
ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগের দীর্ঘ দু:শাসনের সারথি ছিলেন কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা কৈয়ারবিল ইউনিয়নের বাসিন্দা মামুনুর রশীদ মামুন। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর তাদের দীর্ঘ সময়ের দোসর হিসেবে পরিচিত মামুন খোলস পাল্টে এখন হয়ে গেছেন ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক। গণআন্দোলনের মুখে ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর দীর্ঘদিন প্রবাসে থেকে মামুনুর রশীদ মামুন সাম্প্রতিক দেশে এসে অনেকটা টাকার জোরেই ঘনিষ্টতা বাড়ায় ইউনিয়ন বিএনপি ও উপজেলা বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সাথে। এক পর্যায়ে সফলতাও পায়। বিএনপি নেতাদের আশির্বাদে সদ্য ঘোষিত ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক কমিটিতে যুগ্ম আহবায়কের পদ ভাগিয়ে নেন মামুন। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার ঝড়।
পদ বঞ্চিত অনেক ত্যাগী বিএনপি নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিগত আওয়ামী দু:শাসনের আমলে এ নব্য বিএনপি নেতা মামুনুর রশীদ মামুনের সাথে বর্তমান সকল ধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামীলীগের উপজেলা কমিটির সভাপতি ও কারান্তরীন সাবেক সংসদ সদস্য জাফর আলম, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী এবং কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও কল্যাণ পার্টির সভাপতি মেজর জেনারেল (অব:) মোহাম্মদ ইব্রাহিম বীর প্রতীকের সাথে খুবই ঘনিষ্ঠতা ছিল। এসব নেতাদের সাথে দলীয় ও বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে অন্তরঙ্গ মূহুর্তের ছবি এখনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভেসে উঠছে। এ ছাড়াও ইউনিয়ন এবং উপজেলা পর্যায়ের অন্যান্য আওয়ামীলীগ নেতাদের সাথেও নব্য এ বিএনপি নেতা মামুনের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়েছিল।
তারা আরও বলেন, মামুন ছিলেন বর্তমান কারান্তরীণ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি জাফর আলমের ব্যবসায়িক পার্টনার। চকরিয়া থানা সেন্টারে জাফর আলমের কাছ থেকে জমিও ক্রয় করেন মামুন। একইভাবে উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদীর সাথেও মামুনের পার্টনারশীপ ব্যবসা রয়েছে। বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী আওয়ামীলীগ নেতা ফজলুল করিম সাঈদীর পক্ষে বর্তমান বিএনপি নেতা মামুনের প্রকাশ্যে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেয়ার ছবিও নতুন করে এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগের দুগ্রুপের নির্বাচনি দ্বন্দ্বে মামুন সাঈদীর পক্ষ হয়ে কাজ করলে শুরু হয় জাফরের সাথে দুরত্ব। ওই বিরোধে জাফরের দেয়া একটি হুমকিকে বিএনপির দলীয় বিষয় বলেও চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে জাফর-সাঈদীর দীর্ঘদিনের ব্যবসায়ীক পার্টনার নব্য বিএনপি নেতা মামুন। বিগত দিনে আওয়ামীলীগের দোষর হিসেবে চিহ্নিত এ মামুনুর রশীদ মামুন কিভাবে ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক কমিটিতে যুগ্ম আহবায়কের পদ ভাগিয়ে নিয়েছেন তা নিয়ে স্থানীয় বিএনপিতে চলছে চুলছেড়া বিশ্লেষণ। পদ বঞ্চিত অনেক ত্যাগী নেতাদের অভিমত নব্য বিএনপি নেতা মামুনের টাকার কাছে হেরেছেন ইউনিয়ন বিএনপির ত্যাগী নেতারা আর জিতেছেন উপজেলা বিএনপির নীতিনির্ধারকগন। মামুনের পৈত্রিক স্থায়ী নিবাস সাতকানিয়ায়। কৈয়ারবিল ইসলামনগরে বসবাস করেন।তার পিতার নাম হাফেজ নজির হোসেন।
এ বিষয়ে মামুনুর রশিদ মামুন বলেন,সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সাঈদী আমার আত্মীয় হয় এবং উপজেলা আ’মীলীগের সভাপতি সাবেক এমপি জাফর আলমের সাথে আমি একটি জায়গা ক্রয় করার সুবাদে সম্পর্ক ছিল। সাবেক এমপি মেজর জেনারেল সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম একটি মামলার বিষয়ে আমার কাছে এসেছিল। আমি বিগত সময়ে কোন কমিটিতে না থাকলেও এখন ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক পদে স্থান পেয়েছি।