
কৃতী এই শিক্ষার্থী চকরিয়া সরকারি বালিকা
বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।কক্সবাজারে ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫সহ সর্বোচ্চ ১২৬৩ নম্বর পেয়েপরীক্ষায় সব বিষয়ে এ প্লাস পেয়ে মোট ১৩০০ নম্বরের মধ্যে ১২৬৩ নম্বর অর্জন করে উপজেলায় এবং জেলায় শীর্ষ অবস্থানে উঠে আসেন মোছাম্মদ জয়া খাতুন।শুধু তাই নয়, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের মেধাবী ২০ শিক্ষার্থীর মধ্যে জয়া ১৫তম স্থান অর্জন করে বিভাগীয় পর্যায়েও কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছে।
নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে জয়া খাতুন বলেন, “আমার এই ফলাফলের পেছনে আমার শিক্ষকদের আন্তরিকতা এবং বাবা-মায়ের অকৃত্রিম সহযোগিতা রয়েছে। তাঁদের কারণেই আমি আজকের এই অর্জনে পৌঁছাতে পেরেছি। সবার দোয়া ও ভালোবাসা নিয়ে আমি আরও সামনে এগিয়ে যেতে চাই। আমার স্বপ্ন, আমি একজন ভালো চিকিৎসক হবো—যাতে গরিব-দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি।”
জানা গেছে, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মো. হাসানুর রহমান ও শাহিনা বেগম দম্পতির তিন কন্যার মধ্যে জয়া বড়। অল্প পুঁজির ব্যবসা করে হাসানুর রহমান সংসার চালানোসহ তিন মেয়ের লেখাপড়ার খরচ বহন করে আসছেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বাগবাটি দত্তবাড়ি এলাকায় হলেও তিনি দীর্ঘ ২০ বছর ধরে চকরিয়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সোসাইটি পাড়ায় নানার বাড়ির পাশে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন।
জয়ার বাবা বলেন, “পরিবার চালাতে অনেক কষ্ট করতে হয়। তবে মেয়েরা যাতে লেখাপড়ায় এগিয়ে যেতে পারে, সেজন্য আমি সব সময় চেষ্টা করেছি। জয়ার এই সাফল্যে আমরা গর্বিত। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও তাকে অনেক সহযোগিতা করেছেন।”জয়ার ইচ্ছে মতো তাঁকে আমরা ডাক্তার বানাতে চাই, সেজন্য সকলের দোয়া কামনা করেছি।
চকরিয়া সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক আবু শোয়াইব ও সাইফুদ্দীন আহমদ মানিক বলেন, “জয়া যেমন মেধাবী, তেমনি ভদ্র ও বিনয়ী। শিক্ষাজীবনের শুরু থেকেই তার মধ্যে সাফল্যের ছাপ ছিল। সে শুধু পড়াশোনায় নয়, স্কুলের নানা সহশিক্ষা কার্যক্রমেও নিয়মিত অংশগ্রহণ করেছে। এসএসসি পরীক্ষায় জয়ার অর্জন শুধু আমাদের বিদ্যালয়ের নয়, গোটা চকরিয়া উপজেলার জন্য গর্বের বিষয়। অন্তত ২০ বছরের মধ্যে এত বেশি নম্বর আর কেউ পায়নি।”
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, “চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীনে চকরিয়া উপজেলার ৪০টি বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় ৫ হাজার ৩৩২ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়, যার মধ্যে ৩ হাজার ৬৩৬ জন উত্তীর্ণ হয় এবং ৩১২ জন জিপিএ-৫ পায়। তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে চকরিয়া সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী জয়া খাতুন।”
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, “একাগ্রতা ও প্রবল ইচ্ছাশক্তি থাকলে যে কোনো কিছু অর্জন সম্ভব—জয়া তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তার সাফল্যে আমরা গর্বিত। যেসব শিক্ষার্থী ভালো ফল করছে, প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের পাশে থাকার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।