০৮:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০১ অগাস্ট ২০২৫, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ছাত্র হলের ছাদ ধস, গুরুতর আহত ১০ শ্রমিক

  • হৃদয় আহমেদ,
  • পোস্ট হয়েছেঃ ০৪:৫৮:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫
  • 213
ময়মনসিংহের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাককানইবি) একটি নির্মাণাধীন ১০ তলা ছাত্র হলের ছাদ ধসে অন্তত ছয় শ্রমিক আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিকেল ৪টার দিকে দ্বিতীয় তলার ঢালাই চলাকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিকেলে হলের দ্বিতীয় তলার পূর্ব-দক্ষিণ অংশে ঢালাই কাজ চলছিল। এ সময় হঠাৎ করেই ছাদের কাঠামো কেঁপে ওঠে এবং মুহূর্তের মধ্যেই ভেঙে নিচে পড়ে যায়। এতে ওপরের অংশে কাজ করা শ্রমিকরা নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন। আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
প্রক্টর ড. মাহবুবুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “চার থেকে ছয়জন শ্রমিক আহত হয়েছেন। একজনের অবস্থা বেশ গুরুতর। আহতদের দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যেই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।”
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরে ঢালাই কাজ শুরু হলেও বিকেলে সংক্ষিপ্ত বিরতির পর আবার কাজ শুরু হয়। তখন প্রায় ১৫ জন শ্রমিক কাজ করছিলেন। দুর্ঘটনার সময় অন্তত ১০ জন শ্রমিক আহত হন, যাদের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা বেশি গুরুতর। আহতদের কোমর, হাঁটু ও পিঠে মারাত্মক আঘাত লেগেছে।
আহত শ্রমিকদের একজন জানান, “দুপুর থেকে আমরা কাজ করছিলাম। কিছুক্ষণ বিশ্রামের পর আবার ঢালাই শুরু হয়। হঠাৎ দেখি ছাদ কাঁপছে, কিছু বুঝে ওঠার আগেই সবকিছু ভেঙে পড়ে।”
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. আশরাফুল আলম এবং প্রক্টর ড. মাহবুবুর রহমান দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজে সহায়তা করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের পরিচালক প্রকৌশলী মো. হাফিজুর রহমান বলেন, “ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন (১ম সংশোধিত) প্রকল্পের আওতায় নির্মিতব্য হলের পোর্চের ঢালাই চলাকালে এই দুর্ঘটনা ঘটে। আমরা বিষয়টি খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।”
দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছয় সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। প্রক্টর ড. মাহবুবুর রহমানকে আহ্বায়ক করে গঠিত এই কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন— ড. মো. বখতিয়ার উদ্দিন, ড. মো. আশরাফুল আলম, মো. অলি উল্লাহ, সৈয়দ মোফাছিরুল ইসলাম এবং সদস্য-সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন প্রকৌশলী মো. মাহবুবুল ইসলাম। কমিটিকে আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার পর থেকে নির্মাণকাজ আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আহত শ্রমিকদের চিকিৎসা সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে। এ দুর্ঘটনা নিয়ে ক্যাম্পাসে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

কোথায় লড়বেন তারেক রহমান? বগুড়া, ঢাকা না সিলেট—ভোটের গুঞ্জন তুঙ্গে

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ছাত্র হলের ছাদ ধস, গুরুতর আহত ১০ শ্রমিক

পোস্ট হয়েছেঃ ০৪:৫৮:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫
ময়মনসিংহের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাককানইবি) একটি নির্মাণাধীন ১০ তলা ছাত্র হলের ছাদ ধসে অন্তত ছয় শ্রমিক আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিকেল ৪টার দিকে দ্বিতীয় তলার ঢালাই চলাকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিকেলে হলের দ্বিতীয় তলার পূর্ব-দক্ষিণ অংশে ঢালাই কাজ চলছিল। এ সময় হঠাৎ করেই ছাদের কাঠামো কেঁপে ওঠে এবং মুহূর্তের মধ্যেই ভেঙে নিচে পড়ে যায়। এতে ওপরের অংশে কাজ করা শ্রমিকরা নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন। আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
প্রক্টর ড. মাহবুবুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “চার থেকে ছয়জন শ্রমিক আহত হয়েছেন। একজনের অবস্থা বেশ গুরুতর। আহতদের দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যেই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।”
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরে ঢালাই কাজ শুরু হলেও বিকেলে সংক্ষিপ্ত বিরতির পর আবার কাজ শুরু হয়। তখন প্রায় ১৫ জন শ্রমিক কাজ করছিলেন। দুর্ঘটনার সময় অন্তত ১০ জন শ্রমিক আহত হন, যাদের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা বেশি গুরুতর। আহতদের কোমর, হাঁটু ও পিঠে মারাত্মক আঘাত লেগেছে।
আহত শ্রমিকদের একজন জানান, “দুপুর থেকে আমরা কাজ করছিলাম। কিছুক্ষণ বিশ্রামের পর আবার ঢালাই শুরু হয়। হঠাৎ দেখি ছাদ কাঁপছে, কিছু বুঝে ওঠার আগেই সবকিছু ভেঙে পড়ে।”
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. আশরাফুল আলম এবং প্রক্টর ড. মাহবুবুর রহমান দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজে সহায়তা করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের পরিচালক প্রকৌশলী মো. হাফিজুর রহমান বলেন, “ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন (১ম সংশোধিত) প্রকল্পের আওতায় নির্মিতব্য হলের পোর্চের ঢালাই চলাকালে এই দুর্ঘটনা ঘটে। আমরা বিষয়টি খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।”
দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছয় সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। প্রক্টর ড. মাহবুবুর রহমানকে আহ্বায়ক করে গঠিত এই কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন— ড. মো. বখতিয়ার উদ্দিন, ড. মো. আশরাফুল আলম, মো. অলি উল্লাহ, সৈয়দ মোফাছিরুল ইসলাম এবং সদস্য-সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন প্রকৌশলী মো. মাহবুবুল ইসলাম। কমিটিকে আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার পর থেকে নির্মাণকাজ আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আহত শ্রমিকদের চিকিৎসা সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে। এ দুর্ঘটনা নিয়ে ক্যাম্পাসে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।