০২:৩৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৪ অগাস্ট ২০২৫, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মহেশপুরের রানার মাঠে জমি ভিটে ছাড়া কিছুই নেই, তবুও তাকে বানানো হচ্ছে অপরাধী

একজন মসজিদের ইমাম, সমাজসেবক ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক আহবায়ক। নাম হামিদুর রহমান রানা। বসবাস করেন ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার বলিভদ্রপুর গ্রামে। পরিবারে অর্থনৈতিক সংকট, মাথার উপর শুধু একটি ভিটে বাড়ি। তবুও তাকে অপরাধী বানাতে চায় একটি বিশেষ মহল। সম্প্রতি গত মাসের ২৯ জুলাই জাতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠ,বাংলাদেশ প্রতিদিন এ রানার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সীমান্ত অপরাধের অভিযোগ তুলে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। অথচ এসব অভিযোগের পক্ষে কোনো তথ্য-প্রমাণ, স্বাক্ষ্য, বা ভুক্তভোগীর বক্তব্য তুলে ধরা হয়নি। প্রতিবেদনে এমন সব দাবি করা হয়েছে যা সরেজমিন অনুসন্ধানে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয়েছে।
জানা গেছে, রানা প্রায় ১২ বছর ধরে মহেশপুর উপজেলার স্থানীয় রামচন্দ্রপুর পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদে মাসিক কিছু টাকার বিনিময়ে ইমামতির দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর বাবা একজন দিনমজুর এবং রাতের বেলা পুকুর পাহারার কাজ করেন। ভাইয়েরা কেউ রাজমিস্ত্রি, কেউ দর্জির কাজ করেন। সংসার চলে অভাব-অনটনের মধ্যেই।
রানা প্রায় ২০২০ সাল থেকে মোটরসাইকেলে চড়েন।
বেশ কিছু দিন পূর্বে তিনি তার বাড়ির গরু এবং ছাগল আর পূর্বের মোটরসাইকেল বিক্রি করে কিছু টাকা খালিশপুর এক মোটরসাইকেল শোরুমে দিয়ে বাকিতে একটা মোটরসাইকেল কিনে। যা সেই শোরুম এখনো তার কাছে ৮২ হাজার টাকা পাবে। তার হাতে ভাঙা মোবাইল ফোন যার দাম হয়তো ১২/১৪ হাজার টাকা হবে।
এদিকে স্থানীয় বাসিন্দা হাশেম,শাকিল বলেন, রানা খুবই ভালো ছেলে। মসজিদে নামাজ পড়ায়, এলাকায় কারও ক্ষতি করে না। ওর নামে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে চরিত্রহননের চেষ্টা চলছে।
একই গ্রামের ফুলতি, ফাতেমা বলেন, রানা শুধু মানুষের উপকারই করে, তাই কিছু লোকের সহ্য হচ্ছে না।
মসজিদের সভাপতি নজরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি ইনতাজ আলী জানান, রানা অত্যন্ত ধর্মভীরু, সৎ ও সাদাসিধে জীবনযাপন করেন। তাঁর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তার পিতা দিনে পরের জমিতে কাজ করে আর রাতে পরের এক পুকুর পাহারা দেয়। তাদের ভিটে বাড়ি ছাড়া মাঠে কোন জমি নেই।
এবিষয়ে মহেশপুর উপজেলার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক আহবায়ক হামিদুর রহমান রানা বলেন,আমাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হেয় করা হচ্ছে। কিছু প্রভাবশালী মহল আমার সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ততা মেনে নিতে পারছে না। আমি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
এবিষয়ে মহেশপুর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সোহেল রানা বলেন, আমি কালের কণ্ঠে কোনো বক্তব্য দিইনি। তারা যা ছেপেছে, তা মিথ্যা ও মনগড়া। এদিকে সুশীল সমাজ বলছে, সংগঠনের রাজনীতিতে যুক্ত থাকলেই কেউ অপরাধী হয় না। সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ছাড়া কাউকে জাতীয় গণমাধ্যমে এভাবে হেয় করা অনৈতিক ও সাংবাদিকতার নীতিমালার পরিপন্থী।
তারা আরও বলছেন কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি একটি অসহায়, ধর্মপ্রাণ, সাধারণ পরিবারের সন্তানের বিরুদ্ধে একপাক্ষিক, প্রমাণহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণা। রানার মতো একজন ইমামকে অপরাধী বানানোর চেষ্টা, শুধু ব্যক্তি নয়, সমাজ ও সাংবাদিকতা নীতির বিরুদ্ধেও এক ভয়াবহ আঘাত। এদিকে একটি মহলের ইশারায় জুলাই আন্দোলন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের বিতর্কিত করার অপচেষ্টা চলছে, যা উদ্বেগজনক। আমরা এই ষড়যন্ত্রের তীব্র নিন্দা জানাই, এবং প্রশাসনকে এই বিষয় গুলো সঠিক ভাবে তদন্ত করারও পরামর্শ দেন অনেকে।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

রাণীনগর বিএনপির কর্মী সমাবশ অনুষ্ঠিত

মহেশপুরের রানার মাঠে জমি ভিটে ছাড়া কিছুই নেই, তবুও তাকে বানানো হচ্ছে অপরাধী

পোস্ট হয়েছেঃ ০৩:৫৯:২৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫
একজন মসজিদের ইমাম, সমাজসেবক ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক আহবায়ক। নাম হামিদুর রহমান রানা। বসবাস করেন ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার বলিভদ্রপুর গ্রামে। পরিবারে অর্থনৈতিক সংকট, মাথার উপর শুধু একটি ভিটে বাড়ি। তবুও তাকে অপরাধী বানাতে চায় একটি বিশেষ মহল। সম্প্রতি গত মাসের ২৯ জুলাই জাতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠ,বাংলাদেশ প্রতিদিন এ রানার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সীমান্ত অপরাধের অভিযোগ তুলে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। অথচ এসব অভিযোগের পক্ষে কোনো তথ্য-প্রমাণ, স্বাক্ষ্য, বা ভুক্তভোগীর বক্তব্য তুলে ধরা হয়নি। প্রতিবেদনে এমন সব দাবি করা হয়েছে যা সরেজমিন অনুসন্ধানে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয়েছে।
জানা গেছে, রানা প্রায় ১২ বছর ধরে মহেশপুর উপজেলার স্থানীয় রামচন্দ্রপুর পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদে মাসিক কিছু টাকার বিনিময়ে ইমামতির দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর বাবা একজন দিনমজুর এবং রাতের বেলা পুকুর পাহারার কাজ করেন। ভাইয়েরা কেউ রাজমিস্ত্রি, কেউ দর্জির কাজ করেন। সংসার চলে অভাব-অনটনের মধ্যেই।
রানা প্রায় ২০২০ সাল থেকে মোটরসাইকেলে চড়েন।
বেশ কিছু দিন পূর্বে তিনি তার বাড়ির গরু এবং ছাগল আর পূর্বের মোটরসাইকেল বিক্রি করে কিছু টাকা খালিশপুর এক মোটরসাইকেল শোরুমে দিয়ে বাকিতে একটা মোটরসাইকেল কিনে। যা সেই শোরুম এখনো তার কাছে ৮২ হাজার টাকা পাবে। তার হাতে ভাঙা মোবাইল ফোন যার দাম হয়তো ১২/১৪ হাজার টাকা হবে।
এদিকে স্থানীয় বাসিন্দা হাশেম,শাকিল বলেন, রানা খুবই ভালো ছেলে। মসজিদে নামাজ পড়ায়, এলাকায় কারও ক্ষতি করে না। ওর নামে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে চরিত্রহননের চেষ্টা চলছে।
একই গ্রামের ফুলতি, ফাতেমা বলেন, রানা শুধু মানুষের উপকারই করে, তাই কিছু লোকের সহ্য হচ্ছে না।
মসজিদের সভাপতি নজরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি ইনতাজ আলী জানান, রানা অত্যন্ত ধর্মভীরু, সৎ ও সাদাসিধে জীবনযাপন করেন। তাঁর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তার পিতা দিনে পরের জমিতে কাজ করে আর রাতে পরের এক পুকুর পাহারা দেয়। তাদের ভিটে বাড়ি ছাড়া মাঠে কোন জমি নেই।
এবিষয়ে মহেশপুর উপজেলার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক আহবায়ক হামিদুর রহমান রানা বলেন,আমাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হেয় করা হচ্ছে। কিছু প্রভাবশালী মহল আমার সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ততা মেনে নিতে পারছে না। আমি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
এবিষয়ে মহেশপুর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সোহেল রানা বলেন, আমি কালের কণ্ঠে কোনো বক্তব্য দিইনি। তারা যা ছেপেছে, তা মিথ্যা ও মনগড়া। এদিকে সুশীল সমাজ বলছে, সংগঠনের রাজনীতিতে যুক্ত থাকলেই কেউ অপরাধী হয় না। সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ছাড়া কাউকে জাতীয় গণমাধ্যমে এভাবে হেয় করা অনৈতিক ও সাংবাদিকতার নীতিমালার পরিপন্থী।
তারা আরও বলছেন কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি একটি অসহায়, ধর্মপ্রাণ, সাধারণ পরিবারের সন্তানের বিরুদ্ধে একপাক্ষিক, প্রমাণহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণা। রানার মতো একজন ইমামকে অপরাধী বানানোর চেষ্টা, শুধু ব্যক্তি নয়, সমাজ ও সাংবাদিকতা নীতির বিরুদ্ধেও এক ভয়াবহ আঘাত। এদিকে একটি মহলের ইশারায় জুলাই আন্দোলন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের বিতর্কিত করার অপচেষ্টা চলছে, যা উদ্বেগজনক। আমরা এই ষড়যন্ত্রের তীব্র নিন্দা জানাই, এবং প্রশাসনকে এই বিষয় গুলো সঠিক ভাবে তদন্ত করারও পরামর্শ দেন অনেকে।