
জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর পৌরসভার মন্ডলপাড়া এলাকায় পিতা এনামুল হকের বিরুদ্ধে নিজের ১৯ বছর বয়সী মেয়ে লিজাকে দীর্ঘ দুই বছর ধরে গৃহবন্দী করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, প্রতিবেশীরা দাবি করেছেন, মেয়েটির উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনও চালানো হয়েছে।
জানা গেছে, লিজা এসএসসি পাস করা এক মেধাবী ছাত্রী। তার বড় বোন লিমা প্রেম করে পালিয়ে বিয়ে করায় ‘আরেকটি এমন ঘটনা’ এড়াতে পিতা এনামুল কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেন ছোট মেয়ে লিজার ওপর। এরপর থেকেই লিজাকে ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখা হয় ঘরের জানালা-দরজা পর্যন্ত টিন ও কাঠ দিয়ে ঘিরে রাখা হয়, যেন বাইরের জগৎ তার নাগালের বাইরে থাকে।
স্থানীয়রা জানান, লিজাকে শুধু তালাবদ্ধ করেই রাখা হয়নি, বরং তাকে চেতনানাশক ইনজেকশন ও ঘুমের ওষুধও দেওয়া হতো। এমনকি তার মাথার চুল কেটে ন্যাড়া করে রাখা হয়েছিল। মেয়েটি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছে বলেও আশঙ্কা করছেন প্রতিবেশীরা।
সন্ধ্যায় স্থানীয়দের চাপে পিতা এনামুল তালাবদ্ধ দরজা খুলে দিলে দেখা যায়, ঘরের ভেতরে কেবল একটি ছোট ফ্যান আর একটি বাতি জ্বলছে। আসবাবপত্রে এলোমেলোভাবে রাখা৷ পিতা এনামুল বলেন, “মেয়েকে পর্দাশীল করে রাখতেই এমন ব্যবস্থা নিয়েছি। ওকে আমি কখনও নির্যাতন করিনি বা ইনজেকশন দিইনি।”
তবে স্থানীয়রা তার এই বক্তব্য মানতে নারাজ। প্রতিবেশী রিভা আক্তার বলেন, “আমার মেয়ের সঙ্গে লিজার পড়াশোনার সম্পর্ক ছিল। মেধাবী ছাত্রীটি এখন সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন। তাকে কেউ দেখতে বা কথা বলতে পারত না।”
আরেক স্থানীয় জনি বলেন, “বাবার হাতে মেয়েটি নির্যাতনের শিকার। তাকে যেন দ্রুত চিকিৎসা দিয়ে আবার পড়াশোনায় ফিরিয়ে আনা হয়, সেটাই চাই আমরা।”
আক্কেলপুর থানার এসআই গনেশ চন্দ্র জানান, বিশেষ সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, মেয়েটির থাকার মতো ন্যূনতম পরিবেশও নেই। মেয়েকে যেন দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া হয় এবং সামাজিক পরিবেশ নিশ্চিত করা হয়, এমন নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পিতাকে।