
চাঁপুরের মতলব উত্তর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণচক গ্রামে পারিবারিক বিরোধের জেরে চাচার ঘুষিতে ভাতিজার মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
নিহতের নাম মাইনুদ্দিন সরকার (৪৫)। তিনি রুহুল আমিন সরকারের ছেলে। পেশায় একজন ইলেকট্রিসিটি মিস্ত্রি এবং ব্রাহ্মণচক চৌরাস্তা মোড়ে ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক্স সরঞ্জাম (টিভি, রেডিও, ঘড়ি) মেরামতের দোকান চালাতেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রবিউল হক জানান, নিহতের স্ত্রী মাফিয়া বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। অভিযুক্ত ফারুক সরকার (৫২) পলাতক রয়েছেন এবং তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাইনুদ্দিনের স্ত্রী মানছুরা বেগমের মাধ্যমে তার চাচা ফারুক সরকার একটি বেসরকারি এনজিও—ব্যুরো বাংলাদেশ থেকে কিস্তিতে ঋণ নেন। কিন্তু কিস্তির টাকা পরিশোধে গড়িমসি করছিলেন তিনি। এনিয়ে বুধবার সকালে ব্রাহ্মণচক সড়কে মাইনুদ্দিন ফারুককে কিস্তির টাকা পরিশোধের কথা বললে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ফারুক সরকার ক্ষিপ্ত হয়ে মাইনুদ্দিনকে ঘুষি মারলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
স্থানীয়রা দ্রুত মাইনুদ্দিনকে মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন
নিহতের স্ত্রী মানছুরা বেগম বলেন, “ফারুক ও তার স্ত্রী মাফিয়া বেগম কিস্তির টাকা আমাদের বই দিয়ে তোলেন, কিন্তু সময়মতো টাকা শোধ করছিলেন না। এনজিওর লোকেরা আমাদের চাপ দিচ্ছিল। আজ রাস্তায় দেখা হলে আমার স্বামী টাকা চাইলে ফারুক হঠাৎ আক্রমণ করে। আমার ছয় মেয়েকে নিয়ে এখন আমি কোথায় যাব? আমি এর বিচার চাই।”
ঘটনার পর পুরো এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. লুৎফর রহমান, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (মতলব সার্কেল) খাইরুল কবির ও ওসি রবিউল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ওসি রবিউল হক আরও বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। এটি পারিবারিক ও আর্থিক বিরোধজনিত বলেই প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন।