
বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়নের আদিখালী গ্রামে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে। বিষপানে মারা গেছেন ওই গ্রামের মো. আবেদ আলীর একমাত্র ছেলে সোহাগ সরদার (৩০)। তার মৃত্যুকে ঘিরে উঠেছে নানা প্রশ্ন, এলাকাবাসী ও পরিবারের অভিযোগের তীর তার শ্বশুরবাড়ির দিকেই।
জানা গেছে, গতকাল বুধবার (২৩ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে সোহাগ তার স্ত্রী সোনিয়াকে আনতে এবং কিছু গহনা নিয়ে আসতে শ্বশুরবাড়ি রওনা দেন। এক বছর আগে পারিবারিকভাবে বাগেরহাট সদর উপজেলার গোটাপাড়া ইউনিয়নের দেপাড়া গ্রামের বিল্লাল মাঝির মেয়ে সোনিয়ার সঙ্গে সোহাগের বিয়ে হয়।
সোহাগের বড় বোন রেখা বেগম বলেন, সন্ধ্যায় হঠাৎ তার ভাইয়ের শ্যালক ফোন করে জানায় সোহাগ খুব অসুস্থ, তাকে দ্রুত বাগেরহাট সদর হাসপাতালে যেতে হবে। হাসপাতালে পৌঁছে তিনি দেখতে পান, সোহাগ হাসপাতালের সামনে নিস্তেজ হয়ে পড়ে আছে এবং তার উপস্থিতি টের পেয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজন পালিয়ে যায়।
রেখা বেগম আরও জানান, চিকিৎসকরা প্রাথমিকভাবে বলেন সোহাগ বিষ পান করেছেন। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে পথিমধ্যে সি অ্যান্ড বি এলাকায় তার মৃত্যু হয়। লাশ পুনরায় বাগেরহাট সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। মৃত্যুর সময় সোহাগের মুখ, হাত ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়।
রেখা বেগমের অভিযোগ, সোহাগের শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে তার দীর্ঘদিন ধরে বনিবনা হচ্ছিল না। পরিকল্পিতভাবে তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়েছে।
এদিকে পুলিশ জানিয়েছে, তারা ময়নাতদন্ত ও ফরেনসিক রিপোর্টের অপেক্ষায় আছে। যদি এটি পরিকল্পিত হত্যা প্রমাণিত হয়, তাহলে অভিযুক্তদের কঠোরভাবে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানায় পুলিশ প্রশাসন।
স্থানীয় এলাকাবাসীও ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে।
সোহাগের এই মর্মান্তিক মৃত্যুতে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। অনেকেই বলছেন, পারিবারিক বিবাদ ও শ্বশুরবাড়ির চাপে একটি তরতাজা প্রাণ অকালে ঝরে গেল।