০৫:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আগষ্ট থেকে শুরু হচ্ছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কুলফিডিং কর্মসূচি

আগষ্ট মাস থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে শুরু হচ্ছে বহু কাঙ্ক্ষিত স্কুলফিডিং কর্মসূচি। এ কর্মসূচির আওতায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে একবেলা পুষ্টিকর খাবার দেয়া হবে। এই কর্মসূচিতে কুড়িগ্রামের ৭টি উপজেলা অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।
 বুধবার ২৫ জুন সকালে কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসে গিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত কিনা জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট কর্মকতা জানান, স্কুল ফিডিং কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য ইতোমধ্যে প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
জানা যায়, বিশ্বব্যাংকের সহায়তা ও সরকারি অর্থায়নে  প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর স্কুল ফিডিং কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে। এ কর্মসূচির আওতায় দেশের ১৫০টি উপজেলায় একযোগে কার্যক্রম শুরু করা হবে। এর মধ্যে কুড়িগ্রামের
কুড়িগ্রাম সদর, ভুরুঙ্গামারী, চিলমারী, নাগেশ্বরী, রাজিবপুর, রাজারহাট ও রৌমারী মোট ৭টি উপজেলাকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।
এই কর্মসূচির আওতায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন শ্রেণিকক্ষে একবেলা পুষ্টিকর খাবার দেয়া হবে।
এ ব্যাপারে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ জানিয়েছেন, স্কুল ফিডিং কর্মসূচি জুলাই/২০২৫ থেকে শুরু করার কথা থাকলেও বিভিন্ন জটিলতা কাটিয়ে উঠতে না পারলে আগস্ট/২০২৫ থেকে স্কুল ফিডিং কর্মসূচি বাস্তবায়নের কাজ শুরু করা হবে। এ কর্মসূচির আওতায় দেশের দারিদ্র্য ও অতি দরিদ্র এলাকা চিহ্নিত করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ১৫০টি উপজেলার ১৯ হাজার ৪১৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মোট ৩১ লাখ ৩০ হাজার শিক্ষার্থী এই কর্মসূচির আওতায় পুষ্টিকর খাবার পাবে। একটি নিদিষ্ট খাবারের তালিকা অনুসরণ করে শিক্ষার্থীদের রবিবার, মঙ্গলবার, বৃহস্পতিবার: বনরুটি ও সিদ্ধ ডিম। সোমবার: বনরুটি ও ইউএইচটি দুধ। বুধবার: ফর্টিফাইড বিস্কুট ও কলা এবং  মৌসুমি ফল দেয়া হবে।
স্কুল ফিডিং কর্মসূচিটি কুড়িগ্রামেও শুরু হচ্ছে জেনে কুড়িগ্রাম জেলার ০৭ উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবক, শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সকলে এবং বিশেষ করে কুড়িগ্রামের ১৬ নদী তীরবর্তী চরাঞ্চলের অভিভাবকদের মাঝে আনন্দ দেখা গেছে।
জানা যায়, একটি যৌথ পর্যবেক্ষণ কমিটি এই কর্মসূচির সার্বিক তদারকিতে থাকবে, যেখানে শিক্ষক, অভিভাবক, স্থানীয় প্রশাসন ও শিক্ষা বিভাগের প্রতিনিধিরা সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকবেন। সংশ্লিষ্টরা এও জানায়, তালিকা অনুযায়ী শিশু শিক্ষার্থীদে পুষ্টির জন্য যে খাদ্য দেয়া হবে এতে তাদের স্বাভাবিক শারীরিক বিকাশ ও মানসিক মনোযোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি বিদ্যালয়মুখী হওয়ার আগ্রহও বাড়বে এবং এই কর্মসূচিটি যথাযথ ভাবে পরিচালিত হলে শিশু শিক্ষার্থীদের শুধু পুষ্টিই নয় এতে প্রাথমিক শিক্ষার মানন্নোয়ন, বিদ্যালয়ে উপস্থিতি বৃদ্ধি, ঝরে পড়া হার হ্রাস, দারিদ্র্য বিমোচন এবং সামাজিক উন্নয়নে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে বলে আশা করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত সুবিধাভোগী ও শিক্ষা কাজে নিযুক্ত বিশ্লেষকগণ।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)’র আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় বাংলাদেশে প্রথম স্কুল ফিডিং কর্মসূচির সূচনা হয়ে তা ২০১০ সাল পর্যন্ত চলমান ছিল। এরপর ২০১০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় আরো একটি পৃথক স্কুল ফিডিং কর্মসূচি চালু ছিল, যার আওতায় শিক্ষার্থীদের শুধু উচ্চমানসম্পন্ন বিস্কুট সরবরাহ করা হতো। নতুন প্রকল্পটি আগের চেয়ে আরও উন্নত ও পুষ্টিনির্ভর এবং এটি শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে ইতিবাচক প্রভাব রাখবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

মাইলস্টোন ট্রাজেডি-ভোলায় পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত মাসুমা

আগষ্ট থেকে শুরু হচ্ছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কুলফিডিং কর্মসূচি

পোস্ট হয়েছেঃ ০৭:০৬:০৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫
আগষ্ট মাস থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে শুরু হচ্ছে বহু কাঙ্ক্ষিত স্কুলফিডিং কর্মসূচি। এ কর্মসূচির আওতায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে একবেলা পুষ্টিকর খাবার দেয়া হবে। এই কর্মসূচিতে কুড়িগ্রামের ৭টি উপজেলা অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।
 বুধবার ২৫ জুন সকালে কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসে গিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত কিনা জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট কর্মকতা জানান, স্কুল ফিডিং কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য ইতোমধ্যে প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
জানা যায়, বিশ্বব্যাংকের সহায়তা ও সরকারি অর্থায়নে  প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর স্কুল ফিডিং কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে। এ কর্মসূচির আওতায় দেশের ১৫০টি উপজেলায় একযোগে কার্যক্রম শুরু করা হবে। এর মধ্যে কুড়িগ্রামের
কুড়িগ্রাম সদর, ভুরুঙ্গামারী, চিলমারী, নাগেশ্বরী, রাজিবপুর, রাজারহাট ও রৌমারী মোট ৭টি উপজেলাকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।
এই কর্মসূচির আওতায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন শ্রেণিকক্ষে একবেলা পুষ্টিকর খাবার দেয়া হবে।
এ ব্যাপারে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ জানিয়েছেন, স্কুল ফিডিং কর্মসূচি জুলাই/২০২৫ থেকে শুরু করার কথা থাকলেও বিভিন্ন জটিলতা কাটিয়ে উঠতে না পারলে আগস্ট/২০২৫ থেকে স্কুল ফিডিং কর্মসূচি বাস্তবায়নের কাজ শুরু করা হবে। এ কর্মসূচির আওতায় দেশের দারিদ্র্য ও অতি দরিদ্র এলাকা চিহ্নিত করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ১৫০টি উপজেলার ১৯ হাজার ৪১৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মোট ৩১ লাখ ৩০ হাজার শিক্ষার্থী এই কর্মসূচির আওতায় পুষ্টিকর খাবার পাবে। একটি নিদিষ্ট খাবারের তালিকা অনুসরণ করে শিক্ষার্থীদের রবিবার, মঙ্গলবার, বৃহস্পতিবার: বনরুটি ও সিদ্ধ ডিম। সোমবার: বনরুটি ও ইউএইচটি দুধ। বুধবার: ফর্টিফাইড বিস্কুট ও কলা এবং  মৌসুমি ফল দেয়া হবে।
স্কুল ফিডিং কর্মসূচিটি কুড়িগ্রামেও শুরু হচ্ছে জেনে কুড়িগ্রাম জেলার ০৭ উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবক, শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সকলে এবং বিশেষ করে কুড়িগ্রামের ১৬ নদী তীরবর্তী চরাঞ্চলের অভিভাবকদের মাঝে আনন্দ দেখা গেছে।
জানা যায়, একটি যৌথ পর্যবেক্ষণ কমিটি এই কর্মসূচির সার্বিক তদারকিতে থাকবে, যেখানে শিক্ষক, অভিভাবক, স্থানীয় প্রশাসন ও শিক্ষা বিভাগের প্রতিনিধিরা সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকবেন। সংশ্লিষ্টরা এও জানায়, তালিকা অনুযায়ী শিশু শিক্ষার্থীদে পুষ্টির জন্য যে খাদ্য দেয়া হবে এতে তাদের স্বাভাবিক শারীরিক বিকাশ ও মানসিক মনোযোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি বিদ্যালয়মুখী হওয়ার আগ্রহও বাড়বে এবং এই কর্মসূচিটি যথাযথ ভাবে পরিচালিত হলে শিশু শিক্ষার্থীদের শুধু পুষ্টিই নয় এতে প্রাথমিক শিক্ষার মানন্নোয়ন, বিদ্যালয়ে উপস্থিতি বৃদ্ধি, ঝরে পড়া হার হ্রাস, দারিদ্র্য বিমোচন এবং সামাজিক উন্নয়নে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে বলে আশা করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত সুবিধাভোগী ও শিক্ষা কাজে নিযুক্ত বিশ্লেষকগণ।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)’র আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় বাংলাদেশে প্রথম স্কুল ফিডিং কর্মসূচির সূচনা হয়ে তা ২০১০ সাল পর্যন্ত চলমান ছিল। এরপর ২০১০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় আরো একটি পৃথক স্কুল ফিডিং কর্মসূচি চালু ছিল, যার আওতায় শিক্ষার্থীদের শুধু উচ্চমানসম্পন্ন বিস্কুট সরবরাহ করা হতো। নতুন প্রকল্পটি আগের চেয়ে আরও উন্নত ও পুষ্টিনির্ভর এবং এটি শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে ইতিবাচক প্রভাব রাখবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।