০৯:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫, ৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মানব পাচার চক্রের গডফাদারদের গ্রেফতারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

মানব পাচার চক্রের গডফাদার নাজমুল খান এবং নজরুল ইসলামের প্রতারণা। ইটালী পাঠানোর নামে ৩৮ জনের কাছ থেকে ৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ,বেলারুশে আটকে রাখা ও পরবর্তিতে রাশিয়ার সেনা ক্যাম্পে বিক্রি করার প্রতিবাদ ও দোষীদের গ্রেফতারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন রেমিটেন্স যোদ্ধা রবিউল ইসলাম। ২২ শে জুলাই মঙ্গলবার দুপুর ২ টার সময় ঝিনাইদহ শহরের একটি মিলনায়তনে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কাশিমপুর গ্রামের রোজদার আলীর ছেলে প্রতারণার শিকার রবিউল এক লিখিত বক্তব্যে তার সর্বস্ব হারানোর বর্ণনা দেন। তিনি বলেন বিদেশ যাওয়ার প্রলোভনে পড়ে তিনি তার জমি-জায়গা বাড়িঘর সব হারিয়েছেন। তার কাছ থেকে নগদে ২২ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে নাজমুল গং। বক্তব্যে বলা হয় পার্শ্ববর্তী মাগুরা জেলার রাউতাড়া গ্রামের আছাদ মোল্লার ছেলে নাজমুল খান এবং তার বোন জামাই ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ইসলামপুর পুটিয়া গ্রামের হোসেন বিশ্বাসের ছেলে নজরুল দীর্ঘদিন যাবৎ ইটালীতে থাকার সুবাদে বিদেশে লোক পঠানোর নাম করে এলাকার অনেকের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এই প্রতারক চক্র ঝিনাইদহ-মাগুরা অঞ্চল সহ সারা দেশে একটি মানবপাচার নেটওয়ার্ক তৈরী করে। বিদেশ যেতে ইচ্ছুকদের কাছ থেকে টাকা উঠানোর জন্য নাজমুল তার পিতা আছাদ মোল্লা, মা শাহিদা বেগম এবং ছোট ভাই নূর ইসলাম কে এজেন্ট হিসেবে নিযুক্ত করে। ভুক্তভোগী রবিউল বলেন, ৪ মাসের মধ্যে ইটালীতে পাঠানোর  প্রতিশ্রুতি  দিয়ে বিগত ১৩/০৬/২৩ ইং তারিখে তার কাছ থেকে ২২ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। তিনি বলেন এর পর ২০২৪ সালের জুন মাসে আমাকে ঢাকায় আসতে বলে এবং ৩৬ দিন নিজ খরচে একটি আবাসিক হোটেলে অস্থান করি। এর মধ্যে তাকে তিনবার বিমানের ভূয়া টিকেট দিয়ে বিমান বন্দরে পাঠায়। প্রতিবারই তিনি চরম অপমান সয়ে ফেরৎ আসেন। এর পর ২৪ সালের জুলাই মাসে এক ভূয়া কারসাজি করে তাকে সৌদি আরবে নিয়ে যায়। তবে আবারও তাকে দূর্ভোগের মধ্যে ফেলা হয়। সৌদি আরবে তিন মাস থাকার পর কোন কাজ করতে না পেরে দেশে ফিরতে হয় পকেট শূণ্য করে।  দেশে ফিরে টাকার ফেরতের জন্য চাপ দিলে প্রতারক নাজমুল তাকে এক সপ্তাহের মধ্যে সার্বিয়ার ফ্লাইট হবে বলে জানায়। কিন্তু সেই ফ্লাইট আর হয়নি। এখন তিনি ভিটে-মাটি জায়গা জমি হারিয়ে পথের ফকির। এনজিও থেকে লোনের টাকা নেয়ায় তারাও জেলে পাঠানোর জন্য মামলার ভয় দেখাচ্ছে। আত্মীয় স্বজনের কাছ থেকে নেয়া ধারের টাকাও পরিশোধ করার সাধ্য নেই। কোথায় যাবেন,কে সাহায্য করবেন এই ভেবে দিশেহারা। রবিউল জানান এখন টাকা ফেরৎ চাইলে নাজমুল গং জীবন নাশের হুমকী দিচ্ছে। তার বাবা-মা ভাই প্রথমে টাকা ফেরৎ দিতে রাজি হলেও এখন তারা সন্ত্রাসী ভাড়া করে জানে মেরে ফেলার হুমকী দিচ্ছে। প্রতারনার শিকার রবিউল জানান, আমার মত ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কাশিমপুর গ্রামের ইমান আলী মন্ডলের ছেলে গাফ্ফার, জার্মান এবং  সোনাদহ গোয়ালপাড়া গ্রামের শাহাদৎ বিশ্বাসের ছেলে নান্টু ও একই প্রতরনার শিকার। এই প্রতারক চক্রের পাল্লায় পড়ে অনেকে এখন বিদেশের কারাগারে। অনেককে রাশিয়ার সেনা ক্যাম্পে বিক্রে করে দেয়া হয়েছে। অনেককে জিম্মী হয়ে ইউক্রেন যুদ্ধে গিয়ে জীবন দিতে হয়েছে। অনেকের আত্মীয় স্বজন জানে না তাদের সন্তান কোথায় আছে। রবিউল জানান প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া তার আর বেচে থাকার উপায় নেই। তিনি অবিলম্বে আত্মসাৎ করা টাকা উদ্ধার এবং দোষীদের গ্রেফতারের দাবী জানান।
নাজমুল খানের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করতে চাইলে তার মুঠোফোনে কোন সংযোগ পাওয়া যায়নি।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

সন্দ্বীপে এসইডিপি’র আওতায় পারফরমেন্স বেজড গ্র্যান্টস পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান সম্পন্ন

মানব পাচার চক্রের গডফাদারদের গ্রেফতারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

পোস্ট হয়েছেঃ ০৩:৩৯:৫৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫
মানব পাচার চক্রের গডফাদার নাজমুল খান এবং নজরুল ইসলামের প্রতারণা। ইটালী পাঠানোর নামে ৩৮ জনের কাছ থেকে ৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ,বেলারুশে আটকে রাখা ও পরবর্তিতে রাশিয়ার সেনা ক্যাম্পে বিক্রি করার প্রতিবাদ ও দোষীদের গ্রেফতারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন রেমিটেন্স যোদ্ধা রবিউল ইসলাম। ২২ শে জুলাই মঙ্গলবার দুপুর ২ টার সময় ঝিনাইদহ শহরের একটি মিলনায়তনে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কাশিমপুর গ্রামের রোজদার আলীর ছেলে প্রতারণার শিকার রবিউল এক লিখিত বক্তব্যে তার সর্বস্ব হারানোর বর্ণনা দেন। তিনি বলেন বিদেশ যাওয়ার প্রলোভনে পড়ে তিনি তার জমি-জায়গা বাড়িঘর সব হারিয়েছেন। তার কাছ থেকে নগদে ২২ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে নাজমুল গং। বক্তব্যে বলা হয় পার্শ্ববর্তী মাগুরা জেলার রাউতাড়া গ্রামের আছাদ মোল্লার ছেলে নাজমুল খান এবং তার বোন জামাই ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ইসলামপুর পুটিয়া গ্রামের হোসেন বিশ্বাসের ছেলে নজরুল দীর্ঘদিন যাবৎ ইটালীতে থাকার সুবাদে বিদেশে লোক পঠানোর নাম করে এলাকার অনেকের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এই প্রতারক চক্র ঝিনাইদহ-মাগুরা অঞ্চল সহ সারা দেশে একটি মানবপাচার নেটওয়ার্ক তৈরী করে। বিদেশ যেতে ইচ্ছুকদের কাছ থেকে টাকা উঠানোর জন্য নাজমুল তার পিতা আছাদ মোল্লা, মা শাহিদা বেগম এবং ছোট ভাই নূর ইসলাম কে এজেন্ট হিসেবে নিযুক্ত করে। ভুক্তভোগী রবিউল বলেন, ৪ মাসের মধ্যে ইটালীতে পাঠানোর  প্রতিশ্রুতি  দিয়ে বিগত ১৩/০৬/২৩ ইং তারিখে তার কাছ থেকে ২২ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। তিনি বলেন এর পর ২০২৪ সালের জুন মাসে আমাকে ঢাকায় আসতে বলে এবং ৩৬ দিন নিজ খরচে একটি আবাসিক হোটেলে অস্থান করি। এর মধ্যে তাকে তিনবার বিমানের ভূয়া টিকেট দিয়ে বিমান বন্দরে পাঠায়। প্রতিবারই তিনি চরম অপমান সয়ে ফেরৎ আসেন। এর পর ২৪ সালের জুলাই মাসে এক ভূয়া কারসাজি করে তাকে সৌদি আরবে নিয়ে যায়। তবে আবারও তাকে দূর্ভোগের মধ্যে ফেলা হয়। সৌদি আরবে তিন মাস থাকার পর কোন কাজ করতে না পেরে দেশে ফিরতে হয় পকেট শূণ্য করে।  দেশে ফিরে টাকার ফেরতের জন্য চাপ দিলে প্রতারক নাজমুল তাকে এক সপ্তাহের মধ্যে সার্বিয়ার ফ্লাইট হবে বলে জানায়। কিন্তু সেই ফ্লাইট আর হয়নি। এখন তিনি ভিটে-মাটি জায়গা জমি হারিয়ে পথের ফকির। এনজিও থেকে লোনের টাকা নেয়ায় তারাও জেলে পাঠানোর জন্য মামলার ভয় দেখাচ্ছে। আত্মীয় স্বজনের কাছ থেকে নেয়া ধারের টাকাও পরিশোধ করার সাধ্য নেই। কোথায় যাবেন,কে সাহায্য করবেন এই ভেবে দিশেহারা। রবিউল জানান এখন টাকা ফেরৎ চাইলে নাজমুল গং জীবন নাশের হুমকী দিচ্ছে। তার বাবা-মা ভাই প্রথমে টাকা ফেরৎ দিতে রাজি হলেও এখন তারা সন্ত্রাসী ভাড়া করে জানে মেরে ফেলার হুমকী দিচ্ছে। প্রতারনার শিকার রবিউল জানান, আমার মত ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কাশিমপুর গ্রামের ইমান আলী মন্ডলের ছেলে গাফ্ফার, জার্মান এবং  সোনাদহ গোয়ালপাড়া গ্রামের শাহাদৎ বিশ্বাসের ছেলে নান্টু ও একই প্রতরনার শিকার। এই প্রতারক চক্রের পাল্লায় পড়ে অনেকে এখন বিদেশের কারাগারে। অনেককে রাশিয়ার সেনা ক্যাম্পে বিক্রে করে দেয়া হয়েছে। অনেককে জিম্মী হয়ে ইউক্রেন যুদ্ধে গিয়ে জীবন দিতে হয়েছে। অনেকের আত্মীয় স্বজন জানে না তাদের সন্তান কোথায় আছে। রবিউল জানান প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া তার আর বেচে থাকার উপায় নেই। তিনি অবিলম্বে আত্মসাৎ করা টাকা উদ্ধার এবং দোষীদের গ্রেফতারের দাবী জানান।
নাজমুল খানের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করতে চাইলে তার মুঠোফোনে কোন সংযোগ পাওয়া যায়নি।