
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) তিন শিক্ষার্থী চট্টগ্রাম থেকে ফেরার পথে দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার হওয়ার ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। হামলার প্রতিবাদে রবিবার (১৩ জুলাই) বিকাল থেকে বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী চৌরাস্তা এলাকায় অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় তারা দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারে ১২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন এবং ঘোষণা দেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে পরদিন (১৪ জুলাই) নোয়াখালী জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করা হবে।
হামলার শিকার তিন শিক্ষার্থী হলেন ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের ১৯তম ব্যাচের ছাত্র অনিমেষ দেবনাথ, সৌমেন বড়ুয়া এবং কাজী মো. সাউদুজ্জামান।
ভুক্তভোগী অনিমেষ দেবনাথ জানান, ‘চট্টগ্রাম থেকে বাঁধন প্লাজার বাসে ফেরার পথে চৌমুহনীতে পৌঁছালে হঠাৎ একদল সন্ত্রাসী আমাদের ওপর হামলা চালায়। তারা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গলা চেপে ধরার চেষ্টা করে এবং অন্যদের এলোপাতাড়ি মারধর করে। আমাদের মোবাইল ফোন থেকে ছবি ও ভিডিও ডিলিট করে এবং আমার পকেট থেকে ছয় হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিবাদ করলে স্থানীয়রা নোবিপ্রবির নাম শুনে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। তারা হুমকি দেয় যে, মামলা করলে লাশ গুম করে ফেলবে।’
পরে তিনি বেগমগঞ্জ মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ (মামলা) দায়ের করেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাসের মধ্যেই স্থানীয় যুবকদের সঙ্গে প্রথমে কথাকাটাকাটি হয়, যা একপর্যায়ে হামলায় রূপ নেয়।
প্রসঙ্গত,ঘটনার প্রতিবাদে নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন। বিকাল থেকেই তারা চৌমুহনী চৌরাস্তা অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এতে ওই এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে নোবিপ্রবি শিক্ষার্থী বানী ইয়ামিন বলেন, ‘এটি কোনো ব্যক্তিগত ঘটনার প্রতিবাদ নয়, এটি আমাদের নিরাপত্তা ও সম্মান রক্ষার লড়াই। হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে ১২ ঘণ্টার সময়সীমা দিয়েছি। এর মধ্যে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করা হবে।’
বেগমগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাবিবুর রহমান বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। তদন্ত চলছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ এফ এম আরিফুর রহমান বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অবগত। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আন্দোলন আরও তীব্র ও কঠোর হবে।