০১:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৪ অগাস্ট ২০২৫, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মতলব উত্তরে জলাবদ্ধতা: অবৈধ ভরাটে ডুবে গেছে রাস্তা ও ফসলভূমি, দুর্ভোগে হাজারো মানুষ

মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্প এলাকার অন্তর্গত মতলব উত্তর উপজেলার ফতেপুর পূর্ব ইউনিয়নের এনায়েত নগর মৌজার ৮ নম্বর ওয়ার্ড সিপাই কান্দি ও চরহরিগোপ এলাকায় পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সৃষ্টি হয়েছে চরম জলাবদ্ধতা। এতে গ্রামীণ জনগুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক পানিতে তলিয়ে গিয়ে দুর্ভোগে পড়েছে হাজারো মানুষ।
সরজমিনে দেখা গেছে, মতলব খেয়া ঘাট থেকে বেড়ীবাঁধের ভিতর দিয়ে চরহরিগোপ হয়ে সিপাই কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘেঁষে মরহুম বাচ্চু মিয়ার বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়া ১৬ ফুট প্রশস্ত এ সড়কের কিছু অংশ হেরিং বন্ড হলেও বেশিরভাগ অংশ এখনো কাঁচা। রাস্তার দুপাশে রয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়, কবরস্থান, দুটি মাদ্রাসা, দুটি মসজিদ, ব্র্যাক ও আচঁল স্কুল, তিনটি মন্দির। শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম এই সড়ক।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে বাইশপুর গ্রামের মো. হাবিব নামের এক ব্যক্তি রাস্তার নিচের বড় ড্রেনেজ পাইপের উপর অবৈধভাবে বালু ফেলে জমি ভরাট করে দেন। ফলে পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে রাস্তাসহ আশপাশের বাড়িঘর, পুকুর ও জমি তলিয়ে যায়। শিশু, শিক্ষার্থী ও বৃদ্ধদের চলাচল হয়ে পড়েছে দুঃসাধ্য। দূষিত পানিতে চলাচলের কারণে দেখা দিয়েছে পানি বাহিত রোগের আশঙ্কা।
রবিবার  (৩ আগস্ট) বিকেলে এ সমস্যার সরেজমিন পরিদর্শনে যান, মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফয়সাল মোহাম্মদ আলী, ফতেপুর পূর্ব ইউপি’র প্যানেল চেয়ারম্যান একেএম গোলাম নবী খোকন, গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং  তারা এলাকার দুর্দশা প্রত্যক্ষ করেন এবং দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেন।
ঐ এলাকার মো. মোফাজ্জল হোসেন হাজরা, কাজী হেলাল, আব্দুল আজিজ, ইদ্রিস মিজি, হারুন সওয়ার, জহরলাল সূত্রধর, মো. মনির হোসেন বেপারী সহ অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একটি অবৈধ ড্রেজিংয়ের কারণে পুরো একটি গ্রামের মানুষ আজ জলাবদ্ধতায় ভোগছে। আমরা দ্রুত পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা পুনঃস্থাপন এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা দাবি করছি।
জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক দ্রুত মেরামত ও পানি নিষ্কাশনের পথ উন্মুক্ত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ এখন সময়ের দাবি।
সরেজমিন পরিদর্শন শেষে মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফয়সাল মোহাম্মদ আলী বলেন, মসিপাই কান্দি ও চরহরিগোপ এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে কৃষিজমিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। বিশেষ করে চলতি মৌসুমে আমন ধানের রোপন ও সবজি খাত মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানি দ্রুত অপসারণ না হলে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে। কৃষকদের রক্ষা করতে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)  মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, স্থানীয়দের অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে নেওয়া হয়েছে। পানি নিষ্কাশনের পথ পুনরুদ্ধার ও দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনিক উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

কুমিল্লায় পা থেকে হাতে আঙুল প্রতিস্থাপন, ‘সফল’ ৭ ঘণ্টার জটিল অস্ত্রোপচার

মতলব উত্তরে জলাবদ্ধতা: অবৈধ ভরাটে ডুবে গেছে রাস্তা ও ফসলভূমি, দুর্ভোগে হাজারো মানুষ

পোস্ট হয়েছেঃ ০৪:০০:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৪ অগাস্ট ২০২৫
মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্প এলাকার অন্তর্গত মতলব উত্তর উপজেলার ফতেপুর পূর্ব ইউনিয়নের এনায়েত নগর মৌজার ৮ নম্বর ওয়ার্ড সিপাই কান্দি ও চরহরিগোপ এলাকায় পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সৃষ্টি হয়েছে চরম জলাবদ্ধতা। এতে গ্রামীণ জনগুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক পানিতে তলিয়ে গিয়ে দুর্ভোগে পড়েছে হাজারো মানুষ।
সরজমিনে দেখা গেছে, মতলব খেয়া ঘাট থেকে বেড়ীবাঁধের ভিতর দিয়ে চরহরিগোপ হয়ে সিপাই কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘেঁষে মরহুম বাচ্চু মিয়ার বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়া ১৬ ফুট প্রশস্ত এ সড়কের কিছু অংশ হেরিং বন্ড হলেও বেশিরভাগ অংশ এখনো কাঁচা। রাস্তার দুপাশে রয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়, কবরস্থান, দুটি মাদ্রাসা, দুটি মসজিদ, ব্র্যাক ও আচঁল স্কুল, তিনটি মন্দির। শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম এই সড়ক।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে বাইশপুর গ্রামের মো. হাবিব নামের এক ব্যক্তি রাস্তার নিচের বড় ড্রেনেজ পাইপের উপর অবৈধভাবে বালু ফেলে জমি ভরাট করে দেন। ফলে পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে রাস্তাসহ আশপাশের বাড়িঘর, পুকুর ও জমি তলিয়ে যায়। শিশু, শিক্ষার্থী ও বৃদ্ধদের চলাচল হয়ে পড়েছে দুঃসাধ্য। দূষিত পানিতে চলাচলের কারণে দেখা দিয়েছে পানি বাহিত রোগের আশঙ্কা।
রবিবার  (৩ আগস্ট) বিকেলে এ সমস্যার সরেজমিন পরিদর্শনে যান, মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফয়সাল মোহাম্মদ আলী, ফতেপুর পূর্ব ইউপি’র প্যানেল চেয়ারম্যান একেএম গোলাম নবী খোকন, গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং  তারা এলাকার দুর্দশা প্রত্যক্ষ করেন এবং দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেন।
ঐ এলাকার মো. মোফাজ্জল হোসেন হাজরা, কাজী হেলাল, আব্দুল আজিজ, ইদ্রিস মিজি, হারুন সওয়ার, জহরলাল সূত্রধর, মো. মনির হোসেন বেপারী সহ অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একটি অবৈধ ড্রেজিংয়ের কারণে পুরো একটি গ্রামের মানুষ আজ জলাবদ্ধতায় ভোগছে। আমরা দ্রুত পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা পুনঃস্থাপন এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা দাবি করছি।
জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক দ্রুত মেরামত ও পানি নিষ্কাশনের পথ উন্মুক্ত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ এখন সময়ের দাবি।
সরেজমিন পরিদর্শন শেষে মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফয়সাল মোহাম্মদ আলী বলেন, মসিপাই কান্দি ও চরহরিগোপ এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে কৃষিজমিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। বিশেষ করে চলতি মৌসুমে আমন ধানের রোপন ও সবজি খাত মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানি দ্রুত অপসারণ না হলে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে। কৃষকদের রক্ষা করতে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)  মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, স্থানীয়দের অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে নেওয়া হয়েছে। পানি নিষ্কাশনের পথ পুনরুদ্ধার ও দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনিক উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।