
টাকা খাওয়ার সুবিধাজনক সময় আসলে শিক্ষক নিয়োগ দিবেন।
নিরাপদ ক্যাম্পাস, শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহর মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত এবং জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষার আলোকে ক্যাম্পাস সংস্কারের দাবিতে জুলাই দ্রোহের মিছিলে ছাত্রশিবির, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখার সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, “অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যখন নিয়মিতভাবে ছাত্র সংসদ গঠনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে, তখন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা এখনো প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা আর অপেক্ষার বৃত্তেই ঘুরপাক খাচ্ছি। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের পর পদোন্নতিও হয়ে যাচ্ছে অথচ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েই থেমে যাচ্ছে সব কার্যক্রম। তবে কি টাকা খাওয়ার সুবিধাজনক সময় আসলে আপনারা শিক্ষক নিয়োগ দিবেন?”
নিরাপদ ক্যাম্পাস, শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহর মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত এবং জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষার আলোকে ক্যাম্পাস সংস্কারের দাবিতে ‘জুলাই দ্রোহের মিছিল’ করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা।
শনিবার (২ আগস্ট) বিকাল ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়ামোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটকে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীদের “নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার”, “ইসলামী ছাত্রশিবির, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ”, “যদি না হয় সংস্কার, এই প্রশাসন কি দরকার!”, “করতে সনদ উত্তোলন, শিক্ষার্থীদের যায় জীবন”, “ইবিতে ছাত্রসংসদ, চালু করো, করতে হবে” ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
সমাবেশে ইবি ছাত্রশিবির সম্পাদক ইউসুফ আলী বলেন, “অভ্যুত্থানের এক বছর পেরিয়ে গেলেও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আমরা প্রত্যাশিত সংস্কার দেখতে পাইনি। বরং আমরা পেয়েছি আমার সহপাঠী, আমার ভাই সাজিদের নিথর দেহ। আজও তার হত্যার বিচার হয়নি। এরই মাঝে আবারও কিছু ফ্যাসিবাদী শক্তি মাথা চাড়া দিয়ে উঠার চেষ্টা করছে। আপনারা যদি প্রকৃত সংস্কারের পথে না হাঁটেন, সাজিদের মৃত্যুর নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত না করেন এবং ফ্যাসিবাদী অপশক্তির বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা না নেন, তাহলে ছাত্রশিবির এই ক্যাম্পাসের সব স্বৈরতান্ত্রিক মসনদ গুঁড়িয়ে দেবে।”
ইবি ছাত্রশিবির সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, “ফ্যাসিবাদ পতনের এক বছর পেরিয়ে গেলেও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের দেখা মেলেনি। গুম হয়ে যাওয়া ওয়ালিউল্লাহ-মুকাদ্দাসের বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি, নাপা সেন্টারের সংস্কার হয়নি, সনদ উত্তোলন সংক্রান্ত ভোগান্তিও বহাল রয়েছে। প্রশাসনের এই নিস্ক্রিয়তা যেন জুলাই বিপ্লবকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “আমরা কখনোই ভাবিনি যে, জুলাই আন্দোলনের পর আমাদের আবারও মাঠে নামতে হবে—ক্যাম্পাস সংস্কারের দাবিতে। অথচ বাস্তবতা হলো, সহপাঠী সাজিদের মৃত্যুর পরও এখন পর্যন্ত তেমন কোনো তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ কিংবা দৃশ্যমান অগ্রগতি আমরা দেখতে পাচ্ছি না। এতে স্পষ্ট যে, এই ক্যাম্পাসে আমরা কতটা নিরাপদে আছি—সেই প্রশ্ন থেকেই যায়।”
তিনি প্রশাসনের প্রতি আহ্বান করে বলেন, “প্রশাসনের প্রতি আমাদের স্পষ্ট বার্তা—আপনারা যদি শিক্ষার্থীদের পাশে থাকেন, ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে সম্মানজনক সংলাপে বসেন এবং আন্তরিকতার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কারে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন, তবেই আপনাদের চেয়ার টিকে থাকবে। অন্যথায় ইতিহাস প্রমাণ করে—স্বৈরাচার সরকারও ২০৪১ সালের পরিকল্পনা করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি। এখনো সময় আছে, সঠিক সিদ্ধান্ত নিন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে থেকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি আদর্শ শিক্ষাঙ্গনে পরিণত করুন।”