০৩:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

​ডিসেম্বরে গ্রিন সার্টিফিকেট না নিলে জাহাজভাঙা কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হবে: নৌ-উপদেষ্টা সীতাকুণ্ডে কারখানা পরিদর্শনে কঠোর বার্তা, শিপব্রেকিং খাতে বড় সিদ্ধান্তের ইঙ্গিত

শনিবার (২৬ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের একটি জাহাজভাঙা কারখানা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। তিনি জানান, বর্তমানে দেশে মাত্র ১৬টি জাহাজভাঙা কারখানা গ্রিন সার্টিফিকেট (Green Ship Recycling Yard) নিয়েছে। অথচ সীতাকুণ্ডের মতো ছোট্ট এলাকায় ১১৩টিরও বেশি শিপব্রেকিং ইয়ার্ড রয়েছে।

 

নৌ উপদেষ্টা বলেন, “যেসব প্রতিষ্ঠান ম্যানুয়াল পদ্ধতি থেকে পরিবেশবান্ধব গ্রিন শিপইয়ার্ডে রূপান্তর হবে না, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আমরা আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে টিকে থাকতে চাই। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই কমিটি গঠন করে প্রতিবেদন নেওয়া হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “বড় জাহাজ ভাঙার মতো অবকাঠামো না থাকায় অনেক সময় ঝুঁকি তৈরি হয়। ছোট ও মাঝারি জাহাজ আনা সম্ভব হলেও বড় জাহাজের জন্য হয়তো অন্যত্র স্থানান্তরের চিন্তা করতে হবে।” জাহাজ আমদানিতে অতিরিক্ত ভ্যাট আরোপ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা জানান, “এনবিআর চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা হয়েছে। নভেম্বর মাসে এনবিআরের সঙ্গে একটি বৈঠক হবে। শিপব্রেকিং ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিদের সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হবে, তারা প্রস্তাব উত্থাপন করতে পারবেন। আমি সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব।”

 

বেলা ১টার দিকে তিনি “কবির শিপ রিসাইক্লিং ফ্যাসিলিটিস” নামে একটি কারখানা ঘুরে দেখেন। তার সঙ্গে ছিলেন সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফখরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) লাবিব আবদুল্লাহ, সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি মো. মজিবুর রহমান, শিপ রিসাইক্লিং বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. নাজমুল এবং কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ করিম উদ্দিন।

 

কারখানা পরিদর্শন শেষে শিপ রিসাইক্লিং বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. নাজমুল বলেন, “শিল্পটিকে আবার লাল শ্রেণিভুক্ত (Red Category) করায় উদ্যোক্তারা নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছেন। ব্যাংক ঋণ পেতে জটিলতা, পরিবেশ ছাড়পত্র পেতে দীর্ঘ সময় এবং উচ্চ সুদের চাপ অনেককে পিছিয়ে দিচ্ছে। এই ধারা চলতে থাকলে অনেক উদ্যোক্তা হয়তো গ্রিন শিপইয়ার্ডে আগ্রহ হারাবেন।”

 

পরিবেশবান্ধব ও আন্তর্জাতিক মানের শিপ রিসাইক্লিং শিল্প গড়ে তুলতে সরকার নীতিগতভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ—এমনটি উল্লেখ করে নৌ-উপদেষ্টা বলেন, “ব্যবসায়িক স্বার্থ ও জাতীয় স্বার্থের সমন্বয় ঘটিয়ে এ শিল্পকে টেকসই করতে হবে। তা না হলে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”

ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

সাটু‌রিয়ায় নদী পাড়ি দিয়ে দুধ ভ‌র্তি কল‌সি মাথায় দল বেঁধে ছুটছে কৃষক

​ডিসেম্বরে গ্রিন সার্টিফিকেট না নিলে জাহাজভাঙা কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হবে: নৌ-উপদেষ্টা সীতাকুণ্ডে কারখানা পরিদর্শনে কঠোর বার্তা, শিপব্রেকিং খাতে বড় সিদ্ধান্তের ইঙ্গিত

পোস্ট হয়েছেঃ ০৪:০২:৫০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫

শনিবার (২৬ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের একটি জাহাজভাঙা কারখানা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। তিনি জানান, বর্তমানে দেশে মাত্র ১৬টি জাহাজভাঙা কারখানা গ্রিন সার্টিফিকেট (Green Ship Recycling Yard) নিয়েছে। অথচ সীতাকুণ্ডের মতো ছোট্ট এলাকায় ১১৩টিরও বেশি শিপব্রেকিং ইয়ার্ড রয়েছে।

 

নৌ উপদেষ্টা বলেন, “যেসব প্রতিষ্ঠান ম্যানুয়াল পদ্ধতি থেকে পরিবেশবান্ধব গ্রিন শিপইয়ার্ডে রূপান্তর হবে না, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আমরা আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে টিকে থাকতে চাই। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই কমিটি গঠন করে প্রতিবেদন নেওয়া হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “বড় জাহাজ ভাঙার মতো অবকাঠামো না থাকায় অনেক সময় ঝুঁকি তৈরি হয়। ছোট ও মাঝারি জাহাজ আনা সম্ভব হলেও বড় জাহাজের জন্য হয়তো অন্যত্র স্থানান্তরের চিন্তা করতে হবে।” জাহাজ আমদানিতে অতিরিক্ত ভ্যাট আরোপ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা জানান, “এনবিআর চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা হয়েছে। নভেম্বর মাসে এনবিআরের সঙ্গে একটি বৈঠক হবে। শিপব্রেকিং ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিদের সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হবে, তারা প্রস্তাব উত্থাপন করতে পারবেন। আমি সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব।”

 

বেলা ১টার দিকে তিনি “কবির শিপ রিসাইক্লিং ফ্যাসিলিটিস” নামে একটি কারখানা ঘুরে দেখেন। তার সঙ্গে ছিলেন সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফখরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) লাবিব আবদুল্লাহ, সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি মো. মজিবুর রহমান, শিপ রিসাইক্লিং বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. নাজমুল এবং কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ করিম উদ্দিন।

 

কারখানা পরিদর্শন শেষে শিপ রিসাইক্লিং বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. নাজমুল বলেন, “শিল্পটিকে আবার লাল শ্রেণিভুক্ত (Red Category) করায় উদ্যোক্তারা নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছেন। ব্যাংক ঋণ পেতে জটিলতা, পরিবেশ ছাড়পত্র পেতে দীর্ঘ সময় এবং উচ্চ সুদের চাপ অনেককে পিছিয়ে দিচ্ছে। এই ধারা চলতে থাকলে অনেক উদ্যোক্তা হয়তো গ্রিন শিপইয়ার্ডে আগ্রহ হারাবেন।”

 

পরিবেশবান্ধব ও আন্তর্জাতিক মানের শিপ রিসাইক্লিং শিল্প গড়ে তুলতে সরকার নীতিগতভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ—এমনটি উল্লেখ করে নৌ-উপদেষ্টা বলেন, “ব্যবসায়িক স্বার্থ ও জাতীয় স্বার্থের সমন্বয় ঘটিয়ে এ শিল্পকে টেকসই করতে হবে। তা না হলে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”