।
পরে হিমেল রানার নেতৃত্বে যুবদলের নতুন কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে শহরের শহীদ চত্বর থেকে একটি মিছিল বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক ঘুরে একই স্থানে এসে শেষ হয়। এরপর সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে যুবদলের আহ্বায়ক ইলিয়াস আহমেদ হিমেল রানা, সদস্য সচিব মনির হোসেনসহ অন্যান্য নেতারা বক্তব্য দেন। তারা বলেন, একটি কুচক্রী মহল ষড়যন্ত্র করে নতুন কমিটি বাতিলের চেষ্টা করছে। কিন্তু এই কমিটি ত্যাগী কর্মীদের দিয়েই গঠন করা হয়েছে।
অন্যদিকে তসলিম হাসান খান সুইট অভিযোগ করে বলেন, “যারা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত না, এমন অনেক আওয়ামী ঘরনার লোকজনকে কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে। এমনকি মাদকের সঙ্গে জড়িতরাও জায়গা পেয়েছে। এটি একটি পকেট কমিটি।”
এই অভিযোগের জবাবে হিমেল রানা বলেন, “যারা পদ পাননি, তারা এখন বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। ত্যাগী কর্মীদের নিয়েই কমিটি করা হয়েছে। যারা সত্যিকার অর্থে দল করেন, তারাই দলে মূল্যায়িত হবেন। অরাজকতা তৈরি করে লাভ নেই।”
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম বলেন, “দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির জন্য সকাল থেকেই শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল। ফলে বড় কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি হয়নি।”
উল্লেখ্য, গত ২৬ জুন ইলিয়াস আহমেদ হিমেল রানাকে আহ্বায়ক ও মনির হোসেনকে সদস্য সচিব করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট পাবনা জেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।