
২০২৪ খ্রীষ্টাব্দের ৫ই আগষ্ট ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পালিয়ে যাবার পর দেশের সকল স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের বিনা ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের অপসারণ করা হলেও এর ব্যাতিক্রম দেখা গেছে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায়। নলছিটি পৌরসভার মেয়র, উপজেলা পরিষদ চেয়াম্যান এবং উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ৯ টির চেয়ারম্যানকে অপসারণ করা হয়। ব্যাতিক্রম উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ইউনয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বাবুল মৃধা। তিনি পরিষদে উপস্থিত না থাকলেও স্ব-পদে বহাল আছেন। তাইতো তার খুটির জোর নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে জনমনে। তিনি এলাকায় না এসে স্ব-পদে বহাল থেকে তার স্বজনপ্রীতি, অনিয়ম, দূর্ণীতি চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ ইউনয়নবাসির। কিছুদিন পূর্বে তার অপসারণের দাবীতে মানববন্ধন করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে এলাকাবাসি।
এরই ধারাবাহিকতায় দপদপিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নানান অনিয়ম দূর্ণীতির অভিযোগে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি বিনা ভোটে নির্বাচিত দপদপিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বাবুল মৃধার অপসারণের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে এলাকাবাসি। বুধবার (৯ই জুলাই) বেলা ১১টায় নলছিটি প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে দপদপিয়া ইউনিয়নের সাধারণ জনগণ। ইউনিয়নবাসির পক্ষে এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করে অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের অনিয়ম দূর্ণীতির চিত্র তুলে ধরেন মো. বশিরুজ্জামান মিলন।
মো. বশিরুজ্জামান মিলন বলেন,“আওয়ামীগের গডফাদার ঝালকাঠি-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমুর প্রভাব খাটিয়ে ক্ষমতার অপব্যাবহার করে নৌকা প্রতীকে বিনা ভোটে চেযাম্যান নির্বাচিত হয়ে চেয়াম্যানের দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকেই বেপরোয়া হয়ে ওঠেন বাবুল মৃধা। শুরু করেন জনবিরোধী কর্মকান্ড। স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে অযোগ্য লোকদের দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়নের নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এভাবে ২০২২/২৩ অর্থবছরে ইউপ ভবন সংস্কারের জন্য ১৪ লাখ টাকা সরকারি বরাদ্দ এলেও সংস্কারের নামে এক লাখ টাকা ব্যায় করে সরকারি বরাদ্দের বাকি টাকা আত্মসাৎ করে চেয়ানরম্যান বাবুল মৃধা।”
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, “অমি নিজের ওয়ারিশ সার্টিফিটেক আনতে গেলে আমার কাছ থেকে দুইশ টাকা নিয়ে কোন রাশিদ দেননি চেয়ারম্যান। এভাবে মৃত্যু সনদ, ওয়ারিশ সনদ, ট্রেড লাইসেন্স, জন্ম নিবন্ধন সব ধরনের নাগরিক সেবা খাতে সরকারি ধার্য্যকৃত আর্থের চেয়ে বেশি টাকা নিতেন । যা ইউনিয়ন পরিষদের ব্যাঙক হিসাবে জমা না দিয়ে নিজে আত্মসাৎ করেছেন। টাকা নেয়ার পরেও নাগরিক সুবিধা নিতে আসা ইউনিয়নেনর প্রায় সকল নাগরিকের সাথেই তিনি অসৌজন্যমূলক আরচণ করেন। বাবুল মৃধা ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে দপদপিয়া ইউনিয়নে টাকা ছাড়া মেলে না বয়স্কভাতা, বিধবাভাতা, ভিজিডি কার্ড। ”
তিনি আরও বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের নিয়মিত সভা না করে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে সদস্যদের ভয়-ভীদি প্রদর্শণ করে রেজ্যুলেশন খাতায় স্বাক্ষর নিতেন চেয়াম্যান। এছাড়া নতুন ব্রিজ বা কালভার্টা নির্মানের কথা বলে এলাকার অনেক আয়রণ ব্রিজের মালামাল রাতে আধারে বিক্রি করে দিয়েছেন তিনি। ইউপি সদস্যরা এ বিষয়ে জানতে চাইলে তাদেরকে গালাগাল ও হুমকি দিতেন বাবুল মৃধা।” তার বাড়ি যাওয়ার রাস্তাসহ কয়েকটি রাস্তা উন্নয়নের নামে একাধিকবার বরাদ্দ এনে কাজ না করে সম্পূর্ণ আর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়।
নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, তারা আমাদের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে, আমরা তা গ্রহণ করেছি। এ বিষয়ে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।