০২:৩৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫, ৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সন্দ্বীপে দারুসসালাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের কাজ থেমে আছে, ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান

  • MD Aminul
  • পোস্ট হয়েছেঃ ০১:১৮:৪২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫
  • 19
চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার মগধরা ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ এলাকায় অবস্থিত দারুসসালাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময় পার হলেও এখনো শেষ হয়নি। ফলে জরাজীর্ণ পুরাতন ভবনে পাঠদান চালাতে গিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২১৭ জন। তবে দীর্ঘদিন ধরে নতুন ভবনের নির্মাণকাজ শুরু না হওয়ায় পুরাতন, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের মাত্র ৩টি কক্ষে ভাগ করে ৬টি শ্রেণির পাঠদান চালাতে হচ্ছে। এতে শিক্ষার পরিবেশ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
বিদ্যালয়টি ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠা করেন পূর্ব সন্দ্বীপের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মাস্টার এ ওয়াই এম ছায়েদুল হক। ২০১৩ সালে এটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়।
ভবন নির্মাণে ধীরগতি
বর্তমানে  ৪ তলা বিশিষ্ট স্কুল ভবন নির্মাণের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতায় ১ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। নির্মাণকাজ বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এবং কার্যাদেশ দেওয়া হয় মের্সাস গ্লোব এন্টারপ্রাইজ নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে।
চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি নির্মাণকাজ শুরু হলেও ৩০ জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও এখনও পর্যন্ত ৫০ শতাংশ কাজও সম্পন্ন হয়নি। বর্তমানে স্কুল চত্বরে ফেলে রাখা নির্মাণসামগ্রী ও অসমাপ্ত ভবনের কারণে ছাত্রছাত্রীরা খেলাধুলা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ ও দাবী
বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী জানায়, “নতুন ভবনের কাজ এখনও শেষ হয়নি। আমাদের পুরাতন ভবনে গাদাগাদি করে ক্লাস করতে হয়। প্রচণ্ড গরমে কষ্ট হয়, স্যারেরাও কষ্ট পান।”
অন্য একজন শিক্ষার্থী বলেন, “নতুন ভবনটা হলে ভালোভাবে ক্লাস করতে পারতাম। এখন তো না বসে, না চলাফেরা করে ভালোভাবে পড়াও হয় না।”
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, “আমরা বারবার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে অনুরোধ করছি কাজটি দ্রুত শেষ করতে। এখন যে ভবনে ক্লাস নিচ্ছি সেটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, আর দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েই যাচ্ছে।”
স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার নাজিম উদ্দীন বলেন, “শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে—তা সত্য। আমরা এলজিইডি ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য চাপ দিচ্ছি।”
প্রতিশ্রুতি ও প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্যে পার্থক্য থেকেই যাচ্ছে। আর তার খেসারত দিচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতিতে শিক্ষার পরিবেশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, যা অনতিবিলম্বে সমাধান প্রয়োজন
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

নন্দীগ্রামে মুদি দোকানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানা

সন্দ্বীপে দারুসসালাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের কাজ থেমে আছে, ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান

পোস্ট হয়েছেঃ ০১:১৮:৪২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫
চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার মগধরা ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ এলাকায় অবস্থিত দারুসসালাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময় পার হলেও এখনো শেষ হয়নি। ফলে জরাজীর্ণ পুরাতন ভবনে পাঠদান চালাতে গিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২১৭ জন। তবে দীর্ঘদিন ধরে নতুন ভবনের নির্মাণকাজ শুরু না হওয়ায় পুরাতন, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের মাত্র ৩টি কক্ষে ভাগ করে ৬টি শ্রেণির পাঠদান চালাতে হচ্ছে। এতে শিক্ষার পরিবেশ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
বিদ্যালয়টি ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠা করেন পূর্ব সন্দ্বীপের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মাস্টার এ ওয়াই এম ছায়েদুল হক। ২০১৩ সালে এটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়।
ভবন নির্মাণে ধীরগতি
বর্তমানে  ৪ তলা বিশিষ্ট স্কুল ভবন নির্মাণের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতায় ১ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। নির্মাণকাজ বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এবং কার্যাদেশ দেওয়া হয় মের্সাস গ্লোব এন্টারপ্রাইজ নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে।
চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি নির্মাণকাজ শুরু হলেও ৩০ জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও এখনও পর্যন্ত ৫০ শতাংশ কাজও সম্পন্ন হয়নি। বর্তমানে স্কুল চত্বরে ফেলে রাখা নির্মাণসামগ্রী ও অসমাপ্ত ভবনের কারণে ছাত্রছাত্রীরা খেলাধুলা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ ও দাবী
বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী জানায়, “নতুন ভবনের কাজ এখনও শেষ হয়নি। আমাদের পুরাতন ভবনে গাদাগাদি করে ক্লাস করতে হয়। প্রচণ্ড গরমে কষ্ট হয়, স্যারেরাও কষ্ট পান।”
অন্য একজন শিক্ষার্থী বলেন, “নতুন ভবনটা হলে ভালোভাবে ক্লাস করতে পারতাম। এখন তো না বসে, না চলাফেরা করে ভালোভাবে পড়াও হয় না।”
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, “আমরা বারবার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে অনুরোধ করছি কাজটি দ্রুত শেষ করতে। এখন যে ভবনে ক্লাস নিচ্ছি সেটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, আর দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েই যাচ্ছে।”
স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার নাজিম উদ্দীন বলেন, “শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে—তা সত্য। আমরা এলজিইডি ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য চাপ দিচ্ছি।”
প্রতিশ্রুতি ও প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্যে পার্থক্য থেকেই যাচ্ছে। আর তার খেসারত দিচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতিতে শিক্ষার পরিবেশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, যা অনতিবিলম্বে সমাধান প্রয়োজন