১১:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

স্বামীর অত্যাচারে ঘরছাড়া স্ত্রী ও সন্তান বাধ্য হয়ে সংবাদ সম্মেলন

ভাবির সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক, যৌতুকের দাবি এবং মারধরের ঘটনায় পাঁচ বছরের শিশু সন্তানসহ ঘরছাড়া হয়েছেন এক গৃহবধূ। নির্যাতনের শিকার ওই নারী,
ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার গোহালকাঠী গ্রামের বাসিন্দা সুমাইয়া আক্তার। তিনি স্বামী মো. সোহেল হাওলাদার ও শ্বশুরবাড়ির অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধে যৌতুক ও নারী নির্যাতনের অভিযোগ এনেছেন।
সোমবার (৭ জুলাই) সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় নলছিটি প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সুমাইয়া আক্তার অভিযোগ করেন, তার স্বামী বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার বাখরকাঠী এলাকার বাসিন্দা মো. সোহেল হাওলাদার একাধিক পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন এবং যৌতুকের জন্য তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে ঘরছাড়া করেন।
সুমাইয়া আক্তার অভিযোগ করে বলেন “বিয়ের পর কয়েক বছর ভালোই কেটেছে। কিন্তু পরে স্বামী কাতারপ্রবাসী বড় ভাই মাছুদ হাওলাদারের স্ত্রী হেপী বেগমের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। আমি প্রতিবাদ করলে আমার ওপর অমানুষিক নির্যাতন নেমে আসে। বড় জা হেপী, ভাসুরের ছেলে ইব্রাহিমসহ শ্বশুরবাড়ির সবাই মিলে আমাকে মারধর করে পাঁচ বছরের ছেলেকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।
তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, প্রথম সম্পর্কের বিষয়টি গোপন রাখলেও পরে আবার ছোট ভাই সোহাগ হাওলাদারের স্ত্রী সারমিন বেগমের সঙ্গেও পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন সোহেল। স্থানীয়ভাবে ধরা পড়ার পর সালিশ হলেও কিছুদিন পর সোহেল সারমিনকে নিয়ে পালিয়ে যান। পরে বাড়িতে ফিরে এসে আমার ঘরের জিনিসপত্র বিক্রি করে দেয়, এমনকি আমার ভোটার আইডি, সন্তানের জন্মসনদ, সার্টিফিকেট আটকে রাখে। এসব কাগজপত্র ফেরত চাইলে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। ফোনে তাকে, তার সন্তান ও বাবাকে হত্যার ভয় দেখানো হচ্ছে বলে অভিযোগ তার।
তিনি আরও জানান, তার স্বামী ৮ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। এর মধ্যে বাবার বাড়ি থেকে ৩ লাখ টাকা দিতে বাধ্য হন তিনি। এখন আরও ৫ লাখ টাকা দাবি করছেন সোহেল। যৌতুক না দিলে ঘরে তুলবেন না বলে হুমকি দেন।
এ অবস্থায় গত ২৮ এপ্রিল সুমাইয়া নলছিটি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনে মামলা করেন। পরদিন তার মা ফরিদা বেগম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আরেকটি মামলা দায়ের করেন ঝালকাঠি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে।
সংবাদ সম্মেলনে সুমাইয়ার মা ফরিদা বেগম বলেন, সোহেল বিভিন্ন নম্বর থেকে ফোন করে গালিগালাজ করে, প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এখন আর কোনো শান্তি নেই।
সুমাইয়া আক্তার বর্তমানে পাঁচ বছরের ছেলেকে নিয়ে বাবার বাড়িতে অবস্থান করছেন। তিনি প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু তদন্ত, দ্রুত বিচার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন।
 এবিষয়ে অভিযুক্ত সোহেল হাওলাদার কে একাদিকবার ফোন দিলেও তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম জানান, আমাদের কাছে কোন ওয়ারেন্ট আদালত থেকে এসে পৌছায়নি।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

সিরাজগঞ্জ তাড়াশে সরকারি গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে

স্বামীর অত্যাচারে ঘরছাড়া স্ত্রী ও সন্তান বাধ্য হয়ে সংবাদ সম্মেলন

পোস্ট হয়েছেঃ ০৮:৩৯:০৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ জুলাই ২০২৫
ভাবির সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক, যৌতুকের দাবি এবং মারধরের ঘটনায় পাঁচ বছরের শিশু সন্তানসহ ঘরছাড়া হয়েছেন এক গৃহবধূ। নির্যাতনের শিকার ওই নারী,
ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার গোহালকাঠী গ্রামের বাসিন্দা সুমাইয়া আক্তার। তিনি স্বামী মো. সোহেল হাওলাদার ও শ্বশুরবাড়ির অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধে যৌতুক ও নারী নির্যাতনের অভিযোগ এনেছেন।
সোমবার (৭ জুলাই) সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় নলছিটি প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সুমাইয়া আক্তার অভিযোগ করেন, তার স্বামী বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার বাখরকাঠী এলাকার বাসিন্দা মো. সোহেল হাওলাদার একাধিক পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন এবং যৌতুকের জন্য তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে ঘরছাড়া করেন।
সুমাইয়া আক্তার অভিযোগ করে বলেন “বিয়ের পর কয়েক বছর ভালোই কেটেছে। কিন্তু পরে স্বামী কাতারপ্রবাসী বড় ভাই মাছুদ হাওলাদারের স্ত্রী হেপী বেগমের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। আমি প্রতিবাদ করলে আমার ওপর অমানুষিক নির্যাতন নেমে আসে। বড় জা হেপী, ভাসুরের ছেলে ইব্রাহিমসহ শ্বশুরবাড়ির সবাই মিলে আমাকে মারধর করে পাঁচ বছরের ছেলেকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।
তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, প্রথম সম্পর্কের বিষয়টি গোপন রাখলেও পরে আবার ছোট ভাই সোহাগ হাওলাদারের স্ত্রী সারমিন বেগমের সঙ্গেও পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন সোহেল। স্থানীয়ভাবে ধরা পড়ার পর সালিশ হলেও কিছুদিন পর সোহেল সারমিনকে নিয়ে পালিয়ে যান। পরে বাড়িতে ফিরে এসে আমার ঘরের জিনিসপত্র বিক্রি করে দেয়, এমনকি আমার ভোটার আইডি, সন্তানের জন্মসনদ, সার্টিফিকেট আটকে রাখে। এসব কাগজপত্র ফেরত চাইলে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। ফোনে তাকে, তার সন্তান ও বাবাকে হত্যার ভয় দেখানো হচ্ছে বলে অভিযোগ তার।
তিনি আরও জানান, তার স্বামী ৮ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। এর মধ্যে বাবার বাড়ি থেকে ৩ লাখ টাকা দিতে বাধ্য হন তিনি। এখন আরও ৫ লাখ টাকা দাবি করছেন সোহেল। যৌতুক না দিলে ঘরে তুলবেন না বলে হুমকি দেন।
এ অবস্থায় গত ২৮ এপ্রিল সুমাইয়া নলছিটি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনে মামলা করেন। পরদিন তার মা ফরিদা বেগম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আরেকটি মামলা দায়ের করেন ঝালকাঠি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে।
সংবাদ সম্মেলনে সুমাইয়ার মা ফরিদা বেগম বলেন, সোহেল বিভিন্ন নম্বর থেকে ফোন করে গালিগালাজ করে, প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এখন আর কোনো শান্তি নেই।
সুমাইয়া আক্তার বর্তমানে পাঁচ বছরের ছেলেকে নিয়ে বাবার বাড়িতে অবস্থান করছেন। তিনি প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু তদন্ত, দ্রুত বিচার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন।
 এবিষয়ে অভিযুক্ত সোহেল হাওলাদার কে একাদিকবার ফোন দিলেও তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম জানান, আমাদের কাছে কোন ওয়ারেন্ট আদালত থেকে এসে পৌছায়নি।