
‘আজকের গাছ, আগামী প্রজন্মের ছায়া’—এই স্লোগানকে সামনে রেখে প্রথম আলো বন্ধুসভা সাতক্ষীরা আয়োজন করেছে বার্ষিক বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি।
বৃষ্টিভেজা এক মনোরম বিকেল। আকাশে মেঘের আনাগোনা থাকলেও থেমে থাকেনি পরিবেশপ্রেমী তরুণদের পদচারণা। হাতে চারাগাছ, হৃদয়ে সবুজের স্বপ্ন—শুক্রবার (১ আগস্ট) বিকেল ৪টায় সাতক্ষীরা মিশন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয় এই কর্মসূচি।
পরিবেশ সুরক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে আয়োজন করা হয় এ কার্যক্রম। প্রথম পর্যায়ে বিদ্যালয় চত্বরে ফলজ, বনজ ও ঔষধি গাছের চারা রোপণ করা হয়। এরপর স্থানীয় সরকারি কবরস্থান ও বৃদ্ধাশ্রম চত্বরে গাছ রোপণ করেন বন্ধুসভার সদস্যরা। পুরো কার্যক্রমে মোট ১৮০টি চারা রোপণ করা হয়।
বন্ধুসভার সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় কুমার বিশ্বাস বলেন, “প্রতিবছরের মতো এবারও আমরা বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি নিয়েছি। আমরা বিশ্বাস করি, এই গাছগুলো বড় হলে তা পরিবেশ রক্ষায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।” তিনি আরও জানান, শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে গাছ লাগানো চলমান রয়েছে এবং আগামীকাল আরও দুই শতাধিক চারা রোপণের পরিকল্পনা রয়েছে।
সাধারণ সম্পাদক মো. আবু তাহের বিল্যাহ বলেন, “গাছ লাগানো শুধুই একটি সামাজিক দায় নয়, এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রতি আমাদের দায়িত্ব। আমরা চাই সাতক্ষীরা হোক সবুজে ঘেরা, পরিচ্ছন্ন ও প্রাণবন্ত।”
সাবেক সহ-সভাপতি রাহাতুল ইসলাম বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব রোধে বৃক্ষরোপণের বিকল্প নেই। এটি আমাদের ভবিষ্যৎ পৃথিবীকে রক্ষা করার এক কার্যকর উপায়।” তিনি আরও জানান, প্রতিটি চারার যত্ন ও পরিচর্যার জন্য বন্ধুসভার সদস্যদের মধ্যে দায়িত্ব বণ্টন করা হয়েছে।
কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন— বন্ধুসভার সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় কুমার বিশ্বাস, সহ-সভাপতি রুহুল আমিন ময়না, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোকাররাম বিল্লাহ ইমন, দপ্তর সম্পাদক নাঈমুর রহমান নাঈম, সাবেক সভাপতি মরিয়ম কেয়া ও রাশেদুল ইসলাম, সাবেক সহ-সভাপতি রাহাতুল ইসলাম, সদস্য রিধিশা আজাদ নীধি, প্রশিক্ষণ সম্পাদক হৃদয় মণ্ডল, সদস্য ইফতে জামিল, ইমতে জামিল, সিফাত হোসেন, জাহিদুল ইসলাম, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এবং বিদ্যালয়ের প্রতিনিধি মো. ইব্রাহীম সরদার।
আবহাওয়ার প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বন্ধুসভার তরুণ সদস্যরা উৎসাহ-উদ্দীপনায় অংশগ্রহণ করেন কর্মসূচিতে। তাঁদের হাতের চারা আর মনের অঙ্গীকার যেন একসঙ্গে উচ্চারণ করে—“সবুজে ঢেকে দেব নিজের শহর”।
এই মহতী উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের মতে, এ ধরনের কর্মসূচি সমাজে সবুজায়নের চেতনা ছড়িয়ে দেবে, গাছ লাগাতে উৎসাহিত করবে আরও অনেককে এবং পরিবেশ সুরক্ষায় গড়বে ইতিবাচক পরিবর্তন।