০৭:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মতলবে বাড়ছে কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য, অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

চাঁদপুরের মতলব উত্তরে দিনে দিনে বাড়ছে কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম। অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। দিনে রাতে দেশীয় অস্ত্রসহ সংঘবদ্ধ হয়ে নিয়মিত রাস্তাঘাটে ঘোরাফেরা করে। মারামারি, মেয়েদের উত্ত্যক্ত, মাদক সেবন, চাঁদা দাবিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত । এ পরিস্থিতিতে অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন এবং এলাকার বাসিন্দারা চরম আতঙ্কের মধ্যে দিয়ে দিন কাটাচ্ছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার পূর্ব ফতেপুর ইউনিয়নের লুধুয়া রসুলপুর ব্রিজের উপর, চান্দ্রাকান্দি বেরিবাধ, মোহনপুর পর্যটন কেন্দ্র, সুগন্ধী, এখলাছপুর বেড়ীবাঁধসহ বিভিন্ন এলাকা বিচরন করে কিশোর গ্যাংরা। এমনকি মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভিতরে মোটরসাইকেল রেখে আড্ডা দিতে দেখা যায় তাদের। মাসিক আইনশৃঙ্খলা ও সমন্বয় সভায়ও এ বিষয় নিয়ে কথা উঠেছে। সম্প্রতি উপজেলার বেলতলী এলাকায় মোফাজ্জল হোসেন নামের একজন পথচারী রাস্তা ছেড়ে দাঁড়ানোর কথা বলতেই তার ওপর আক্রমণ করে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। পরে এলাকাবাসী এগিয়ে এলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। গত এক মাসে তুচ্ছ ঘটনায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের দ্বারা আহত হয়েছে ১০/১২ জন। নিরাপত্তাহীনতার কারণে কোনো ঘটনায় থানায় অভিযোগ করার সাহস পায়নি ভুক্তভোগীরা।
বাগানবাড়ী ইউনিয়নের কালির বাজারের নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, কিশোর গ্যাংয়ের এক সদস্য এসে টাকা দাবি করছেন। টাকা না দিতে চাওয়ায় হাতে থাকা হেলমেট দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করার চেষ্টা করে কিশোর গ্যাংয়ের ওই সদস্য। একটু দূরেই দাঁড়িয়ে ছিল কিশোর গ্যাংয়ের অন্য সদস্যরা। আশপাশের অন্যান্য ব্যবসায়ীরাও এমন তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানান।  উপজেলার হরিনা এলাকার বাসিন্দা কামাল হোসেন বলেন, ‘এলাকায় ইদানীং চুরির ঘটনা বেড়ে গেছে। বিশেষ করে মোবাইল চুরি হচ্ছে বেশি। দিনের বেলায়ও বাসা-বাড়ির জানালা বন্ধ করে রাখতে হচ্ছে। আমাদের প্রতি মুহূর্তে চোর ও কিশোর গ্যাংয়ের আতঙ্কে থাকতে হয়। এ ব্যাপারে প্রশাসনের দ্রুত কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’ বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির সভাপতি নুর মোহাম্মদ খান বলেন, আন্দোলনের পরবর্তী কিছু কিশোরদের ভেতর একটা হিরোইজম তৈরি হয়েছে। তারা নিজেদের একটি গ্রুপ তৈরি করে বিভিন্ন ভাবে অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ছে। এ বিষয়ে প্রশাসনকে আরো শক্ত ভূমিকা পালন করতে হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মতলব উত্তর থানার ওসি মো. রবিউল হক বলেন, গত শুক্রবার  ও শনিবার রাতে কিশোর অপরাধী সন্দেহে ২০ জন আটক করেছি। কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

জুলাই সনদের খসড়া তৈরি, কালকের মধ্যে সব দলকে পাঠানো হবে: আলী রীয়াজ

মতলবে বাড়ছে কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য, অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

পোস্ট হয়েছেঃ ১১:৩৬:০০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫
চাঁদপুরের মতলব উত্তরে দিনে দিনে বাড়ছে কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম। অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। দিনে রাতে দেশীয় অস্ত্রসহ সংঘবদ্ধ হয়ে নিয়মিত রাস্তাঘাটে ঘোরাফেরা করে। মারামারি, মেয়েদের উত্ত্যক্ত, মাদক সেবন, চাঁদা দাবিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত । এ পরিস্থিতিতে অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন এবং এলাকার বাসিন্দারা চরম আতঙ্কের মধ্যে দিয়ে দিন কাটাচ্ছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার পূর্ব ফতেপুর ইউনিয়নের লুধুয়া রসুলপুর ব্রিজের উপর, চান্দ্রাকান্দি বেরিবাধ, মোহনপুর পর্যটন কেন্দ্র, সুগন্ধী, এখলাছপুর বেড়ীবাঁধসহ বিভিন্ন এলাকা বিচরন করে কিশোর গ্যাংরা। এমনকি মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভিতরে মোটরসাইকেল রেখে আড্ডা দিতে দেখা যায় তাদের। মাসিক আইনশৃঙ্খলা ও সমন্বয় সভায়ও এ বিষয় নিয়ে কথা উঠেছে। সম্প্রতি উপজেলার বেলতলী এলাকায় মোফাজ্জল হোসেন নামের একজন পথচারী রাস্তা ছেড়ে দাঁড়ানোর কথা বলতেই তার ওপর আক্রমণ করে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। পরে এলাকাবাসী এগিয়ে এলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। গত এক মাসে তুচ্ছ ঘটনায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের দ্বারা আহত হয়েছে ১০/১২ জন। নিরাপত্তাহীনতার কারণে কোনো ঘটনায় থানায় অভিযোগ করার সাহস পায়নি ভুক্তভোগীরা।
বাগানবাড়ী ইউনিয়নের কালির বাজারের নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, কিশোর গ্যাংয়ের এক সদস্য এসে টাকা দাবি করছেন। টাকা না দিতে চাওয়ায় হাতে থাকা হেলমেট দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করার চেষ্টা করে কিশোর গ্যাংয়ের ওই সদস্য। একটু দূরেই দাঁড়িয়ে ছিল কিশোর গ্যাংয়ের অন্য সদস্যরা। আশপাশের অন্যান্য ব্যবসায়ীরাও এমন তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানান।  উপজেলার হরিনা এলাকার বাসিন্দা কামাল হোসেন বলেন, ‘এলাকায় ইদানীং চুরির ঘটনা বেড়ে গেছে। বিশেষ করে মোবাইল চুরি হচ্ছে বেশি। দিনের বেলায়ও বাসা-বাড়ির জানালা বন্ধ করে রাখতে হচ্ছে। আমাদের প্রতি মুহূর্তে চোর ও কিশোর গ্যাংয়ের আতঙ্কে থাকতে হয়। এ ব্যাপারে প্রশাসনের দ্রুত কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’ বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির সভাপতি নুর মোহাম্মদ খান বলেন, আন্দোলনের পরবর্তী কিছু কিশোরদের ভেতর একটা হিরোইজম তৈরি হয়েছে। তারা নিজেদের একটি গ্রুপ তৈরি করে বিভিন্ন ভাবে অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ছে। এ বিষয়ে প্রশাসনকে আরো শক্ত ভূমিকা পালন করতে হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মতলব উত্তর থানার ওসি মো. রবিউল হক বলেন, গত শুক্রবার  ও শনিবার রাতে কিশোর অপরাধী সন্দেহে ২০ জন আটক করেছি। কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।