
বাড়ির সামনে রাস্তার পাশে ছ্রোট একটি দোকান এই দোকানে কয়েক পেকেট বিস্কুট সাজানো আছে। দোকানের এক কোনে একটি প্লাস এক ভিতরে কয়েক কাপ চা সাথে পান ও বিড়ি-সিগারেটের। এই সমস্ত
বিক্রি করতে সারাদিন বসে থাকেন আব্দুর রউফ। সারাদিন ছ্রোট এই দোকনে চা, পান ও বিড়ি-সিগারেটের বিক্রির জন্য বসে থাকা ব্যক্তির বাড়ি নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার কান্দিউড়া ইউনিয়নের দীঘলকুর্শা গ্রামে। আব্দুল রউফের চায়ের দোকানে ক্রেতা গ্রামের বয়স্ক এবং মধ্য বয়স্ক মানুষ।
আব্দুর রউফ জানান, তাঁর সংসারে ৫জন মানুষ তার মধ্যে তিন ছেলে এবং তিনি এবং তাঁর স্ত্রী। বড় ছেলে এবং মেজু ছেলে ঢাকার একটি কলেজে লেখা পড়া করেন ছোট ছেলে বাড়ি থেকে লেখাপড়া করছেন। আয়ের একমাত্র উৎস এই ছ্রোট চায়ের দোকান।
সেই ৩০ বছর ধরে বাড়ির সামনে এই দোকানে বসে গ্রামের মানুষের সাথে কথা বলি এবং
চা, পান ও বিড়ি-সিগারেটের বিক্রি করে কোন রকম সংসার চালাচ্ছেন। প্রথম যখন দোকান শুরু করেন তখন চা,পান ৫ টাকায় বিক্রি করতেন এখন ১০ টাকায় বিক্রি করছেন। প্রতিদিন ৩শত থেকে ৪শত টাকা বিক্রি হয়। এই টাকা দিয়ে তিন ছেলের লেখাপড়া খরচ এবং সংসার খরচ চালাতে কত যে কষ্ট হয় তা তিনি ভাষায় প্রকাশ করতে পারচ্ছেনা।
আব্দুর রউফ মিয়ার দোকানে চা খেতে আসা গ্রামের
রিপন মল্লিক বলেন, ‘গ্রামের প্রথম এই দোকান এই দোকানে আমরা প্রতিদিন চা খেতে আসি। সেই ভোরবেলায় দোকান খোলেন এবং গভীর রাত পর্যন্ত থাকেন। অনেক কষ্ট করেন। তাঁকে দেখে অনেক কষ্ট হয়। সংসারের জন্য অনেক কষ্ট করেন। এর মধ্যে সব জিনিসপত্রের দামও অনেক। কোনোরকমে ডাল-ভাত খেয়ে বেঁচে আছেন। সংসার টেকানো কঠিন হচ্ছে।
এত সব প্রতিকূলতার মধ্যেও ছেলেদেরকে মানুষ করার স্বপ্ন দেখেন আব্দুর রউফ।
এসময়, কবির মিয়া, রেনু মিয়া, উজ্জ্বল মিয়া সহ
বেশ কয়েকজন চা খেতে আসা তাঁরাও একই কথা বলেন, আব্দুর রউফ ৩০ বছর ধরে চা বিক্রি করেছে বাড়ির পাশে রাস্তার ধারে কিন্তু তার ভাগ্য পরিবর্তন হয়নি। এমকি কেউ থাকে সহযোগিতা করে এগিয়ে আসেনি। ছেলে গুলোকে লেখাপড়া করাচ্ছেন অনেক কষ্ট করে। তাই গ্রামের একাধিক মানুষের দাবী সরকারি ভাবে সহযোগিতা করলে আব্দুর রউফ মিয়ার পরিবার গ্রামের আরো ১০ টি পরিবারের মত ভাল ভাবে চলতে পারবে। পাশাপাশি তার ছেলেগুলো লেখাপড়া করে মানুষ করতে পারতেন আব্দুর রউফ।