০২:১০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জাল সনদে প্রধান শিক্ষক হওয়া আওয়ামী লীগ নেতার অপসরণের দাবী

  • মো: আল- মামুন
  • পোস্ট হয়েছেঃ ০১:০৫:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫
  • 52
শিক্ষা সনদ ইস্যু হওয়ার ৮ মাস আগেই সেই সনদেই চাকরি শুরু। এরপর হয়েছেন প্রধান শিক্ষক তাও আবার ভুয়া সনদে। এসব অভিযোগ এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে। রোববার (১৩ জুলাই) সকালে স্যানিটারি ন্যাপকিন চুরি শিক্ষক শিক্ষকদের গালিগালাজ ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে এই আওয়ামী লীগ নেতা ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ক্লাস বর্জন করে মানববন্ধন করেছে শিক্ষক অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা।
অভিযুক্ত মমিনুর রহমান । তিনি সাতক্ষীরা সদরের ব্রহ্মরাজপুর সম্মিলিত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সাতক্ষীরা পৌর বঙ্গবন্ধু পরিষদের আহ্বায়ক।
মানববন্ধনে  শিক্ষকরা বলেন, প্রধান শিক্ষক মোমিনুর রহমান ‍গালিগালাজসহ খারাপ ব্যবহার করেন। এছাড়া আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ রয়েছে। তিনি স্কুলে থাকলে আমরা কোনো ক্লাস নিবো না।
অপরদিকে, শিক্ষার্থীদের অভিযোগ_ মেয়েদের সেনেটারি ন্যাপকিন চুরি, খারাপ ব্যবহার করেন প্রধান শিক্ষক। প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরা ক্লাস করবো না। এসময় তারা প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগসহ বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকে।
খবর পেয়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়েছে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও পুলিশের একটি দল উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করে।
অনুসন্ধানে বিভিন্ন কাগজপত্র যাচাই করে দেখা গেছে, ব্রহ্মরাজপুর সম্মিলিত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মমিনুর রহমান মুকুল শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেছেন ১৯৯৫ সালের পহেলা জানুয়ারী। তবে যে সনদে তিনি শিক্ষক হয়েছেন সেটি ইস্যু করা হয়েছে একই বছরের আগস্ট মাসের ১৯ তারিখে। অর্থাৎ শিক্ষা সনদ ইস্যু করার ৮ মাস ১৮ দিন আগেই সেই সনদে চাকরি শুরু করেছেন তিনি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মমিনুর রহমান মুকুল প্রধান শিক্ষক হয়েছেন ২০০৯ সালের ৩১ জানুয়ারি। প্রধান শিক্ষক হতে যে বিএড সনদ দেখিয়েছেন সেখানেও প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। তার বিএড সনদ দেখানো হয়েছে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ নামক একটি প্রতিষ্ঠান থেকে । তবে প্রধান শিক্ষক হওয়ার এক বছর আগে অর্থাৎ ২০০৮ সালের মে মাসের ১৫ তারিখে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ শিক্ষা সনদ বাতিল করে  শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
গালিগালাজের বিষয়টি অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক মোমিনুর রহমান মুকুল বলেন, আমি কড়া প্রধান শিক্ষক হওয়ায় শিক্ষকরা আমার বিরুদ্ধে লেগেছে। তবে স্কুলের অর্থ আত্মসাথের বিষয়ে তিনি বলেন আওয়ামীলীগের সময়ে ভবন বরাদ্দের জন্য সাতক্ষীরা সদর-২ আসনের এমপিসহ বিভিন্ন দপ্তরে ঘুষ দেওয়া লেগেছে। যে কারনে স্কুল ফান্ডের টাকা নিয়ে ঘুষ দিয়েছি। তিনি আরো বলেন কেউ না চাইলে আমি স্কুলে থাকবো না। এছাড়া জাল সনদে চাকুরির বিষয়টা তিনি অস্বিকার করেন।
সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নারায়ন চন্দ্র মন্ডল বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমাদের কাছে রয়েছে। দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

জুলাই আন্দোলনে হত্যাচেষ্টার আসামিকে বাঁচাতে বিএনপির নেতার বাঁধা

জাল সনদে প্রধান শিক্ষক হওয়া আওয়ামী লীগ নেতার অপসরণের দাবী

পোস্ট হয়েছেঃ ০১:০৫:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫
শিক্ষা সনদ ইস্যু হওয়ার ৮ মাস আগেই সেই সনদেই চাকরি শুরু। এরপর হয়েছেন প্রধান শিক্ষক তাও আবার ভুয়া সনদে। এসব অভিযোগ এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে। রোববার (১৩ জুলাই) সকালে স্যানিটারি ন্যাপকিন চুরি শিক্ষক শিক্ষকদের গালিগালাজ ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে এই আওয়ামী লীগ নেতা ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ক্লাস বর্জন করে মানববন্ধন করেছে শিক্ষক অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা।
অভিযুক্ত মমিনুর রহমান । তিনি সাতক্ষীরা সদরের ব্রহ্মরাজপুর সম্মিলিত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সাতক্ষীরা পৌর বঙ্গবন্ধু পরিষদের আহ্বায়ক।
মানববন্ধনে  শিক্ষকরা বলেন, প্রধান শিক্ষক মোমিনুর রহমান ‍গালিগালাজসহ খারাপ ব্যবহার করেন। এছাড়া আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ রয়েছে। তিনি স্কুলে থাকলে আমরা কোনো ক্লাস নিবো না।
অপরদিকে, শিক্ষার্থীদের অভিযোগ_ মেয়েদের সেনেটারি ন্যাপকিন চুরি, খারাপ ব্যবহার করেন প্রধান শিক্ষক। প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরা ক্লাস করবো না। এসময় তারা প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগসহ বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকে।
খবর পেয়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়েছে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও পুলিশের একটি দল উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করে।
অনুসন্ধানে বিভিন্ন কাগজপত্র যাচাই করে দেখা গেছে, ব্রহ্মরাজপুর সম্মিলিত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মমিনুর রহমান মুকুল শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেছেন ১৯৯৫ সালের পহেলা জানুয়ারী। তবে যে সনদে তিনি শিক্ষক হয়েছেন সেটি ইস্যু করা হয়েছে একই বছরের আগস্ট মাসের ১৯ তারিখে। অর্থাৎ শিক্ষা সনদ ইস্যু করার ৮ মাস ১৮ দিন আগেই সেই সনদে চাকরি শুরু করেছেন তিনি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মমিনুর রহমান মুকুল প্রধান শিক্ষক হয়েছেন ২০০৯ সালের ৩১ জানুয়ারি। প্রধান শিক্ষক হতে যে বিএড সনদ দেখিয়েছেন সেখানেও প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। তার বিএড সনদ দেখানো হয়েছে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ নামক একটি প্রতিষ্ঠান থেকে । তবে প্রধান শিক্ষক হওয়ার এক বছর আগে অর্থাৎ ২০০৮ সালের মে মাসের ১৫ তারিখে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ শিক্ষা সনদ বাতিল করে  শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
গালিগালাজের বিষয়টি অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক মোমিনুর রহমান মুকুল বলেন, আমি কড়া প্রধান শিক্ষক হওয়ায় শিক্ষকরা আমার বিরুদ্ধে লেগেছে। তবে স্কুলের অর্থ আত্মসাথের বিষয়ে তিনি বলেন আওয়ামীলীগের সময়ে ভবন বরাদ্দের জন্য সাতক্ষীরা সদর-২ আসনের এমপিসহ বিভিন্ন দপ্তরে ঘুষ দেওয়া লেগেছে। যে কারনে স্কুল ফান্ডের টাকা নিয়ে ঘুষ দিয়েছি। তিনি আরো বলেন কেউ না চাইলে আমি স্কুলে থাকবো না। এছাড়া জাল সনদে চাকুরির বিষয়টা তিনি অস্বিকার করেন।
সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নারায়ন চন্দ্র মন্ডল বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমাদের কাছে রয়েছে। দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।