
ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলায় স্থানীয় কৃষকদের ফলদ চাষে আগ্রহী করে তুলতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় সক্ষম করে তুলতে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে ২০ জন কৃষকের মাঝে ফলজ চারা বিতরণ করা হয়েছে।
রবিবার (১৩ জুলাই) উপজেলার ১৩ নম্বর চরবেতাগৈর ইউনিয়নে “ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচার অ্যান্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প (ডিএই অংশ)”-এর আওতায় এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়।
প্রতিটি কৃষককে দেওয়া হয় ৫০টি করে উন্নত জাতের ফলদ গাছের চারা। এর মধ্যে ১৭ জন কৃষক পেয়েছেন আম গাছের চারা এবং ৩ জন কৃষক পেয়েছেন লিচু গাছের চারা। আম গাছগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য জাতগুলো হলো হিমসাগর, আম্রপালি ও ল্যাংড়া। আর লিচুর জাতগুলোর মধ্যে চায়না-৩ এবং বোম্বাই জাতের চারা প্রদান করা হয়।

কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তারা জানান, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বাংলাদেশের কৃষি খাত এক ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। বিশেষ করে খরা, অতিবৃষ্টি, অনিয়মিত মৌসুমি পরিবর্তন প্রভৃতি কারণে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে ফলদ গাছের চাষ কৃষকদের জন্য একটি টেকসই বিকল্প হতে পারে।
চারা বিতরণের সময় কৃষকদের চারা রোপণ, পরিচর্যা, সেচ ব্যবস্থাপনা এবং রোগবালাই দমন বিষয়ে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।
উপস্থিত অতিথিরা:
চারা বিতরণ কার্যক্রমে উপস্থিত ছিলেন:
আবু আহমেদ তারিফ, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা
মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, চরবেতাগৈর ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা
মোঃ আজিজুর রহমান, কৃষি বিভাগের মাঠ কর্মকর্তা এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন
স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সংশ্লিষ্ট এলাকার কৃষকেরা
কৃষি কর্মকর্তা আবু আহমেদ তারিফ বলেন,
> “সরকার কৃষি উৎপাদনকে পরিবেশবান্ধব ও লাভজনক করতে ‘ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচার’-এর ধারণা বাস্তবায়ন করছে। এই প্রকল্পের আওতায় শুধু চারা নয়, কৃষকদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ, উপকরণ এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করা হবে।”
কৃষকদের অনুভূতি:
চারা পাওয়া এক কৃষক বলেন,
> “এই ধরনের সহায়তা আমাদের জন্য খুবই উপকারী। আগে ফলদ গাছ লাগানোর সাহস পাইনি। এবার সরকারি সহযোগিতায় ৫০টি চারা পেয়েছি, ভালোভাবে যত্ন নেবো।”
অন্য কৃষক রহিম উদ্দিন জানান,
> “লিচুর চারা পেয়ে খুব খুশি হয়েছি। ভবিষ্যতে এই গাছগুলো থেকে ফল পাবো বলে আশা করছি। এতে আমাদের আয়ও বাড়বে।”
সার্বিক মূল্যায়ন:
এই প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকের আয় বৃদ্ধি, পরিবেশ সুরক্ষা এবং পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। আগামীতেও এই ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানান কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা।