
বরিশাল শহরের বি.এম কলেজ রোডে অবস্থিত কলেজিয়েট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোচিং বানিজ্য ও গাইড বই কিনতে বাধ্য করার মত গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই শ্রেণি রোল নম্বরের জন্য পরীক্ষা নেয়া হয় জানুয়ারি মাসের 15-20 তারিখের মধ্যে। তখনই শুরু হয় পরীক্ষায় ভালো করার নামে কোচিং বানিজ্য। এখানে সকল ছাত্রের কোচিং করা বাধ্যতামূলক। প্রতিদিন সকাল ৭.৩০ মিনিটে শুরু হয় এবং এর জন্য মাসিক বেতন জনপ্রতি 1200 টাকা। কোচিং এ যা পড়ান তা ক্লাসে পড়ান না আবার সিনিয়র শিক্ষকরা কোচিং করান কিন্তু ক্লাস করান না, তাদের পরিবর্তে খন্ডকালীন শিক্ষক দিয়ে ক্লাস পরিচালনা করা হয়। প্রধান শিক্ষক তিনটি শ্রেণির কোচিং করান যার একটি স্কুল শুরুর আগে, বিকেলে তাল ভিটা গলির ভাড়া বাসায় এবং বিদ্যালয় সংলগ্ন নিজের বাসায়।
কোচিং এ আকৃষ্ট করার জন্য লেকচার গাইড থেকে পরীক্ষার যা আসবে তা দাগিয়ে দেয় ফলে শিক্ষার্থীরা লেকচার গাইড কিনতে বাধ্য হয়। এর বিনিময়ে লেকচার কোম্পানীর নিকট থেকে বড় অঙ্কের টাকা উপঢৌকন হিসেবে নেন প্রধান শিক্ষক মোঃ সিরাজুল ইসলাম ও সহকারী শিক্ষক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, প্রদীপ কুমার মল্লিক, লক্ষ্মণ চন্দ্র বণিক ও শাহেনুর আক্তার। কোচিং না করা কোন শিক্ষার্থী ১ দিন যদি সকাল ৯ টায় স্কুলে আসে তাহলে তাকে পুরো এক মাসের কোচিং এর বেতন দিতে হয়। তারা এত টাকার মালিক যে তাদের সাথে স্বাভাবিক কথাও অভিভাবক গন জানতে চাইলে মেজাজ দেখান। কার কত ইনকাম এই প্রতিযোগিতায় তারা ব্যস্ত। নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি হতে আসলে প্রথমে জানতে চায় সকাল বিকেল কোচিং করবে কিনা, কোচিং না করলে ভর্তি করে না।
অভিযোগের বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি স্কুল কোচিং, লেকচার গাইড এবং শিক্ষকদের বাসায় পড়ানোর বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করেন কিন্তু কোচিং করা বাধতামূলক এ বিষয়ে তিনি অস্বীকার করেন। তিনি সরকারী নিয়মনীতি মেনে অতিরিক্ত ক্লাশ পরিচালনা করেন এবং এ বিষয়ে তার সভাপতি জনাব মাসুমা আক্তার, সিনিয়র সহকারী কমিশনার, বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয় মহোদয় জ্ঞাত আছেন ।
সভাপতি জনাব মাসুমা আক্তারের সাথে যোগাযোগ করলে বলেন গাইড বই নির্ধারিত করার ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না তবে অতিরিক্ত ক্লাশের ব্যাপারে তিনি অবগত আছে। অভিযোগ পেলে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে প্রতিনিধিকে অবহিত করেন।