
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে আলাউদ্দিন (৫৫) নামে এক সাবেক ইউপি সদস্যকে অপহরণের পর কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করেছে মুখোশধারী একদল সন্ত্রাসী। রবিবার (৩ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার বক্সগঞ্জ ইউনিয়নের আলীয়ারা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আলাউদ্দিন ওই ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার এবং প্রবাস ফেরত ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আলাউদ্দিন মেম্বারের চাচাতো ভাই আবুল বাশারের জানাজা নামাজ শেষে বাড়ির সামনে অবস্থান করছিলেন তিনি। এ সময় মুখোশধারী একদল সন্ত্রাসী সিএনজি চালিত অটোরিকশাযোগে এসে তাকে জোরপূর্বক অপহরণ করে নিয়ে যায়।
অপহরণের খবর পেয়ে নিহতের ভাগিনা তারেক ও আত্মীয় ডা. আনোয়ার সন্ত্রাসীদের পিছু ধাওয়া করে। পরে বাড়ি থেকে অন্তত ১০ কিলোমিটার দূরে উপজেলার চাঁন্দাইশ গ্রামে আবুল খায়ের মাস্টারের বাড়ির সামনে থেকে হাত-পা বাঁধা, গুলিবিদ্ধ ও কুপিয়ে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় আলাউদ্দিন মেম্বারকে উদ্ধার করেন তারা। দ্রুত নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্বজনরা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় যুবলীগ নেতা শেখ ফরিদ ও সালেহ আহমদ মেম্বারের সঙ্গে আলাউদ্দিন মেম্বার গোষ্ঠীর রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ও আধিপত্য নিয়ে বিরোধ চলছিল। আদালতে একাধিক মামলা বিচারাধীন রয়েছে। সেই বিরোধের জের ধরেই পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে তাদের দাবি।
এদিকে হত্যাকাণ্ডের পর এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। আলীয়ারা গ্রামে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একে ফজলুল হক বলেন, “ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা ঘটনাস্থলে যাই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।”
এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মামলার প্রস্তুতি চলছে এবং দ্রুত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।