রংপুরের হারাগাছ এলাকায় অনলাইন জুয়া ও ক্যাসিনো বন্ধের দাবিতে এক বিশাল মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সামাজিক সংগঠন ‘আমার দেশ আমার অহংকার’-এর উদ্যোগে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। শুক্রবার বিকেলে হারাগাছ পৌরসভা গেটের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, বিশেষ করে তরুণ সমাজ, যারা অনলাইন ক্যাসিনোর ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। হাতে ব্যানার, প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে তারা জুয়া ও মাদকমুক্ত সমাজ গঠনের আহ্বান জানান।

 অনলাইন জুয়ার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, “বর্তমানে অনলাইন ক্যাসিনো ও বিভিন্ন অ্যাপভিত্তিক জুয়া তরুণদের মাঝে মারাত্মক আসক্তির সৃষ্টি করছে। এটি শুধু অর্থনৈতিকভাবে নয়, নৈতিকভাবেও সমাজকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে।”
তারা অভিযোগ করেন, প্রশাসনের একাংশের নিরবতা ও প্রযুক্তির অপব্যবহার এই জুয়া কার্যক্রমকে দিন দিন আরও ছড়িয়ে দিচ্ছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে সামাজিক অবক্ষয় আরও মারাত্মক রূপ নিতে পারে বলে তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

 প্রশাসনের প্রতি আহ্বান

মানববন্ধনে বক্তারা সরকারের কাছে দ্রুত ও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। তারা বলেন, “আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে আরও তৎপর হতে হবে। অনলাইন জুয়া বন্ধে সাইবার ইউনিটকে জোরদার করতে হবে এবং অপরাধীদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে হবে।”

 তরুণদের সজাগ ভূমিকা

অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী যুবক হৃদয় ইসলাম বলেন, “আমরা আর চুপ করে থাকতে পারি না। আমাদের বন্ধু, ভাই-বোনেরা জুয়ার ফাঁদে পড়ে সর্বস্ব হারাচ্ছে। এ অবস্থা রোধে সবাইকে এক হতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “তরুণ সমাজ যদি চায়, তবে এই ব্যাধি বন্ধ করা সম্ভব। আমরা সামাজিকভাবে সচেতনতা তৈরি করব, যাতে কেউ আর এই মরণ ফাঁদে পা না দেয়।”

 “আমার দেশ আমার অহংকার” সংগঠনের ভূমিকা

এই সামাজিক সংগঠনটি রংপুর জেলার হারাগাছ এলাকায় ইতোমধ্যে মাদক, ইভটিজিং, বাল্যবিবাহ ও সাইবার অপরাধ বিরোধী নানা কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। সংগঠনের নেতারা বলেন, “আমরা সমাজের প্রতিটি অসংগতি নিয়ে কথা বলব। এই দেশ আমাদের, তাই তার সুরক্ষাও আমাদের দায়িত্ব।”

 শেষ কথা
মানববন্ধনের মধ্য দিয়ে হারাগাছবাসী আবারও প্রমাণ করল, সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলাই পরিবর্তনের প্রথম ধাপ। এখন সময় প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার। অনলাইন জুয়া ও ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে দেশের সর্বস্তরে এমনই প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়লে আশা করা যায়, শিগগিরই সমাজ এই বিপর্যয় থেকে মুক্তি পাবে।