০৭:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাঙ্গুনিয়ায় ছাত্রী নিপীড়নে অভিযুক্ত শিক্ষক বদিউল বরখাস্ত

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার কোদালা ইউনিয়নের সন্দ্বীপপাড়া রহম আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সেই সহকারী শিক্ষক বদিউল আলমকে ছাত্রী নিপীড়নের দায়ে সাময়িকভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এসএম আব্দুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
অভিযোগের বিষয়টি সত্যতা নিশ্চিত করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বেলাল উদ্দিন।
তিনি জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর অভিযুক্ত শিক্ষক বদিউল আলমকে স্কুলের পাঠদান থেকে সাময়িকভাবে বিরত রাখা হয়েছিল। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি, স্থানীয় অভিভাবক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে অভিযুক্ত শিক্ষক বদিউল আলম নিজের দোষ স্বীকার করেন। পরে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দাবি, অভিযুক্ত শিক্ষকের দ্রুত অপসারণ ও শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তারা বলেন, ‘ স্কুলে আমাদের সন্তানদের নিরাপত্তা চাই। যারা শিশুদের সাথে এমন জঘন্য অপরাধ করে, তাদের কোনো ছাড় দেয়া যাবে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যদি নিরাপত্তা না থাকে, তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কোথায় যাবে ?’
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ হিন্দোল বারী জানান, গতকাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি জেনে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে বিস্তারিত জেনেছি।  এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষককে (১৪ জুলাই) বিকাল ৫টায় লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আমি আবেদন করেছি। ব্যক্তিগত ভাবে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিস্তারিত জানায়। এমন আচরণের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা বরাবরই কঠোর। স্থানীয়ভাবে বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এমন সংবেদনশীল ধামাচাপা অন্যায়।
তিনি আরো জানান, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পেয়ে আজ মঙ্গলবার (১৫জুলাই) তাকে সাময়িক বরখস্ত করেছে। তদন্তের পর দোষী সাব্যাস্ত হলে চুড়ান্তভাবে বহিষ্কার করা হবে।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর পরিবার ও বিদ্যালয় সূত্র জানায়, সন্দীপপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বদিউল আলম বিভিন্ন সময় স্কুলের ছাত্রীদের যৌন নিপীড়ন করে আসছিল। লোকলজ্জায় বিষয়টি গোপন থেকে যায়। চলতি মাসের ১ জুলাই ক্লাস চলাকালীন সময়ে অভিযুক্ত শিক্ষক ওই ছাত্রীকে স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। ভিকটিম ভয়ে তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি প্রকাশ না করলেও বাড়ীতে এসে বিষয়টি তাঁর মাকে জানান। পরদিন (২ জুলাই) রবিবার সকালে এ ঘটনার বিচার চেয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বেলাল উদ্দিনের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন ওই শিক্ষার্থীর মা।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা বলেন, ‘আমার মেয়ের সাথে ক্লাস চলাকালীন যৌন নিপীড়ন করেছে শিক্ষক বদিউল আলম। এর আগেও সে একাধিকবার এমনটাই করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত শিক্ষক বদিউল আলম গত ১ জুলাই বিদ্যালয়ের এক চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে বাংলা পাঠদানকালে যৌন হয়রানি করেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শুরুতে তাকে শুধু পাঠদান থেকে বিরত রাখা হয়। তবে যথাযথ শাস্তিমূলক পদক্ষেপ না নেওয়ায় অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। স্থানীয়ভাবে চেষ্টা করেছিল ধামাচাপা দেয়ার।
চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে। পরবর্তী প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী নেওয়া হবে।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে যুবদলের বিক্ষোভ

রাঙ্গুনিয়ায় ছাত্রী নিপীড়নে অভিযুক্ত শিক্ষক বদিউল বরখাস্ত

পোস্ট হয়েছেঃ ০১:০৬:৫৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার কোদালা ইউনিয়নের সন্দ্বীপপাড়া রহম আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সেই সহকারী শিক্ষক বদিউল আলমকে ছাত্রী নিপীড়নের দায়ে সাময়িকভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এসএম আব্দুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
অভিযোগের বিষয়টি সত্যতা নিশ্চিত করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বেলাল উদ্দিন।
তিনি জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর অভিযুক্ত শিক্ষক বদিউল আলমকে স্কুলের পাঠদান থেকে সাময়িকভাবে বিরত রাখা হয়েছিল। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি, স্থানীয় অভিভাবক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে অভিযুক্ত শিক্ষক বদিউল আলম নিজের দোষ স্বীকার করেন। পরে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দাবি, অভিযুক্ত শিক্ষকের দ্রুত অপসারণ ও শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তারা বলেন, ‘ স্কুলে আমাদের সন্তানদের নিরাপত্তা চাই। যারা শিশুদের সাথে এমন জঘন্য অপরাধ করে, তাদের কোনো ছাড় দেয়া যাবে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যদি নিরাপত্তা না থাকে, তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কোথায় যাবে ?’
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ হিন্দোল বারী জানান, গতকাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি জেনে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে বিস্তারিত জেনেছি।  এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষককে (১৪ জুলাই) বিকাল ৫টায় লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আমি আবেদন করেছি। ব্যক্তিগত ভাবে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিস্তারিত জানায়। এমন আচরণের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা বরাবরই কঠোর। স্থানীয়ভাবে বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এমন সংবেদনশীল ধামাচাপা অন্যায়।
তিনি আরো জানান, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পেয়ে আজ মঙ্গলবার (১৫জুলাই) তাকে সাময়িক বরখস্ত করেছে। তদন্তের পর দোষী সাব্যাস্ত হলে চুড়ান্তভাবে বহিষ্কার করা হবে।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর পরিবার ও বিদ্যালয় সূত্র জানায়, সন্দীপপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বদিউল আলম বিভিন্ন সময় স্কুলের ছাত্রীদের যৌন নিপীড়ন করে আসছিল। লোকলজ্জায় বিষয়টি গোপন থেকে যায়। চলতি মাসের ১ জুলাই ক্লাস চলাকালীন সময়ে অভিযুক্ত শিক্ষক ওই ছাত্রীকে স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। ভিকটিম ভয়ে তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি প্রকাশ না করলেও বাড়ীতে এসে বিষয়টি তাঁর মাকে জানান। পরদিন (২ জুলাই) রবিবার সকালে এ ঘটনার বিচার চেয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বেলাল উদ্দিনের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন ওই শিক্ষার্থীর মা।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা বলেন, ‘আমার মেয়ের সাথে ক্লাস চলাকালীন যৌন নিপীড়ন করেছে শিক্ষক বদিউল আলম। এর আগেও সে একাধিকবার এমনটাই করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত শিক্ষক বদিউল আলম গত ১ জুলাই বিদ্যালয়ের এক চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে বাংলা পাঠদানকালে যৌন হয়রানি করেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শুরুতে তাকে শুধু পাঠদান থেকে বিরত রাখা হয়। তবে যথাযথ শাস্তিমূলক পদক্ষেপ না নেওয়ায় অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। স্থানীয়ভাবে চেষ্টা করেছিল ধামাচাপা দেয়ার।
চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে। পরবর্তী প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী নেওয়া হবে।