১০:২৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গোমতী নদীতে পলো দিয়ে মাছ ধরার উৎসব

  • Desk report
  • পোস্ট হয়েছেঃ ০৭:৩৭:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • 80

শুষ্ক মৌসুম চলছে। গোমতী নদীর পানি একেবারে তলানিতে। সেই অল্প পানিতে শত শত মানুষের মধ্যে কারও হাতে পলো। আবার কারও হাতে জাল কিংবা মাছ মারার অন্যা কোনো সরঞ্জাম। এভাবেই মাছ মারার উৎসব পালন করা হয় কুমিল্লার গোমতী নদীতে।

এই উৎসবে যোগ দেওয়া মানুষের কোমরে বাঁধা ব্যাগ। কারও ব্যাগে বোয়াল জুটেছে, কারও ব্যাগে আইর, কারও কারও ব্যাগে দেশীয় প্রজাতির কার্প জাতীয় বড় বড় মাছ। আবার কারও ব্যাগে জুটেনি কিছুই। তবুও হতাশা নেই কারও। অন্তত ৩ শতাধিক মানুষ গোমতীর স্যাঁতস্যাঁতে ঘোলাটে পানি দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। উৎসবে মেতেছেন মাছ মারার।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গোমতী নদীর কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার ভাটপাড়া, পালপাড়া অংশে সরেজমিনে গিয়ে এসব চিত্র দেখা গেছে।

মাছ মারার উৎসবে যোগ দিতে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পলো, জাল নিয়ে এসেছেন দলে দলে মানুষ। মাছ মারার দৃশ্য উপভোগ করছেন অনেক দর্শনার্থীরাও।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রতি বছর শীতকাল শেষ হলে ফাল্গুন মাসের প্রথম সপ্তাহে এ মাছ মারার উৎসব শুরু হয়। এই উৎসব চলে ৩-৪ দিন। এলাকাভেদে একেকজন সর্দার রয়েছেন। সর্দারদের দিকনির্দেশনায় চলে মাছ মারার উৎসব। শত শত বছর পূর্বের এই রীতি ধরে রেখেছেন মাছ ধরার নেশায় মত্ত এসব মানুষ।

জেলার লাকসাম হরিশ্চর এলাকার করিম কন্ট্রাক্টর ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রায় ৩০ বছর ধরে মাছ মারার উৎসবে যোগ দিচ্ছি। গত রোববার থেকে এ উৎসব শুরু হয়েছে। সবার সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করতে পলো নিয়ে এসেছি। দুটি কার্প মাছ পেয়েছি। খুব ভালো লাগছে।

কোটবাড়ি এলাকা থেকে আসা গোলাম মোস্তফা ঢাকা পোস্টকে বলেন, বড় একটি বোয়াল মাছ পেয়েছি। খুব আনন্দ লাগছে। মাছ না পেলেও দুঃখ থাকত না। কারণ আমরা প্রতি বছর মাছ ধরাটাকে উৎসব হিসেবে পালন করি।

চৌদ্দগ্রামের কাশিনগর এলাকা থেকে আসা আব্দুল গাফফার ঢাকা পোস্টকে বলেন, ফেনীর মুহরি নদী, কুমিল্লার ডাকাতিয়া নদীসহ আশপাশের সব নদীর পানি তলায় চলে এলে আমরা মাছ মারার উৎসবে মাতি। অন্যান্য নদীতে মাছ মারা শেষ হলে সবার শেষে গোমতীতে আসি। আমি আজকে ৫ কেজি ওজনের দুইটা কার্প মাছ পেয়েছি। খুব আনন্দ লাগছে।’

স্থানীয় পালপাড়া এলাকার বাসিন্দা জয়নুল আবেদীন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার বয়স এখন ৫৫ বছর। আমরা সেই ছোটবেলা থেকেই দেখে এসেছি প্রতি বছর মাছ মারার এ উৎসবের দৃশ্য। বাপ-দাদাদের মুখেও শুনতাম মাছ মারার গল্পের কথা। এটা খুব ভালো অনেক মানুষ মিলে একটু আনন্দ-উল্লাস করা। অনেকেই বড় বড় মাছ পান। এটা সম্পূর্ণ নসিবের বিষয়।

ট্যাগঃ

মহিপুর থানা যুবদলের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন সম্পন্ন, সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান প্যাদা

গোমতী নদীতে পলো দিয়ে মাছ ধরার উৎসব

পোস্ট হয়েছেঃ ০৭:৩৭:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

শুষ্ক মৌসুম চলছে। গোমতী নদীর পানি একেবারে তলানিতে। সেই অল্প পানিতে শত শত মানুষের মধ্যে কারও হাতে পলো। আবার কারও হাতে জাল কিংবা মাছ মারার অন্যা কোনো সরঞ্জাম। এভাবেই মাছ মারার উৎসব পালন করা হয় কুমিল্লার গোমতী নদীতে।

এই উৎসবে যোগ দেওয়া মানুষের কোমরে বাঁধা ব্যাগ। কারও ব্যাগে বোয়াল জুটেছে, কারও ব্যাগে আইর, কারও কারও ব্যাগে দেশীয় প্রজাতির কার্প জাতীয় বড় বড় মাছ। আবার কারও ব্যাগে জুটেনি কিছুই। তবুও হতাশা নেই কারও। অন্তত ৩ শতাধিক মানুষ গোমতীর স্যাঁতস্যাঁতে ঘোলাটে পানি দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। উৎসবে মেতেছেন মাছ মারার।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গোমতী নদীর কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার ভাটপাড়া, পালপাড়া অংশে সরেজমিনে গিয়ে এসব চিত্র দেখা গেছে।

মাছ মারার উৎসবে যোগ দিতে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পলো, জাল নিয়ে এসেছেন দলে দলে মানুষ। মাছ মারার দৃশ্য উপভোগ করছেন অনেক দর্শনার্থীরাও।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রতি বছর শীতকাল শেষ হলে ফাল্গুন মাসের প্রথম সপ্তাহে এ মাছ মারার উৎসব শুরু হয়। এই উৎসব চলে ৩-৪ দিন। এলাকাভেদে একেকজন সর্দার রয়েছেন। সর্দারদের দিকনির্দেশনায় চলে মাছ মারার উৎসব। শত শত বছর পূর্বের এই রীতি ধরে রেখেছেন মাছ ধরার নেশায় মত্ত এসব মানুষ।

জেলার লাকসাম হরিশ্চর এলাকার করিম কন্ট্রাক্টর ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রায় ৩০ বছর ধরে মাছ মারার উৎসবে যোগ দিচ্ছি। গত রোববার থেকে এ উৎসব শুরু হয়েছে। সবার সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করতে পলো নিয়ে এসেছি। দুটি কার্প মাছ পেয়েছি। খুব ভালো লাগছে।

কোটবাড়ি এলাকা থেকে আসা গোলাম মোস্তফা ঢাকা পোস্টকে বলেন, বড় একটি বোয়াল মাছ পেয়েছি। খুব আনন্দ লাগছে। মাছ না পেলেও দুঃখ থাকত না। কারণ আমরা প্রতি বছর মাছ ধরাটাকে উৎসব হিসেবে পালন করি।

চৌদ্দগ্রামের কাশিনগর এলাকা থেকে আসা আব্দুল গাফফার ঢাকা পোস্টকে বলেন, ফেনীর মুহরি নদী, কুমিল্লার ডাকাতিয়া নদীসহ আশপাশের সব নদীর পানি তলায় চলে এলে আমরা মাছ মারার উৎসবে মাতি। অন্যান্য নদীতে মাছ মারা শেষ হলে সবার শেষে গোমতীতে আসি। আমি আজকে ৫ কেজি ওজনের দুইটা কার্প মাছ পেয়েছি। খুব আনন্দ লাগছে।’

স্থানীয় পালপাড়া এলাকার বাসিন্দা জয়নুল আবেদীন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার বয়স এখন ৫৫ বছর। আমরা সেই ছোটবেলা থেকেই দেখে এসেছি প্রতি বছর মাছ মারার এ উৎসবের দৃশ্য। বাপ-দাদাদের মুখেও শুনতাম মাছ মারার গল্পের কথা। এটা খুব ভালো অনেক মানুষ মিলে একটু আনন্দ-উল্লাস করা। অনেকেই বড় বড় মাছ পান। এটা সম্পূর্ণ নসিবের বিষয়।