১১:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৫ অগাস্ট ২০২৫, ২১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কালীগঞ্জে সাপের দংশনে বাড়ছে মৃত্যুঝুঁকি, স্বাস্থ্যসেবায় নেই প্রতিষেধক ইনজেকশন

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলা ভয়াবহ এক স্বাস্থ্য সংকটের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছে। বর্ষাকালীন বৃষ্টিপাত ও আশপাশের পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে এখন বিষাক্ত সাপ শুধু জলাবদ্ধ স্থানেই সীমাবদ্ধ নেই বাড়ির ভেতর, শুকনা জায়গা, স্কুলঘর এমনকি মানুষের আবাসস্থলেও হঠাৎ হঠাৎ ঢুকে পড়ছে। ফলে প্রতিনিয়ত সাপে দংশনের ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাচ্ছে। শুধু গত তিন সপ্তাহেই কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৮ জন সাপে দংশিত রোগী চিকিৎসার জন্য এসেছেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে, এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্ন্যাক অ্যান্টিভেনাম (সাপের বিষের প্রতিষেধক ইনজেকশন) একটিও নেই। ফলে প্রতিটি রোগীকেই যশোর বা ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে রেফার্ড করতে হচ্ছে, যার ফলে মূল্যবান সময় নষ্ট হচ্ছে এবং মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। আজকের একটি হৃদয়বিদারক ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যা জনমনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। ভিডিওতে দেখা যায়, একটি ছোট্ট শিশুকে সাপে দংশনের পর তার মা কান্নাজড়িত কণ্ঠে তাকে কোলে করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। কিন্তু ইনজেকশন না থাকায় অসহায় সেই মা হাসপাতালের মেঝেতে পড়ে গিয়ে বুক চাপড়ে কাঁদছেন, গড়াগড়ি খাচ্ছেন, আর বারবার চিৎকার করছেন “আমার বাচ্চাটারে বাঁচান!”
এই করুণ দৃশ্য উপস্থিত মানুষজনের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে, এবং সামাজিক মাধ্যমে মানুষের ক্ষোভে ফেটে পড়েছে। স্থানীয়দের বক্তব্য, “এখন তো আর সাপ শুধু জঙ্গলে বা পানিতে থাকে না, শোবার ঘর, বারান্দা, রান্নাঘর সবখানেই ঢুকে পড়ছে। কিন্তু আমাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তার প্রতিষেধক নেই, এ কেমন অবস্থা?” উল্লেখ্য, কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রতি মাসে গড়ে ১৪ হাজারের বেশি বহির্বিভাগ (OPD) রোগীকে সেবা দিয়ে থাকে। অথচ এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় সাপে দংশনের চিকিৎসা সেই কেন্দ্রে কার্যত অনুপস্থিত। নেই অ্যান্টিভেনাম ইনজেকশন, নেই প্রশিক্ষিত জনবল, নেই কোনো নির্ধারিত ইউনিট। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, “সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসায় প্রথম ৩০-৬০ মিনিটই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ের মধ্যেই প্রতিষেধক প্রয়োগ না হলে রোগীর মৃত্যু অনিবার্য হয়ে উঠতে পারে।” এ অবস্থায় এলাকাবাসীর দাবি অবিলম্বে কালীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যান্টিভেনাম ইনজেকশন সরবরাহ ও জরুরি ইউনিট চালু করতে হবে। কারণ একটি শিশুর মৃত্যু শুধু তার পরিবারের ক্ষতি নয়, এটি একটি জাতির ভবিষ্যতের অপমৃত্যু।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

অষ্টগ্রামে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে বিজয় র‍্যালি অনুষ্ঠিত

কালীগঞ্জে সাপের দংশনে বাড়ছে মৃত্যুঝুঁকি, স্বাস্থ্যসেবায় নেই প্রতিষেধক ইনজেকশন

পোস্ট হয়েছেঃ ১২:২৮:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫
ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলা ভয়াবহ এক স্বাস্থ্য সংকটের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছে। বর্ষাকালীন বৃষ্টিপাত ও আশপাশের পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে এখন বিষাক্ত সাপ শুধু জলাবদ্ধ স্থানেই সীমাবদ্ধ নেই বাড়ির ভেতর, শুকনা জায়গা, স্কুলঘর এমনকি মানুষের আবাসস্থলেও হঠাৎ হঠাৎ ঢুকে পড়ছে। ফলে প্রতিনিয়ত সাপে দংশনের ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাচ্ছে। শুধু গত তিন সপ্তাহেই কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৮ জন সাপে দংশিত রোগী চিকিৎসার জন্য এসেছেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে, এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্ন্যাক অ্যান্টিভেনাম (সাপের বিষের প্রতিষেধক ইনজেকশন) একটিও নেই। ফলে প্রতিটি রোগীকেই যশোর বা ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে রেফার্ড করতে হচ্ছে, যার ফলে মূল্যবান সময় নষ্ট হচ্ছে এবং মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। আজকের একটি হৃদয়বিদারক ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যা জনমনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। ভিডিওতে দেখা যায়, একটি ছোট্ট শিশুকে সাপে দংশনের পর তার মা কান্নাজড়িত কণ্ঠে তাকে কোলে করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। কিন্তু ইনজেকশন না থাকায় অসহায় সেই মা হাসপাতালের মেঝেতে পড়ে গিয়ে বুক চাপড়ে কাঁদছেন, গড়াগড়ি খাচ্ছেন, আর বারবার চিৎকার করছেন “আমার বাচ্চাটারে বাঁচান!”
এই করুণ দৃশ্য উপস্থিত মানুষজনের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে, এবং সামাজিক মাধ্যমে মানুষের ক্ষোভে ফেটে পড়েছে। স্থানীয়দের বক্তব্য, “এখন তো আর সাপ শুধু জঙ্গলে বা পানিতে থাকে না, শোবার ঘর, বারান্দা, রান্নাঘর সবখানেই ঢুকে পড়ছে। কিন্তু আমাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তার প্রতিষেধক নেই, এ কেমন অবস্থা?” উল্লেখ্য, কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রতি মাসে গড়ে ১৪ হাজারের বেশি বহির্বিভাগ (OPD) রোগীকে সেবা দিয়ে থাকে। অথচ এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় সাপে দংশনের চিকিৎসা সেই কেন্দ্রে কার্যত অনুপস্থিত। নেই অ্যান্টিভেনাম ইনজেকশন, নেই প্রশিক্ষিত জনবল, নেই কোনো নির্ধারিত ইউনিট। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, “সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসায় প্রথম ৩০-৬০ মিনিটই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ের মধ্যেই প্রতিষেধক প্রয়োগ না হলে রোগীর মৃত্যু অনিবার্য হয়ে উঠতে পারে।” এ অবস্থায় এলাকাবাসীর দাবি অবিলম্বে কালীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যান্টিভেনাম ইনজেকশন সরবরাহ ও জরুরি ইউনিট চালু করতে হবে। কারণ একটি শিশুর মৃত্যু শুধু তার পরিবারের ক্ষতি নয়, এটি একটি জাতির ভবিষ্যতের অপমৃত্যু।