
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে কলেজ শিক্ষার্থী জোবায়ের আমিনের রহস্যজনক মৃত্যুর এক বছর পূর্ণ হলেও এখনো ঘটনার আসল কারণ উদঘাটন হয়নি। মৃত্যুর দিন কী ঘটেছিল, সে প্রশ্ন আজও জবাবহীন। নিহতের পরিবারের দাবি অনুযায়ী, তাকে পরিকল্পিতভাবে ডেকে নিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে হত্যা করা হয়।
২০২৪ সালের ২৯ জুলাই রাতে দুই সহপাঠী মো. সাইনান স্বচ্ছ (২১) ও মো. ইউসুফ আহম্মেদ জায়েদের সঙ্গে ঘুরতে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি জোবায়ের। পরদিন নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় চিলমারী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় স্বচ্ছ ও জায়েদের নাম উল্লেখ করে আরও ছয়-সাতজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
তবে এক বছর পার হয়ে গেলেও আসামিদের কেউ এখনো গ্রেফতার হয়নি। তদন্তের দায়িত্ব পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) – রংপুর শাখা। কিন্তু দীর্ঘ সময়েও তদন্তে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এলাকাবাসী।
এ প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সকালে চিলমারী উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধন করেন নিহতের পরিবার ও স্থানীয়রা। সকাল ১১টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে অংশ নিয়ে তারা জোবায়ের হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার ও আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, “একটি হত্যার বিচার এক বছরেও না হওয়া দুঃখজনক। আসামিরা এখনও এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কি আদৌ কাজ করছে?” বক্তারা আরও হুঁশিয়ারি দেন, আগামী সাত দিনের মধ্যে আসামিদের গ্রেফতার না করলে তারা কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবেন।
নিহতের পরিবারও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলে, “আমরা ন্যায়বিচারের জন্য অপেক্ষা করছি এক বছর ধরে। বারবার ধর্ণা দিয়েও কোনো অগ্রগতি নেই। যদি আমাদের সন্তানের হত্যার বিচার না হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়?”
স্থানীয়রা জানান, হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই মামলার তদন্তে নানা ধীরগতি লক্ষ করা গেছে। ফলে পিবিআই-এর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
চিলমারীর জনসাধারণ দ্রুত তদন্ত শেষ করে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় তারা বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
জোবায়ের আমিনের মৃত্যু এখন শুধু একটি মামলা নয়, হয়ে উঠেছে চিলমারীর ন্যায়বিচার প্রাপ্তির প্রতীক।