
ভাই পিজ, নতুন কাউকে আবার জাতীয় বীর বানাইয়েন না? অন্তত এয়ারক্রাফটের ফ্লাইট রেকর্ডার উদ্ধার হবার আগ পর্যন্ত। আপনার গাড়ির ব্রেক আপনার কাছে। চাইলে ফুটপাতের মানুষ ও মাড়তে পারেন আবার রাস্তার নীচে গড়াই দিয়ে সবাইকে বাঁচাতে পাড়েন। ৪৫০ কিলোমিটার পার ঘণ্টা গতি থাকলেই একটা F7 এয়ারক্রাফট গ্লাইড করতে পারে, যদি ইঞ্জিন ফেইল করে। একটা মানুষের মাথায় কি পরিমাণ গু থাকলে কোন কিছু প্রমাণের আগেই সবাইকে জাতীয় বীর বানায়। আমিও চাই পাইলট সাহেব’কে জাতীয় বীর ভাবতে, শুধু কিছু প্রশ্নের উত্তর পাচ্ছিনা তাই ব্যক্তিগত ভাবে কাউকে জাতীয় বীর বলতে পারছিনাঃ
১। একটা পোষ্টে দেখলাম কন্ট্রোল রুম থেকে ইজেক্ট করার কথা বলার পড়েও পাইলট ইজেক্ট না করে উল্টা ম্যাক স্পীডে এয়ার বেজের দিকে ছুটতে থাকে। এয়ারক্রাফট কন্ট্রোলে নাই জানা সত্ত্বেও ম্যাক স্পীড তোলার দরকার কি ছিল। আর এয়ারক্রাফট কাজ না করলে ম্যাক স্পীড ক্যামনে উঠে। বলে রাখা ভালো যে ১ ম্যাক = ১২০০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। অর্থাৎ এয়ারক্রাফট’টি প্রতি ঘণ্টা’য় ১১০০/১২০০ কিলোমিটার গতিতে চলছিলো।
২। অনেকেই দেখলাম পোস্ট করতাছেন পাইলট চাইলেই ইজেক্ট করে নিজের জীবন বাঁচাইতে পারতো কিন্তু করেনাই। ভাই শোনেন, ইজেক্ট মানে বোঝেন? এমন পরিস্থিতিতে ইজেক্ট করলে 20G সমান গতিতে পাইলটকে ছুড়ে মারা হয়। পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের চেয়ে ২০ গুণ বেশি এই তীব্র বল মেরুদণ্ডকে সংকুচিত করে এবং মেরুদণ্ডের ফাটল, ঘাড়ের আঘাত বা নরম টিস্যুতে আঘাতের মতো গুরুতর আঘাতের কারণ হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে ইজেক্ট এর পর পাইলটের হাড্ডি পর্যন্ত ভেঙ্গে যায় উচ্চ গতির কারণে। যদিও আমার ধারনা পাইলট ইজেক্ট এর চেষ্টা করেছিলো, যদি তা না করতো তাইলে তার বডি পাওয়ার কোন সম্ভাবনা থাকতো না।
৩। আমার কেন জানি মনে হয়, পারবেনা জেনেও পাইলট চাইছে এয়ারক্রাফট’কে তার এয়ারবেজে নিয়ে যাইতে। যেহেতু এটা তার জীবনের প্রথম সোলো ফ্লাইট ছিল এবং এখানে ফেইল মারলে উনার পদোন্নতির জন্য আরও ওয়েট করা লাগতো। আবার ইজেক্ট করলে যদি হাড় হাড্ডি ভাঙ্গে তাইলেও ক্যারিয়ার শেষ। আমার এগুলা বলার কারণ হল স্কুল থেকে মাত্র ১০০ মিটার দূরে বিরুলিয়া নদী, ৫০০ মিটারের মধ্যে আশুলিয়ার নদী, ৮০০/১০০০ মিটার দূরে তুরাগ নদী। ১০০০/১২০০ মিটারের মধ্যে ইজতেমা ময়দান যা সারা বছর ফাঁকা থাকে। এতো কিছু থাকার পড়েও দিয়াবারির মতো জনবহুল জায়গায় কেন পড়া লাগবে।
৪। F7 মডেলের যে যুদ্ধ বিমানটি স্কুলের উপর পড়ছে সেটার ফুয়েল কেপাসিটি প্রায় ২৩৩০ কেজি এবং ব্যাকআপ ফুয়েল ট্যাঙ্ক কেপাসিটি ১৩০০ কেজি। হাফ ম্যাক গতিতে যদি এয়ারক্রাফট’টি ১৮০০/২০০০ কেজি ফুয়েল নিয়ে কোন বিল্ডিং এর ওপর পড়ে তাহলে ২,০০০° পর্যন্ত তাপ উৎপন্ন হতে পারে। বিমানবাহিনী কি এটা জানতোনা। জানলে জনবহুল এলাকায় জীবনের প্রথম একা ফ্লাই করার জন্য একজনকে ছেড়ে দেয়া কতোটা যুক্তিযুক্ত। যদিও এই ধরনের প্রশিক্ষণের সময় পাইলটকে একা বিমান চালাতে দেয়া হয় ব্যাট সেটার জন্য আড়াই কোটি মানুষের ছোট্ট শহর ঢাকা কেই কেন চুজ করা লাগবে।
