
বৃষ্টির দোহাই দিয়ে নেত্রকোনায় কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে ।যা নিম্ন আয়ের মানুষের আয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে।দুই সপ্তাহ আগেও এ মরিচ কেজি প্রতি ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এখন সেটির দাম ২৪০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে। এমন মূল্যবৃদ্ধিতে চরম বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের ক্রেতারা। এজন্য প্রশাসনিক মনিটরিং বাড়ানোর দাবি ক্রেতাদের।
নেত্রকোনা জেলা শহরের খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কেজি দরে মরিচ কেনার সামর্থ্য অনেকের নেই। তাই কেউ ১০ টাকার, কেউ ২০ টাকার মরিচ কিনে ঘরে ফিরছেন। ব্যবসায়ীদের দাবি, টানা বৃষ্টির কারণে মাঠে মরিচ তোলা যাচ্ছে না, এতে সরবরাহ কম। অনেক ক্ষেত বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। মরিচের সরবরাহ এতে কমে গেছে, এজন্য চাহিদা বেশি থাকায় দাম বেড়েছে কয়েক গুণ।
জেলার শহরের মোক্তারপাড়া রোডে গিয়ে দেখা গেছে, ফুটপাতের দোকানে অন্যান্য শাকসবজির দামও গত সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে। কাঁচা মরিচের পাশাপাশি লাল শাকের দামও লাফিয়ে বাড়ছে। এক বিক্রেতা বলেন, ‘লাল শাকের খেত বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। তাই সরবরাহ কম এবং দাম বেশি। লাল শাকের কেজি ৫০- ৬০ টাকা।
সুপার মার্কেটের বিক্রেতা তরিকুল ইসলাম জানান,কাঁচা মরিচ ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেক দোকানে মরিচ অবিক্রীত থাকছে। ফলে বিক্রেতারাও ক্ষতিতে পড়েছেন। স্থানীয় অপর এক বিক্রেতা বলেন, ‘পাইকারি বাজার থেকে ২৫০ টাকার ওপরে মরিচ কিনতে হচ্ছে। বেশি দামে কিনে কমে বিক্রি করা সম্ভব নয়।’
জেলার একাধিক ব্যবসায়ী অভিযোগ করছেন, টানা বৃষ্টিকে সুযোগ হিসেবে নিয়ে কিছু পাইকারি ব্যবসায়ী মরিচ মজুত করেছেন। এতে সরবরাহ সংকট আরও প্রকট হয়েছে। ফলে খুচরা বাজারে দাম হু হু করে বেড়েছে।
সুপার মার্কেটের এক ক্রেতা তাজুল ইসলাম বলেন, ‘কয়েক দিন আগে এ বাজার থেকেই ৪০ টাকা কেজি দরে কাঁচা মরিচ কিনেছি। আজ কিনতে হলো ২৫০ টাকায়। এটা কোনোভাবেই ন্যায্য নয়। ব্যবসায়ীরা বৃষ্টির দোহাই দিচ্ছেন। কিন্তু আমি মনে করি, তারা ইচ্ছে করেই দাম বাড়াচ্ছেন। জেলা প্রশাসনের উচিত কাঁচা বাজারে নজরদারি বাড়ানো।’
খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, জেলার বিভিন্ন জায়গায় টানা বৃষ্টির কারণে মাঠে কাজ ব্যাহত হচ্ছে। মরিচ তোলা, পরিবহন সবকিছুতেই সমস্যা হচ্ছে। তাছাড়া পাইকারি বাজারে সরবরাহ কমেছে। এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘বৃষ্টি শেষ হলে দাম আবার কমে আসবে। আপাতত সরবরাহ কম হওয়ায় দাম বেশি।’
জেলা প্রশাসনও বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস বলেন, ‘প্রাকৃতিক কারণে যদি সরবরাহ কমে, তাহলে কিছুটা দাম বাড়া স্বাভাবিক। তবে কেউ যদি কৃত্রিম সংকট তৈরি করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।