
পটুয়াখালীর বাউফলের চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের ডিয়ারা কচুয়া গ্রামে জমি দখল-বিবাদের জেরে প্রায় চার শতাধিক পরিবেশবান্ধব গাছ কেটে নিয়েছে প্রতিপক্ষ। গাছগুলোর বাজারমূল্য প্রায় ৮ লাখ টাকা বলে জানিয়েছেন স্থানীয় গাছ ব্যবসায়ীরা।
ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই গ্রামের ১৯১, ২০১১, ২১২, ৩৫৩ ও ৩৬৯ নম্বর খতিয়ানের ১৯৭, ১৯৮, ২০২, ২০৩ ও ২০৪ দাগভুক্ত ২১ একর ৩৬ শতাংশ জমির মালিক ছিলেন আবুল হাশেম মাতুব্বর, আবুল কাশেম মাতুব্বর ও আবদুল হাকিম মাতুব্বর। এর মধ্যে আবুল হাশেমের ওয়ারিশরা তাঁদের সম্পত্তি বিক্রি করে দিয়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে, আবুল হাশেমের মেজ ছেলে শাকিব হাসান ওরফে সিজার মাতুব্বর (৩৩) সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে অপর দুই ওয়ারিশ পরিবারের মালিকানাধীন ১৪ একর ২৪ শতাংশ জমি দখল করে চাষাবাদ শুরু করেন। শনিবার ও সোমবার দুই দফায় তাঁদের বাড়ির ৬২ শতাংশ জমিতে রোপণকৃত মেহগনি, চাম্বুল, রেইনট্রি ও অন্যান্য প্রজাতির প্রায় ৪০০ গাছ কেটে নিয়ে যান তিনি।
সরেজমিনে দেখা যায়, কাটা গাছের একটি বড় অংশ ট্রলারে বোঝাই করা হয়েছে। কিছু গাছ সড়কে স্তূপ করে রাখা হয়েছে। স্থানীয় গাছ ব্যবসায়ী ইব্রাহিম জানান, কাটা গাছগুলোর আনুমানিক মূল্য ৮ লাখ টাকা। গাছ কাটায় নিয়োজিত শ্রমিক মো. রিয়াজ সরদার (২৫) বলেন, শাকিব হাসান সিজার মাতুব্বরের নির্দেশে আমরা আটজন শ্রমিক পেট্রোল চালিত করাত দিয়ে এসব গাছ কেটেছি।
এদিকে গ্রাম পুলিশ মো. হাবিবুর রহমান ও দফাদার মো. কোভিদ হোসেন জানান, বাউফল থানার ওসি’র নির্দেশে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে গাছ কাটা বন্ধ রাখতে বলেন, কিন্তু প্রতিপক্ষ তা উপেক্ষা করে পরদিনও গাছ কেটে নেয়।
অভিযুক্ত শাকিব হাসান সিজার মাতুব্বর বলেন, “গাছগুলো আমার পৈতৃক জমির উপর রোপণ করা হয়েছিল। তাই ওয়ারিশ হিসেবে আমি নিজেই গাছ কেটেছি। পুলিশ বাধা দিলেও তাতে কোনো লাভ হবে না।”
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আকতারুজ্জামান সরকার বলেন, অভিযোগ পেয়ে স্থানীয় দফাদার ও গ্রাম পুলিশ পাঠিয়ে গাছ কাটা বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জমি নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত গাছ কেউ নিতে পারবে না। যদি কেউ নির্দেশ অমান্য করে, তাহলে আদালতের মাধ্যমে প্রতিকার নিতে হবে।
এ ঘটনায় এখনো কোনো কার্যকর প্রতিকার না পাওয়ায় হতাশ ভূক্তভোগী পরিবার। স্থানীয়দের মতে, এভাবে গাছ কাটার ঘটনায় একদিকে পরিবেশ হুমকির মুখে পড়ছে, অন্যদিকে আইনের প্রতি মানুষের আস্থাও দুর্বল হচ্ছে।