
বাগেরহাট-৪ আসন (মোড়েলগঞ্জ ও শরণখোলা উপজেলা নিয়ে গঠিত) আসন্ন নির্বাচনে রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এবং বাগেরহাটের কৃতি সন্তান রেজওয়ানুল হক সবুজ। তিনি শুধু একজন রাজনীতিবিদই নন, মোড়েলগঞ্জ ও শরণখোলাবাসীর কাছে তিনি পরিচিত এক মানবিক ও অসাম্প্রদায়িক মুখ।৫ই আগস্ট ২০২৪ এর ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে রেজওয়ানুল হক সবুজ মোড়েলগঞ্জ ও শরণখোলা উপজেলায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দুর্গাপূজার সময় মন্দিরগুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। তিনি তাদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ স্থাপন করে এলাকায় একজন মানবিক ও অসাম্প্রদায়িক মানুষ হিসেবে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছেন।দীর্ঘ রাজনৈতিক পথচলা ছাত্রজীবন থেকেই রেজওয়ানুল হক সবুজ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয়। ওয়ার্ড পর্যায় থেকে শুরু করে তিতুমীর কলেজের ছাত্র সংসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক ও সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। পরবর্তীতে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সহ-সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন।২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি জরুরি অবস্থা জারির পর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে তিনি দলের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। ২০০৯ সালের নির্বাচনের পর থেকে তিনি ধারাবাহিক আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। বিএনপির ডাকা প্রথম অবরোধে মহাখালী থেকে গ্রেপ্তার হয়ে তিনি দুই মাসের বেশি সময় কারাভোগ করেন। এরপর বনানী থেকে গ্রেপ্তার হয়ে আরও চার মাস এবং ২০১৩ সালের শুরুতে গুলশান থেকে গ্রেপ্তার হয়ে দুই মাসের অধিক সময় কারাগারে ছিলেন। ২০১৩ সালের অক্টোবর মাসে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ডাকে সর্বাত্মক অবরোধে গুলশান মশাল মিছিল থেকে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারের মধ্যেই তাকে মাস্টার্স পরীক্ষা দিতে হয় এবং সেই যাত্রায় তিনি এক বছর জেল খাটেন। ২০টিরও বেশি মিথ্যা মামলায় তাকে সার্বক্ষণিক আদালতে হাজিরা দিতে হয়েছে। পল্টনে দুর্বৃত্তদের ছোঁড়া বোমার আঘাতে তিনি আহত হয়েছেন এবং জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে ফ্যাসিস্টদের করা মিথ্যা মামলার ফরমায়েশি রায়ে ২৮ অক্টোবর ২৪-এ দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন। সর্বশেষ ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলেন।গত ১৭ বছর ধরে আন্দোলনে তিনি বহুবার মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসেছেন। কোনো রক্তচক্ষু তাকে তার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন থেকে থামাতে পারেনি। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শ বুকে ধারণ করে তিনি বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের রাজনীতিতে জড়িত থেকে বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে তার লেখনী ছিল বুলেটের চেয়েও শক্তিশালী।জনগণের সেবক হওয়ার স্বপ্ন বাগেরহাট-৪ আসনে বিএনপি থেকে রেজওয়ানুল হক সবুজ সহ নিজ দল ও অন্য দলের প্রায় অর্ধ ডজন প্রার্থী রয়েছেন। তবে রেজওয়ানুল হক সবুজ তার মানবিক কাজের মাধ্যমে মোড়েলগঞ্জ-শরণখোলাবাসীর মন জয় করে একজন জনপ্রিয় মানুষ হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন।সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ স্বাধীনের পর থেকে এই অঞ্চলের মানুষ অবহেলিত। এখানে তেমন কোনো দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়নি। যারা এমপি নির্বাচিত হয়েছেন তারা নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন করেছেন, কিন্তু এই বঞ্চিত অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়নি।” তিনি আরও বলেন, “এই সহজ, সরল কৃষক, শ্রমিক এই অঞ্চলের মানুষকে তারা শুধু প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কোনো অবকাঠামো উন্নয়ন তারা করেননি।”আরেক প্রশ্নের জবাবে সবুজ বলেন, “ছোটবেলা থেকেই রাজনীতির প্রেমে পড়েছি, তাই জীবনের শৈশব, কৈশোর সবকিছু দলের জন্য বিলীন করেছি। স্বপ্ন দেখেছি মানুষের সেবা করার।” তিনি আরও বলেন, “আমার নেতা তারুণ্যের রাজনৈতিক অভিভাবক, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশের কল্যাণে আমাকে যেখানে কাজে লাগাবেন, আমি সেই কাজ করার মানসিকতা রাখি। আমার নেতাই সিদ্ধান্ত নেবেন কে প্রার্থী হবেন! তবে আমরা সবাই শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ধানের শীষের পক্ষে কাজ করছি।”আগামী নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হবেন কিনা এমন সরাসরি প্রশ্নের জবাবে সবুজ বলেন, “এই অঞ্চলের মানুষ কী চায়, তার ওপর নির্ভর করবে সবকিছু। তারা যদি শাসক চায় তাহলে আমি সেটা হতে পারবো না। আমি এই অঞ্চলের কাদা লেপ্টে বড় হয়েছি। আমার গায়ে এই জনপদের মাটির ঘ্রাণ লেগে আছে। আমি তাদের সেবক হতে চাই। যদি তারা চায়, আর আমার দল সেইটা অনুভব করে! আমি কখনোই নেতা নই, একজন রাজনৈতিক কর্মী মাত্র।স্থানীয়দের চোখে রেজওয়ানুল হক সবুজ ছাত্ররাজনীতি থেকে উঠে আসা এই তরুণ, মেধাবী ও বিনয়ী ছাত্রনেতা সম্পর্কে স্থানীয় সাধারণ মানুষ বলেন, “সবুজ আমাদের ঘরের ছেলে। সে পরিশ্রমী, মেধাবী, বিনয়ী ও সদাহাস্যোজ্জ্বল ছেলেটি আমাদের অনেক প্রিয়। তার বাবার মতো মানুষকে ভালোবাসতে শিখেছে। তার মতো সাহসী, সৎ ও পরিশ্রমী তরুণদের যদি তার দল মূল্যায়ন করে তাহলে আমরা হবো সৌভাগ্যবান। সফল হবে ছাত্র জনতার মহান আত্মত্যাগের বিনিময়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন।” তারা আশা প্রকাশ করেন যে, বাগেরহাটের মাটি ও মানুষের ভালোবাসার ছেলে সবুজ মনোনয়ন পেলে এই এলাকার বঞ্চিত মানুষদের নিয়ে একটি মানবিক সমাজ গড়বেন।