
বাগেরহাটের রামপালে ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে সাংবাদিক সহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। শনিবার সন্ধ্যা থেকে রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কয়েক দফায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় বাজারে অন্তত ২০টি দোকান ও কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুরে ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় থানায় মামলা কিংবা কাউকে আটকের খবর পাওয়া যায় নাই।স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানাযায়, রামপাল উপজেলার মল্লিকেরবেড় ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলনকে কেন্দ্র করে কয়েক মাস ধরে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা চলে আসছিল। শনিবার (০২ আগস্ট) রাতে ইউনিয়নের বেতবুনিয়া পাকা রাস্তার মাথায় মল্লিকেরবেড় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল আলিমের লোকজন সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শামীম হাসান পলকসহ ১১জনকে মারধর করেন।ওই রাতেই আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে বাগেরহাট ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।তারা আরো বলেন, মারধররের প্রতিবাদ ও হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে রোবরার (০৩ আগস্ট) বিকেলে সভাপতি প্রার্থী সাজারুল ইসলাম সাজু ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শামীম হাসান পলকের লোকজন পুলিশের অনুমতিতে মানববন্ধনের আয়োজন করেন। মানববন্ধনের জন্য জড়ো হলে আব্দুল আলিম হাওলাদারের লোকজন অতর্কিতভাবে সাজারুল ইসলাম সাজু ও তার লোকজনের উপর হামলা চালায়। এতে সভাপতি প্রার্থী সাজারুল ইসলাম সাজুসহ অন্তত ১৫ জন গুরুত্বর আহত হয়। সংঘর্ষ ঠেকাতে পুলিশ উপস্থিত হলেও শেষ পর্যন্ত পুলিশের উপস্থিতিতেই উভয়পক্ষ ভাঙচুর চালিয়ে বাজারের অন্তত ২০টি দোকান সহ কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর করে।বিকেল পাঁচটার দিকে সন্ন্যাসী বাজারে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। উভয় পক্ষকে পাল্টাপাল্টি ইট ছুড়তে দেখা যায়। এ ঘটনায় দৈনিক কালের কন্ঠের জেলা প্রতিনিধি মামুন আহমেদ, নাগরিক টিভির মোহাম্মদ তারিক এবং দৈনিক দিনকালের জেলা প্রতিনিধি মোঃ লিটন এবং সভাপতি প্রার্থী সাজারুল ইসলাম সাজু গুরুতর আহত হয়। বাজারের পাশে থাকা দুটি ভবনের ছাদ থেকে সাজুর লোকদের উপর ইট ছোড়েন আব্দুল আলিম হাওলাদারের সমর্থকেরা। অপরদিকে সাজুর সমর্থকেরা ও পাল্টা পাটকেল নিক্ষেপ করে। কিছুক্ষন পরে রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আতিকুর রহমান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।তিনি বলেন, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি পরিস্থিতি শান্ত রাখতে। উভয়পক্ষ ইটপাটকেল ছুড়েছে। কয়েকজন আহত হয়েছেন। আমরা তাদেরকে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়েছি।সাবেক যুবদল নেতা জাহিদুল ইসলাম বলেন, সভাপতি প্রার্থী সাজারুল ইসলাম সাজু ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শামীম হাসান পলকের বিপুল জনপ্রিয়তা দেখে তাদের প্রতিদ্বন্দী সভাপতি প্রার্থী নিজেদের ভরাডুবি ভেবে নির্বাচন বানচাল করার জন্য সাজু পলক সমর্থকদের উপর হামলা করে। তাদের হামলায় অসংখ্য নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। সাবেক ছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান মিঠু ও আওয়ামী লীগ নেতা মজনুর নেতৃত্বে এই হামলা হয়।
মল্লিকেরবের ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, পুলিশ আসছিল রামপাল থানা থেকে। পুলিশের সামনেই আব্দুল আলিমের লোকজন অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে আমাদের উপর হামলা করেছে।সংঘর্ষে আহত ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি প্রার্থী সাজারুল ইসলাম সাজু বলেন, প্রতিদ্বন্দী সভাপতি প্রার্থী আব্দুল আলিম হাওলাদারের লোকজন আমাদের উপর হামলা করে। আমাদের অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। চেয়েছিলাম শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন করতে, কিন্তু তারা অতর্কিতভাবে আমাদের উপর হামলা চালিয়ে আমাদের আহত করেছে।
এবিষয়ে সভাপতি প্রার্থী আব্দুল আলিম হাওলাদার বলেন, সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী পলক ও তার লোকজন আমাদের অফিসে পোস্টার লাগিয়েছে। তারা উদ্দেশ্য মূলকভাবে এই কাজ করেছে। তারা আমার বাড়ি ভাঙচুর করেছে। আমাদের অনেক লোক আহত হয়েছে।রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আতিকুর রহমান, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি পরিস্থিতি শান্ত রাখতে। উভয়পক্ষ ইটপাটকেল ছুড়েছে। কয়েকজন আহত হয়েছেন। আমরা তাদেরকে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়েছি।