০৭:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০১ অগাস্ট ২০২৫, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সামান্য বৃষ্টিতেই বিদ্যালয়ে হাঁটুপানি

  • মো:আবু তাহের
  • পোস্ট হয়েছেঃ ০৬:১৪:০৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫
  • 11

হরগজ নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সামান্য বৃষ্টি হলেই হাঁটুপানি জমে।মানিকগঞ্জের সাটুািরয়ার হরগজ নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে সামান্য বৃষ্টি তেই জমে হাটু পানি। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ শিক্ষক শিক্ষিকাদের।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছরে মাঠের পানি নিস্কাশনের জন্য একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হলেও তা প্রকল্প কমিটি নয়ছয় করায় সঠিক কাজ করা হয়নি।

হরগজ নয়াপাড়ার মোঃ শামিম মোল্লা বলেন, এ বিদ্যালয়ে গেল ১৭ বছরে কোন উন্নয়ন প্রকল্প দেওয়া হয়নি। ৫ আগষ্টের পর পানি নিস্কাকশনের জন্য প্রায় ৪৬ হাজার টাকার প্রকল্প হাতে নেয় । কিন্তু ২ নং ওয়ার্ড সদস্য শাজাহান মোল্লা অনিয়ম করে কয়েক ট্রাক মাটি ফেলে দায় সেরেছেন।
পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী  সোহানা আক্তারে মা শেখা আক্তার বলেন, শুনেছি টাকা আসছিল মাঠে কাজ করার জন্য। সেটা নাকি কাজ না করেই টাকা মাইরা খাইছে। শিশুদের জীবনের নিরাপত্তা নেই। ভয়ে অনেক শিক্ষার্থী স্কুলেই আসে না ।
হরগজ নয়াপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র নিরবের বাবা রাসেল মিয়া বলেন, আমার সন্তানরা স্কুলে যায় ঠিকই। কিন্তু দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়, কখন সন্তান পানিতে পড়ে যায় এ ভয় থাকে সবসময়।
পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া বলেন, পানি জমে থাকলে ক্লাস রুমে ঢুকা ও বের হবার সময় প্রায় আমাদের বই খাতা পানিতে পড়ে যায়। তাছাড়া পানি জমে থাকার সময় আমরা কোন খেলা ধুলা করতে পারি না। দীর্ঘদিন ধরে পানি জমে থাকলে আরো ডেঙ্গু মশার উপদ্রপ বেড়ে যায়। আমরা এ পরিবেশ চাই না। পড়া লেখার পাশা পাশি নিয়মিত মাঠে খেলা ধুলা করতে চাই। দুষিত পরিবেশ থেকে বাঁচতে চাই।
এ বিষয়ে প্রকল্প কমিটির সদস্য সচিব হরগজ ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মোঃ শাজাহান মোল্লার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার মোবাইল নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে হরগজ নয়াপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষীকা সীমা রানী সরকার বলেন, আমার বিদ্যালয়ে মোট ১৮১ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই মাঠে পানি জমে হাটু সমান হয়ে যায়। পানির মধ্যে দিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসা ও যাওয়ার সময় পিচলে পড়ে স্কুল ড্রেস ও বই খাতা শরীর ভিজে যায়। অনেক অভিভাবক তাদের শিশুদের স্কুলে পাঠিয়ে দুচিন্তায় থাকেন।
৪৬ হাজার টাকার যে প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে । এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।তবে স্থানীয় মেম্বার ৪ ট্রাক মাটি ফেলেছে মাঠে। আর পানি নিস্কাশনের জন্য মাঠে কিছু পাইপ বসিয়েছে।
হরগজ ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ ফারুক হোসেন বলেন, সাটুরিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কার্যালয় থেকে কাবিখা ২৪-২৫ অর্থ বছরের দেড় টন চাল বরাদ্ধ দেওয়া হয় একটি ড্রেন নির্মাণ করার জন্য। আমার জানামতে কাজটি সঠিকভাবে নির্মাণ করা হয়নি বলে পানি সমস্যা রয়েই গেছে।
এ ব্যাপারা সাটুরিয়া ইউএনও মোঃ ইকবাল হোসেন বলেন, মাঠে পানি জমে থাকে এবং কাবিখা প্রকল্পে অনিয়ম হয়েছে। এ বিষয়ে আমার দপ্তরে কেউ অভিযোগ করেনি। লিখিত আকারে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং পানি জমে থাকার বিষয়ে দ্রুত  ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

কোথায় লড়বেন তারেক রহমান? বগুড়া, ঢাকা না সিলেট—ভোটের গুঞ্জন তুঙ্গে

সামান্য বৃষ্টিতেই বিদ্যালয়ে হাঁটুপানি

পোস্ট হয়েছেঃ ০৬:১৪:০৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫

হরগজ নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সামান্য বৃষ্টি হলেই হাঁটুপানি জমে।মানিকগঞ্জের সাটুািরয়ার হরগজ নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে সামান্য বৃষ্টি তেই জমে হাটু পানি। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ শিক্ষক শিক্ষিকাদের।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছরে মাঠের পানি নিস্কাশনের জন্য একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হলেও তা প্রকল্প কমিটি নয়ছয় করায় সঠিক কাজ করা হয়নি।

হরগজ নয়াপাড়ার মোঃ শামিম মোল্লা বলেন, এ বিদ্যালয়ে গেল ১৭ বছরে কোন উন্নয়ন প্রকল্প দেওয়া হয়নি। ৫ আগষ্টের পর পানি নিস্কাকশনের জন্য প্রায় ৪৬ হাজার টাকার প্রকল্প হাতে নেয় । কিন্তু ২ নং ওয়ার্ড সদস্য শাজাহান মোল্লা অনিয়ম করে কয়েক ট্রাক মাটি ফেলে দায় সেরেছেন।
পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী  সোহানা আক্তারে মা শেখা আক্তার বলেন, শুনেছি টাকা আসছিল মাঠে কাজ করার জন্য। সেটা নাকি কাজ না করেই টাকা মাইরা খাইছে। শিশুদের জীবনের নিরাপত্তা নেই। ভয়ে অনেক শিক্ষার্থী স্কুলেই আসে না ।
হরগজ নয়াপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র নিরবের বাবা রাসেল মিয়া বলেন, আমার সন্তানরা স্কুলে যায় ঠিকই। কিন্তু দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়, কখন সন্তান পানিতে পড়ে যায় এ ভয় থাকে সবসময়।
পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া বলেন, পানি জমে থাকলে ক্লাস রুমে ঢুকা ও বের হবার সময় প্রায় আমাদের বই খাতা পানিতে পড়ে যায়। তাছাড়া পানি জমে থাকার সময় আমরা কোন খেলা ধুলা করতে পারি না। দীর্ঘদিন ধরে পানি জমে থাকলে আরো ডেঙ্গু মশার উপদ্রপ বেড়ে যায়। আমরা এ পরিবেশ চাই না। পড়া লেখার পাশা পাশি নিয়মিত মাঠে খেলা ধুলা করতে চাই। দুষিত পরিবেশ থেকে বাঁচতে চাই।
এ বিষয়ে প্রকল্প কমিটির সদস্য সচিব হরগজ ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মোঃ শাজাহান মোল্লার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার মোবাইল নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে হরগজ নয়াপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষীকা সীমা রানী সরকার বলেন, আমার বিদ্যালয়ে মোট ১৮১ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই মাঠে পানি জমে হাটু সমান হয়ে যায়। পানির মধ্যে দিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসা ও যাওয়ার সময় পিচলে পড়ে স্কুল ড্রেস ও বই খাতা শরীর ভিজে যায়। অনেক অভিভাবক তাদের শিশুদের স্কুলে পাঠিয়ে দুচিন্তায় থাকেন।
৪৬ হাজার টাকার যে প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে । এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।তবে স্থানীয় মেম্বার ৪ ট্রাক মাটি ফেলেছে মাঠে। আর পানি নিস্কাশনের জন্য মাঠে কিছু পাইপ বসিয়েছে।
হরগজ ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ ফারুক হোসেন বলেন, সাটুরিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কার্যালয় থেকে কাবিখা ২৪-২৫ অর্থ বছরের দেড় টন চাল বরাদ্ধ দেওয়া হয় একটি ড্রেন নির্মাণ করার জন্য। আমার জানামতে কাজটি সঠিকভাবে নির্মাণ করা হয়নি বলে পানি সমস্যা রয়েই গেছে।
এ ব্যাপারা সাটুরিয়া ইউএনও মোঃ ইকবাল হোসেন বলেন, মাঠে পানি জমে থাকে এবং কাবিখা প্রকল্পে অনিয়ম হয়েছে। এ বিষয়ে আমার দপ্তরে কেউ অভিযোগ করেনি। লিখিত আকারে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং পানি জমে থাকার বিষয়ে দ্রুত  ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।