
২৮ জুলাই ২০২৫ (সোমবার) — আজ ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক টাউনহল চত্বরে অনুষ্ঠিত হলো জুলাই অভ্যুতান স্মরণে আয়োজিত এক গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলন। জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে আয়োজিত এই সম্মেলনে সকাল থেকেই নানা উপজেলার জনগণের ভিড়ে মুখর হয়ে ওঠে পুরো টাউনহল এলাকা। বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে সভাস্থল কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে।
নান্দাইল উপজেলা থেকে NCP-এর নেতৃবৃন্দ ও কর্মীরা আশেকিন আলম রাজনের নেতৃত্বে শতশত মানুষের একটি বিশাল মিছিল সহকারে সম্মেলনে যোগ দেন। তাদের শৃঙ্খলাবদ্ধ উপস্থিতি, দলীয় পতাকা ও উদ্দীপ্ত স্লোগানে সম্মেলনস্থল প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।
সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন জুলাই আন্দোলনের কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। তারা চলমান জাতীয় ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে “জুলাই অভ্যুতান”-এর তাৎপর্য তুলে ধরেন এবং আগামী দিনের করণীয় নিয়ে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করেন।
সম্মেলনে বক্তব্য প্রদান করেন:
নাহিদ ইসলাম,
হাসনাত আবদুল্লাহ,
নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী,
ডাঃ তাসনিম জারা,
আশেকিন আলম রাজন সহ অন্যান্য স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
নেতৃবৃন্দ তাদের বক্তব্যে বলেন, “জুলাই অভ্যুতান কোনো তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া নয়, বরং এটি একটি দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের ফল। এই আন্দোলনই গণতান্ত্রিক মুক্তির পথ দেখাবে।”
তারা আরও বলেন, “দেশের প্রতিটি প্রান্তে জনতার জাগরণ এবং রাজনৈতিক পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা এখন স্পষ্ট। জুলাই আন্দোলন সেই আকাঙ্ক্ষার বাস্তব রূপ।”
উল্লেখযোগ্য যে, গত ২৬ জুলাই নান্দাইলে একটি পথসভায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের বক্তব্য দেওয়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে তারা যাত্রাবিরতি না দেওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা প্রতিক্রিয়া শুরু হয়। এতে নান্দাইলের সাধারণ জনগণ এবং এনসিপির স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি হয়।
উক্ত পরিস্থিতি বিবেচনায় সমাবেশে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ দুঃখ প্রকাশ করে নান্দাইলের সর্বসাধারণ ও এনসিপির নেতা-কর্মীদের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। সেইসাথে আগামী এক মাসের মধ্যে নান্দাইলে একটি পূর্ণাঙ্গ সম্মেলন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দেন তাঁরা।
এ প্রতিশ্রুতি নান্দাইলের রাজনৈতিক কর্মীদের মাঝে নতুন আশার সঞ্চার করেছে।
সম্মেলন শেষে এক বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। সংগীত, কবিতা এবং আবৃত্তিতে উঠে আসে দেশের ইতিহাস, সংগ্রাম ও জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা।
এই সম্মেলন শুধু রাজনৈতিক বক্তব্য নয়, বরং ছিল একটি গণজাগরণের প্রেরণাদায়ী মুহূর্ত — যেখানে নেতৃত্ব, সংগঠন ও জনগণের প্রত্যাশা এক সুতোয় গাঁথা হয়ে উঠেছে।