০৭:৩৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫, ৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইস্টার্ন রিফাইনারিতে সক্ষমতার অতিরিক্ত তেল পরিশোধন হয়েছে ৩৫ হাজার টন

  • বশির আলমামুন
  • পোস্ট হয়েছেঃ ১১:৩৩:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫
  • 122
দেশের একমাত্র সরকারি জ্বালানি তেল পরিশোধনাগার ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড (ইআরএল) এ জ্বালানি তেল শোধনের সক্ষমতা বছরে সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টন। তবে গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সক্ষমতার চেয়ে ৩৫ হাজার টন বেশি তেল শোধন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এর আগের ১০ বছরে কোম্পানিটি মাত্র একবার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পেরেছিল।
মঙ্গলবার (১ জুলাই ২০২৫)) দুপুরে নগরের পতেঙ্গায় প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন এ তথ্য জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইআরএলের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান সচিব আমিন উল আহসান, ইআরএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শরীফ হাসনাত ও বাের্ড সদস্য উপ সচিব আছমা আরা বেগম প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১৫ লাখ ৩৫ হাজার টন তেল শোধন করা হয়েছে। প্রথমবারের মতো ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডে এত বেশি তেল পরিশোধন করা সম্ভব হলো।
কোম্পানির বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১২ লাখ ৭৯ হাজার টন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১৪ লাখ ৪৩ হাজার টন, ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৩ লাখ ৭৭ হাজার টন, ২০২০-২১ অর্থবছরে ১৫ লাখ ১৩ হাজার টন ও ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১০ লাখ ৭৯ হাজার টন তেল পরিশোধন করা হয়েছে।
ইআরএলের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান নাসিমুল গনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সব পক্ষের প্রচেষ্টায় ও তেল সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন থাকায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পরিমাণে তেল সরবরাহ করা গেছে। ৫৭ বছরের পুরোনো এ পরিশোধনাগারে সফলতার সঙ্গে এ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হলো।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিপিসির চেয়ারম্যান আমিন উল আহসান বলেন, ইআরএল দ্বিতীয় ইউনিট বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া চলছে। গতকাল প্রকল্পের উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। ফলে চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে খুব দ্রুত ইআরএল দ্বিতীয় ইউনিটের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হবে।মহেশখালীতে পরিশোধনাগার নির্মাণ করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান বিপিসির চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, মহেশখালীতে ১০ লাখ টন পরিশোধন ক্ষমতার একটা শোধনাগার নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়ে সরকার কাজ করছে। এ জন্য সেখানে জায়গা বরাদ্দ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পায়রা বন্দরেও একটি শোধনাগার নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।
চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় সরকারি তেল পরিশোধনাগার ইআরএল স্থাপিত হয় ১৯৬৮ সালে। বিপিসির মাধ্যমে আনা অপরিশোধিত জ্বালানি তেল তারা শোধন করে। এলপিজি, পেট্রল, অকটেন, কেরোসিন, ডিজেল, ফার্নেসসহ ১৪ রকমের তেল উৎপাদন করে ইআরএল। ইআরএলের দ্বিতীয় ইউনিট নির্মাণ করা গেলে পরিশোধনের ক্ষমতা আরও ৩০ লাখ টন বাড়বে।
তবে জ্বালানি তেল পরিশোধনের সক্ষমতা না বাড়ায় বেশি পরিমাণে ডিজেল আমদানি করতে হয়। এতে প্রতিবছর বাড়তি ডলার খরচ করতে হচ্ছে সরকারকে। অথচ দেশ স্বাধীন হওয়ার ৫৪ বছরেও তেল পরিশোধনের সক্ষমতা বাড়েনি। এর মধ্যে সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য নেওয়া প্রকল্পটি ১৩ বছরেও অনুমোদিত হয়নি। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বছরে প্রায় ২৪ কোটি ডলার সাশ্রয় হতো। এখন বিশ্ববাজারে দাম বাড়লেই দেশে জ্বালানি নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

সন্দ্বীপে এসইডিপি’র আওতায় পারফরমেন্স বেজড গ্র্যান্টস পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান সম্পন্ন

ইস্টার্ন রিফাইনারিতে সক্ষমতার অতিরিক্ত তেল পরিশোধন হয়েছে ৩৫ হাজার টন

পোস্ট হয়েছেঃ ১১:৩৩:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫
দেশের একমাত্র সরকারি জ্বালানি তেল পরিশোধনাগার ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড (ইআরএল) এ জ্বালানি তেল শোধনের সক্ষমতা বছরে সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টন। তবে গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সক্ষমতার চেয়ে ৩৫ হাজার টন বেশি তেল শোধন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এর আগের ১০ বছরে কোম্পানিটি মাত্র একবার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পেরেছিল।
মঙ্গলবার (১ জুলাই ২০২৫)) দুপুরে নগরের পতেঙ্গায় প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন এ তথ্য জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইআরএলের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান সচিব আমিন উল আহসান, ইআরএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শরীফ হাসনাত ও বাের্ড সদস্য উপ সচিব আছমা আরা বেগম প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১৫ লাখ ৩৫ হাজার টন তেল শোধন করা হয়েছে। প্রথমবারের মতো ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডে এত বেশি তেল পরিশোধন করা সম্ভব হলো।
কোম্পানির বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১২ লাখ ৭৯ হাজার টন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১৪ লাখ ৪৩ হাজার টন, ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৩ লাখ ৭৭ হাজার টন, ২০২০-২১ অর্থবছরে ১৫ লাখ ১৩ হাজার টন ও ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১০ লাখ ৭৯ হাজার টন তেল পরিশোধন করা হয়েছে।
ইআরএলের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান নাসিমুল গনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সব পক্ষের প্রচেষ্টায় ও তেল সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন থাকায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পরিমাণে তেল সরবরাহ করা গেছে। ৫৭ বছরের পুরোনো এ পরিশোধনাগারে সফলতার সঙ্গে এ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হলো।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিপিসির চেয়ারম্যান আমিন উল আহসান বলেন, ইআরএল দ্বিতীয় ইউনিট বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া চলছে। গতকাল প্রকল্পের উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। ফলে চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে খুব দ্রুত ইআরএল দ্বিতীয় ইউনিটের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হবে।মহেশখালীতে পরিশোধনাগার নির্মাণ করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান বিপিসির চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, মহেশখালীতে ১০ লাখ টন পরিশোধন ক্ষমতার একটা শোধনাগার নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়ে সরকার কাজ করছে। এ জন্য সেখানে জায়গা বরাদ্দ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পায়রা বন্দরেও একটি শোধনাগার নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।
চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় সরকারি তেল পরিশোধনাগার ইআরএল স্থাপিত হয় ১৯৬৮ সালে। বিপিসির মাধ্যমে আনা অপরিশোধিত জ্বালানি তেল তারা শোধন করে। এলপিজি, পেট্রল, অকটেন, কেরোসিন, ডিজেল, ফার্নেসসহ ১৪ রকমের তেল উৎপাদন করে ইআরএল। ইআরএলের দ্বিতীয় ইউনিট নির্মাণ করা গেলে পরিশোধনের ক্ষমতা আরও ৩০ লাখ টন বাড়বে।
তবে জ্বালানি তেল পরিশোধনের সক্ষমতা না বাড়ায় বেশি পরিমাণে ডিজেল আমদানি করতে হয়। এতে প্রতিবছর বাড়তি ডলার খরচ করতে হচ্ছে সরকারকে। অথচ দেশ স্বাধীন হওয়ার ৫৪ বছরেও তেল পরিশোধনের সক্ষমতা বাড়েনি। এর মধ্যে সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য নেওয়া প্রকল্পটি ১৩ বছরেও অনুমোদিত হয়নি। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বছরে প্রায় ২৪ কোটি ডলার সাশ্রয় হতো। এখন বিশ্ববাজারে দাম বাড়লেই দেশে জ্বালানি নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়।