০৪:৫৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দেবিদ্বারে মিলল আট দিন পর হনুফার মলদেহ

কুমিল্লা জেলা দেবিদ্বার উপজেলার নির্জন এলাকার একটি ঝোপজার জঙ্গল থেকে মোসা:হনুফা বেগম (৪৫) নামে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে দেবিদ্বার থানা পুলিশ।
উদ্ধার হওয়া নারী মোসা: হনুফা আক্তার দেবিদ্বার পৌর এলাকার বারেরা গ্রামের ইউছুফ আলী মূন্সী বাড়ির মৃত: মো: মজিবুর রহমানের স্ত্রী। সে কাইচপুর এলাকায় একটি কারখানায় কাজ করতেন। তার দুই পুত্র এক কণ্যা সন্তান রয়েছে। তার স্বামী ৮/৯ বছর আগে মৃত‍্যুবরণ করেছেন।
ঘটনাটি ঘটে দেবীদ্বার উপজেলার ৭ নং এলাহাবাদ ইউনিয়নের গৌরসার গ্রামের সাবেক সংসদ সদস্য ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা দেবীদ্বার সুজাত আলী সরকারী কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ক্যাপ্টেন সুজাত আলীর পরিত্যক্ত বাড়ীর পাশের একটি নির্জন জঙ্গলে।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টায় গৌরসার গ্রামের মৃতঃ আজগর আলীর পুত্র বুদ্ধি প্রতিবন্দী ফরিদ মিয়া(৬০), কচুর লতি উঠাতে যেয়ে ওই অজ্ঞাত নারীর মরদেহ জঙ্গলে পড়ে থাকতে দেখেন। পরে স্থানীয়দের বিষয়টি জানালে, তারা পুলিশকে খবর দেন।
হনুফা বেগমের নিকট আত্মীয় দেবীদ্বার সোনার বাংলা স্কুলের শিক্ষক লিপি আক্তার জানান, আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাশের ছবি এবং দৈনিক কালের কন্ঠের অনলাইনে নিউজটি দেখতে পাই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাশের পড়নের শাড়িকাপর দেখে চিনতে পারি। সাথে সাথে নিহত হনুফা বেগমের ছেলেদের সাথে যোগাযোগ করে নিশ্চিত হই এটা হুফা বেগমের লাশ।
নিহতার বড় ছেলে জুয়েল মূন্সী(২৮) জানান, তার বাবা অসুস্থ্য ছিলেন। মা’-ই দেবীদ্বার আড়িখোলা জুট মিলে চাকরি করে বাবার চিকিৎসা ও আমাদের ৩ ভাই বোনের ভরনপোষন চালাতেন। আমার বাবা মারা গেছেন ৮/৯ বছর আগে। মা আমাকে ও আমার ছোট ভাই ইমন মূন্সী(২৪) ও বোন শান্তা ইসলাম(২৬)কে বিয়ে করান। আমি ট্রাক্টর চালাই, ছোট ভাই সিএনজি চালায় আর বোন স্বামীর বাড়িতে থাকে। মা কিছুদিন পূর্বে ঢাকায় চাকরি নেন। কোন কোম্পানীতে চাকরি করেন, তা আমরা জানিনা। গত ৪ জুলাই বাড়িতে আসেন এবং ৮ জুলাই (সোমবার) সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে বেড় হয়ে যান। রাতে খোঁজ নিতে যেয়ে মা’কে আর ফোনে পাইনি। সে থেকে মায়ের মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। আজ মায়ের লাশ, পরনের কাপড় দেখে চিনতে পেরেছি এবং জানতে পেরেছি আমার মা’ আর বেঁচে নেই।
দেবীদ্বার থানার উপ-পরিদর্শক(এসআই) মাজহারুল ইসলাম জানান, নিহতার পরিচয় প্রথম দিকে অজ্ঞাত হলেও পরে তার পরিচয় পাওয়া গেছে। নিহতার মাথায়, গলায় এবং বাম চোখের উপর আঘাতের চিহ্ন ও রক্তাক্ত ছিল। অজ্ঞাত খুণীরা তাকে খুন করে এ নির্জন এলাকায় ফেলে গেছে। অনির্ভর সূত্রে পাওয়া তথ্যানুযায়ী যে গ্রামে তার লাশ পাওয়া গেছে ওই গৌরসার গ্রামে তার গোপনে একটি বিয়ে হয়েছিল। আমরা তার সত্যতা যাচাইয়ে অনুসন্ধান করছি।
এ ব্যপারে দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামসুদ্দীন মোহাম্মদ ইলিয়াছ জানান, নিহত হনুফার পরিবারের লোকদের খবর দিয়েছি, ওরা আসলে বিস্তারিত জানতে পারব। এরই মধ্যে সিআইডি’র উপপরিদর্শক (এসআই) হোসেন নাজমুল ও পিবিআই’র উপপরিদর্শক (এসআই) চন্দন কুমারের নেতৃত্বে আসা দু’টি টিম বিষয়টি তদন্ত করছেন। আমরা খুব দ্রুত খুণের রহস্য উদঘাটনে কাজ করছি।
সংবাদ পেয়ে মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) বেলা দেড়টার সময় দেবীদ্বার থানার উপ-পরিদর্শক(এসআই) মাজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে রয়েছেন।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

ঝিনাইদহে জুলাই শহিদদের স্মরণে ছাত্রদলের স্মরণ সভা

দেবিদ্বারে মিলল আট দিন পর হনুফার মলদেহ

পোস্ট হয়েছেঃ ০১:৪৯:৪৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫
কুমিল্লা জেলা দেবিদ্বার উপজেলার নির্জন এলাকার একটি ঝোপজার জঙ্গল থেকে মোসা:হনুফা বেগম (৪৫) নামে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে দেবিদ্বার থানা পুলিশ।
উদ্ধার হওয়া নারী মোসা: হনুফা আক্তার দেবিদ্বার পৌর এলাকার বারেরা গ্রামের ইউছুফ আলী মূন্সী বাড়ির মৃত: মো: মজিবুর রহমানের স্ত্রী। সে কাইচপুর এলাকায় একটি কারখানায় কাজ করতেন। তার দুই পুত্র এক কণ্যা সন্তান রয়েছে। তার স্বামী ৮/৯ বছর আগে মৃত‍্যুবরণ করেছেন।
ঘটনাটি ঘটে দেবীদ্বার উপজেলার ৭ নং এলাহাবাদ ইউনিয়নের গৌরসার গ্রামের সাবেক সংসদ সদস্য ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা দেবীদ্বার সুজাত আলী সরকারী কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ক্যাপ্টেন সুজাত আলীর পরিত্যক্ত বাড়ীর পাশের একটি নির্জন জঙ্গলে।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টায় গৌরসার গ্রামের মৃতঃ আজগর আলীর পুত্র বুদ্ধি প্রতিবন্দী ফরিদ মিয়া(৬০), কচুর লতি উঠাতে যেয়ে ওই অজ্ঞাত নারীর মরদেহ জঙ্গলে পড়ে থাকতে দেখেন। পরে স্থানীয়দের বিষয়টি জানালে, তারা পুলিশকে খবর দেন।
হনুফা বেগমের নিকট আত্মীয় দেবীদ্বার সোনার বাংলা স্কুলের শিক্ষক লিপি আক্তার জানান, আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাশের ছবি এবং দৈনিক কালের কন্ঠের অনলাইনে নিউজটি দেখতে পাই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাশের পড়নের শাড়িকাপর দেখে চিনতে পারি। সাথে সাথে নিহত হনুফা বেগমের ছেলেদের সাথে যোগাযোগ করে নিশ্চিত হই এটা হুফা বেগমের লাশ।
নিহতার বড় ছেলে জুয়েল মূন্সী(২৮) জানান, তার বাবা অসুস্থ্য ছিলেন। মা’-ই দেবীদ্বার আড়িখোলা জুট মিলে চাকরি করে বাবার চিকিৎসা ও আমাদের ৩ ভাই বোনের ভরনপোষন চালাতেন। আমার বাবা মারা গেছেন ৮/৯ বছর আগে। মা আমাকে ও আমার ছোট ভাই ইমন মূন্সী(২৪) ও বোন শান্তা ইসলাম(২৬)কে বিয়ে করান। আমি ট্রাক্টর চালাই, ছোট ভাই সিএনজি চালায় আর বোন স্বামীর বাড়িতে থাকে। মা কিছুদিন পূর্বে ঢাকায় চাকরি নেন। কোন কোম্পানীতে চাকরি করেন, তা আমরা জানিনা। গত ৪ জুলাই বাড়িতে আসেন এবং ৮ জুলাই (সোমবার) সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে বেড় হয়ে যান। রাতে খোঁজ নিতে যেয়ে মা’কে আর ফোনে পাইনি। সে থেকে মায়ের মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। আজ মায়ের লাশ, পরনের কাপড় দেখে চিনতে পেরেছি এবং জানতে পেরেছি আমার মা’ আর বেঁচে নেই।
দেবীদ্বার থানার উপ-পরিদর্শক(এসআই) মাজহারুল ইসলাম জানান, নিহতার পরিচয় প্রথম দিকে অজ্ঞাত হলেও পরে তার পরিচয় পাওয়া গেছে। নিহতার মাথায়, গলায় এবং বাম চোখের উপর আঘাতের চিহ্ন ও রক্তাক্ত ছিল। অজ্ঞাত খুণীরা তাকে খুন করে এ নির্জন এলাকায় ফেলে গেছে। অনির্ভর সূত্রে পাওয়া তথ্যানুযায়ী যে গ্রামে তার লাশ পাওয়া গেছে ওই গৌরসার গ্রামে তার গোপনে একটি বিয়ে হয়েছিল। আমরা তার সত্যতা যাচাইয়ে অনুসন্ধান করছি।
এ ব্যপারে দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামসুদ্দীন মোহাম্মদ ইলিয়াছ জানান, নিহত হনুফার পরিবারের লোকদের খবর দিয়েছি, ওরা আসলে বিস্তারিত জানতে পারব। এরই মধ্যে সিআইডি’র উপপরিদর্শক (এসআই) হোসেন নাজমুল ও পিবিআই’র উপপরিদর্শক (এসআই) চন্দন কুমারের নেতৃত্বে আসা দু’টি টিম বিষয়টি তদন্ত করছেন। আমরা খুব দ্রুত খুণের রহস্য উদঘাটনে কাজ করছি।
সংবাদ পেয়ে মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) বেলা দেড়টার সময় দেবীদ্বার থানার উপ-পরিদর্শক(এসআই) মাজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে রয়েছেন।