
সাত মাস আগে সৌদি আরবে নিহত পিতার কবরের পাশেই চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী বিমান দুর্ঘটনায় নিহত আব্দুল্লাহ শামীম।
আজ মঙ্গলবার সকাল ৯ টায় শরীয়তপুর জেলার সখিপুর থানার ডিএমখালী ইউনিয়নের মাঝিকান্দি গ্রামের বাড়িতে পিতার কবরের পাশেই দাফন করা হয় আব্দুল্লাহ শামীমকে
শরীয়তপুরে জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানার ডিএমখালি ইউনিয়নের মাঝিকান্দি গ্রামের সন্তান আব্দুল্লাহ ছামীম (১৪)। ছোটবেলা থেকেই মেধাবী, শান্ত ও ভদ্র স্বভাবের এই কিশোরের চোখে ছিল একটাই স্বপ্ন—একদিন বড় হয়ে চিকিৎসক হবেন। কিন্তু বাবাকে হারানোর সাত মাস না যেতেই এবার নিজেকেই বাঁচিয়ে রাখতে পারলাম না।
ঢাকার উত্তরা দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আহত হওয়ার পর রাতেই মৃ/ত্যুবরণ করে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছামীম। নিথর ছেলের নিথর মুখ দেখে বাকরুদ্ধ মা জুলেখা বেগম ও তার ভাইবোনেরা। একের পর এক শোক আর দুঃসংবাদে ভেঙে পড়েছে পুরো পরিবার।ছামীমের বাবা আবুল কালাম মাঝি গত বছরের ডিসেম্বরে প্রবাসে মৃ/ত্যুবরণ করেন। এরপর থেকে ঢাকার খালপাড় এলাকায় বড় ভাই ও মায়ের সঙ্গে থাকছিল সে। একসময় মাদ্রাসায় পড়লেও পরে ভর্তি হয় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে। টিফিনের ১০ মিনিট আগে শ্রেণিকক্ষে বসেই সহপাঠীদের সঙ্গে পড়ছিল ছামীম, তখনই আকাশ থেকে ভয়ংকর শব্দে ভেঙে পড়ে বিমানটি।তৎক্ষণাৎ উদ্ধার করে সেনা সদস্যরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। রাত ১১টার দিকে ঢামেকের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধী অবস্থায় মৃত্যু হয় আব্দুল্লাহ ছামীমের।এমন অকাল মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না কেউই। স্বজনদের দাবি, ঘটনাটির নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
অপরদিকে শরীয়তপুর বাসী মনে প্রাণে চেয়েছিল এমন দুর্ঘটনায় যেন শরীয়তপুরের কোন শিক্ষার্থী, অভিভাবক অথবা শিক্ষকের মৃত্যু না হয়। কিন্তু সেটা আর হলো না শরীয়তপুর বাসীকে মৃত্যুর খবর শুনতেই হলো।
কিন্তু আব্দুল্লাহ ছামীমের গ্রামের বাড়িতে তাঁর আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী সকলের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সাত মাসের ব্যবধানে স্বামী এবং পুত্রকে হারিয়ে পাগলপ্রায় জোলেখা বেগম। স্বজনদের সান্ত্বনা দেওয়ার মতো কোন ভাষা নেই। জুলেখা বেগমের কান্নায় গ্রামের সাধারণ মানুষও কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছে।