
ইলিশের ভরা মৌসুম হলেও দক্ষিণাঞ্চলের নদীগুলোতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা মিলছে না। যে অল্প পরিমাণ মাছ বাজারে আসছে, তার দাম সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। এ কারণে ইলিশের স্বাদ নিতে পারছে না সাধারণ ক্রেতারা।
একসময় ইলিশের প্রাচুর্যের জন্য পরিচিত বরিশালের পোর্ট রোড এখন তার জৌলুস হারাচ্ছে। তিন বছর আগেও ভরা মৌসুমে প্রতিদিন এক থেকে দেড় হাজার মণ ইলিশ উঠলেও বর্তমানে এই চিত্র একেবারেই ভিন্ন। এখন দিনে ৩০ থেকে ৪০ মণ ইলিশ আসে কিনা, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। যা কিছু ইলিশ বাজারে আসে, তা বিভিন্ন সিন্ডিকেটের কারণে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে।
অন্যদিকে, জেলেরা আরও বেশি বিপাকে পড়েছেন। নদীতে পর্যাপ্ত মাছ না পাওয়ায় তাদের জীবন ধারণের জন্য ধারদেনা করে চলতে হচ্ছে।
ঝালকাঠি ও নলছিটির বিভিন্ন বাজারে বর্তমানে ইলিশের দাম আকাশছোঁয়া, সরেজমিনে দেখা গেছে, ১২০০-১৫০০ গ্রামের ওজনের ইলিশ কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ২৮০০-৩০০০ টাকায়। এক কেজি ওজনের ইলিশ কেজিপ্রতি ২২০০-২৫০০ টাকায়, ৭০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ কেজিপ্রতি ১৮০০-২০০০ টাকায়, ৫০০-৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ কেজিপ্রতি ১২০০-১৫০০ টাকায়, ২০০-৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ কেজিপ্রতি ৮০০-৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
দিন যত গড়াচ্ছে, ইলিশের দাম ততই বাড়ছে। অনেকেই বাজারে এসে দাম শুনে চমকে উঠছেন। ইলিশ কিনতে না পারায় খালি হাতেই বাড়ি ফেরেন। চড়া দামের জন্য খুচরা বিক্রেতারা আড়তদারদের দুষছেন। তারা বলছেন, আড়তেই ইলিশের দাম অনেক বেশি, যে কারণে কম দামে বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না।
বিক্রেতারা বলছেন, প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে ইলিশ মাছের সরবরাহ কমে গেছে। জেলেরা নদীতে আগের মতো মাছ পাচ্ছেন না, যা পাচ্ছেন তা চাহিদার তুলনায় অত্যন্ত কম।
তারা আরও বলেন, নদীর ইলিশের দাম বেশি। সাগরের ইলিশ বাজারে আসা শুরু করলে দাম কিছুটা কমতে পারে।
ঝালকাঠি মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি মো. শহিদ বলেন, সুগন্ধা নদীতে আগে অনেক ইলিশ মাছ ধরা পড়লেও এখন সারা দিনে একটি মাছও ওঠে না। নদী মোহনায় ডুবোচর ও নাব্যসংকটের কারণে সাগর থেকে মাছ আসছে না।
নলছিটি মৎস্য কর্মকর্তা রমনি কুমার মিস্ত্রী বলেন, সাগরের মাছের সরবরাহ বাড়লে বাজারে ইলিশের সংকট কমে আসবে এবং দামও হ্রাস পাবে। বর্তমানে অনেক ব্যবসায়ী ভালো দামের আশায় ট্রলার থেকে মাছ ঢাকায় পাঠিয়ে দেন, এতে স্থানীয় বাজারে কিছুটা সংকট দেখা দিয়েছে।