১২:২১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চাঁপাইনবাবগঞ্জে মহানন্দা নদীর কবলে শতাধিক পরিবার

গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় ভয়াবহ নদীর ভাঙন বেড়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের কল্যাণপুর এলাকায় নদীর তীরবর্তী এলাকায়। নদী তীরে বসবাসরত এই মানুষগুলো তাদের বহুকালের ভিটামাটি বাড়িঘর ও জমিজমা হারানোর ঝুঁকিতে পড়েছেন। এতে আতঙ্কে রয়েছেন ওই গ্রামের শতাধিক পরিবার।
বিষয়টি নজরে এলে গত (২১ জুলাই) বিকালে ওই গ্রামের ভেঙে যাওয়া বাড়িঘরগুলো পরিদর্শন করেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এস, এম আহসান হাবীবসহ- পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।
এইসময় পরিদর্শন শেষে ভাঙন মোকাবিলায় প্রস্তুতির কথা জানায় পানি উন্নয়ন বোর্ড এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, এই গ্রামের প্রায় দেড়শ মিটার জায়গা পানি বৃদ্ধির কারণে বসে গেছে, ঘনবসতি এলাকা হওয়ার বেশকিছু বাড়িঘর তলিয়ে গেছে। এবং বাকিগুলো ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এই অংশটুকু যেন আর ভেঙে না যায়। তার জন্য আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে রিপোর্ট করার পর খুব দ্রুত ভাঙ্গনরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব বলে নিশ্চিত করেন ভুক্তভোগীদের।
অন্যদিকে কল্যাণপুর এলাকায় নদীর কবলে পড়া বাসিন্দাদের কান্নার আহাজারি আকুতির দাবি এবার ভাঙনরোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হোক। তা না হলে নিঃস্ব হয়ে পড়বে আরও শতাধিক পরিবার।
স্থানীয় বাসিন্দা মোছা. মাউনজেরা টগরী বেগমসহ জানান, ‘এ পর্যন্ত এই এলাকায় শতাধিক পরিবার ঘর-বাড়ি হারিয়েছে কয়েকবছরে। আমরা চাই দ্রুত এসব এলাকায় ভাঙনরোধের দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে কাজ করা হোক।’
ভুক্তভোগীরা এলাকাবাসীরা জানান, এবার বর্ষা শুরুর আগেই উজানের ঢলের ভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়েছে অনেকেই। বছরের পর বছর ধরে অব্যাহত ভাঙনে শতাধিক পরিবার নিঃস্ব হলেও সরকারি কোনো ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ তাদের।
নদীর গর্ভে শতাধিক পরিবারের দাবি রাবার ড্রাম স্থাপনায় আমাদের ভিটেমাটি হারাতে হচ্ছে কারণ রাবার ড্রাম যখন ছিলো না তখন জমাটবদ্ধ পানি কিছুদিন থাকার পর শুকিয়ে গেছে। আর এখন রাবার ড্রামের কারণে পানি বদ্ধ হয়ে থাকাতে নদীর ধারের মাটি ভিজে থাকার জন্য বাড়ি ঘর গুলো ফাটলের মূল কারণ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নদী ভাঙনের বিষয়টি নতুন নয় প্রতিবছরই এ রকম ঘটনা ঘটে। কিন্তু এখন পর্যন্ত টেকসই কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ফলে বছরের পর বছর ধরে হাজারো মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে পড়ছে, কেউ আত্মীয়ের বাড়ি, কেউবা আশ্রয় কেন্দ্রে কোনোরকমে দিন কাটাচ্ছে।নদীগর্ভে চলে যাওয়া এসব পরিবারের মাঝে চরম হতাশা, ক্ষোভ ও নিরাপত্তাহীনতা বিরাজ করছে। তারা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছে- আমাদের বাঁচান, আমাদের ঘরবাড়ি রক্ষা করুন। প্রয়োজন দ্রুত নদী তীর সংরক্ষণ প্রকল্প বাস্তবায়ন, ভাঙনরোধে বাঁধ নির্মাণ ও নদী ড্রেজিং। না হলে ভবিষ্যতে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা আরও ভয়াবহ হবে।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

সদরপুরে কার ও মাইক্রোবাস মালিক সমিতির কমিটি গঠন

চাঁপাইনবাবগঞ্জে মহানন্দা নদীর কবলে শতাধিক পরিবার

পোস্ট হয়েছেঃ ০৯:৪৩:৩৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫
গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় ভয়াবহ নদীর ভাঙন বেড়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের কল্যাণপুর এলাকায় নদীর তীরবর্তী এলাকায়। নদী তীরে বসবাসরত এই মানুষগুলো তাদের বহুকালের ভিটামাটি বাড়িঘর ও জমিজমা হারানোর ঝুঁকিতে পড়েছেন। এতে আতঙ্কে রয়েছেন ওই গ্রামের শতাধিক পরিবার।
বিষয়টি নজরে এলে গত (২১ জুলাই) বিকালে ওই গ্রামের ভেঙে যাওয়া বাড়িঘরগুলো পরিদর্শন করেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এস, এম আহসান হাবীবসহ- পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।
এইসময় পরিদর্শন শেষে ভাঙন মোকাবিলায় প্রস্তুতির কথা জানায় পানি উন্নয়ন বোর্ড এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, এই গ্রামের প্রায় দেড়শ মিটার জায়গা পানি বৃদ্ধির কারণে বসে গেছে, ঘনবসতি এলাকা হওয়ার বেশকিছু বাড়িঘর তলিয়ে গেছে। এবং বাকিগুলো ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এই অংশটুকু যেন আর ভেঙে না যায়। তার জন্য আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে রিপোর্ট করার পর খুব দ্রুত ভাঙ্গনরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব বলে নিশ্চিত করেন ভুক্তভোগীদের।
অন্যদিকে কল্যাণপুর এলাকায় নদীর কবলে পড়া বাসিন্দাদের কান্নার আহাজারি আকুতির দাবি এবার ভাঙনরোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হোক। তা না হলে নিঃস্ব হয়ে পড়বে আরও শতাধিক পরিবার।
স্থানীয় বাসিন্দা মোছা. মাউনজেরা টগরী বেগমসহ জানান, ‘এ পর্যন্ত এই এলাকায় শতাধিক পরিবার ঘর-বাড়ি হারিয়েছে কয়েকবছরে। আমরা চাই দ্রুত এসব এলাকায় ভাঙনরোধের দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে কাজ করা হোক।’
ভুক্তভোগীরা এলাকাবাসীরা জানান, এবার বর্ষা শুরুর আগেই উজানের ঢলের ভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়েছে অনেকেই। বছরের পর বছর ধরে অব্যাহত ভাঙনে শতাধিক পরিবার নিঃস্ব হলেও সরকারি কোনো ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ তাদের।
নদীর গর্ভে শতাধিক পরিবারের দাবি রাবার ড্রাম স্থাপনায় আমাদের ভিটেমাটি হারাতে হচ্ছে কারণ রাবার ড্রাম যখন ছিলো না তখন জমাটবদ্ধ পানি কিছুদিন থাকার পর শুকিয়ে গেছে। আর এখন রাবার ড্রামের কারণে পানি বদ্ধ হয়ে থাকাতে নদীর ধারের মাটি ভিজে থাকার জন্য বাড়ি ঘর গুলো ফাটলের মূল কারণ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নদী ভাঙনের বিষয়টি নতুন নয় প্রতিবছরই এ রকম ঘটনা ঘটে। কিন্তু এখন পর্যন্ত টেকসই কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ফলে বছরের পর বছর ধরে হাজারো মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে পড়ছে, কেউ আত্মীয়ের বাড়ি, কেউবা আশ্রয় কেন্দ্রে কোনোরকমে দিন কাটাচ্ছে।নদীগর্ভে চলে যাওয়া এসব পরিবারের মাঝে চরম হতাশা, ক্ষোভ ও নিরাপত্তাহীনতা বিরাজ করছে। তারা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছে- আমাদের বাঁচান, আমাদের ঘরবাড়ি রক্ষা করুন। প্রয়োজন দ্রুত নদী তীর সংরক্ষণ প্রকল্প বাস্তবায়ন, ভাঙনরোধে বাঁধ নির্মাণ ও নদী ড্রেজিং। না হলে ভবিষ্যতে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা আরও ভয়াবহ হবে।