১২:২৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫, ৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আত্রাইয়ে অন্য ফসলের দিকে ঝুঁকেছে কৃষক কমেছে পাটের আবাদ

 ন‌ওগাঁর আত্রাইয়ে দিন দিন কমছে পাটের আবাদ।
লাভজনক ফসল হিসেবে ধান,সবজি,সরিষা,ভুট্টা ইত্যাদির দিকে ঝুঁকছেন যার কারণে পাটের আবাদ দিন দিন কমছে। এছাড়াও উৎপাদন খরচের তুলনায় লাভ কম হওয়া,পচানোর জন্য পানির অভাব এবং ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার কারণেও দিন দিন কৃষকরা পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলছেন,গ্রীষ্মকালীন ভুট্টার আবাদ বৃদ্ধির কারণে ভোটার আবার কিছুটা কমেছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে,উপজেলায় আবাদযোগ্য জমি২৪০৫০ হেক্টর,এর মধ্যে এক ফসলী জমি১০৯৪৫ হেক্টর, দুফসলী জমি৮৫৭৫ হেক্টর এবং তিন ফসলী জমি৪৩৬০ হেক্টর। গত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে উপজেলায় মোট পাটের আবাদ হয়েছিল ১শত ৬০ হেক্টর জমিতে। চলতি মৌসুমে ২০২৫-২০২৬ অর্থ বছরে পাটের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল১৩৫ হেক্টর। উৎপাদন হয়েছে১৫০ হেক্টর। এর মধ্যে তোষা জাতের১১৫ হেক্টর,মেস্তা জাতের২৫ হেক্টর এবং দেশী জাতের১০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় এ বছর পাটের আবাদ কম হয়েছে।
বৈঠাখালী গ্রামের কৃষক ইউসুফ আলী বলেন,আমি প্রতিবছর প্রায় পাঁচ বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করতাম। এ বছর এক বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছি,বাকি জমিতে অন্যান্য ফসল আবাদ করেছি। পাটের ন্যায্য মূল্য পাওয়া যায় না আবার লাভও অনেক কম।
উপজেলার কাসুন্দা গ্রামের কৃষক আব্দুল কালাম বলেন,আমি এ বছর তিন বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছিলাম। সময় মত আকাশে পানি না থাকায় আমার পাট খুব ভালো হয় নাই। খরচ অনেক বেশি হয়েছে,জানিনা কি পরিমান পাট হবে যা দেখছি তাতে খরচ উঠায় কষ্টকর হয়ে যাবে।
সাহাগোলা গ্ৰামের কৃষক সাইদ ইসলাম বলেন,গতকাল কিছু পাট কেটেছি,বন্যা না হ‌ওয়ার কারণে পাট কোথায় পচাবো সে জায়গায় খুঁজে পাচ্ছি না। পাটের আবাদে যা খরচ ভালো দাম না পেলে সামনে বছর থেকে আর পাটের আবাদ করা যাবে না।
বিশা গ্ৰামের মেহের আলী বলেন,আমি সাত বিঘা জমিতে তোষা জাতের পাট চাষ করেছি। শ্রমিকের অভাবে দুই বিঘা জমির পাট কাটতে পেরেছি। বাকি জমির পাট এখনো কাটতে পারিনি। শ্রমিক দিয়ে পাট কাটাও কষ্টকর তাদের মজুরি অনেক বেশি। সব মিলিয়ে পাট চাষ করা এখন কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই ভাবছি আগামী বছর থেকে পাটের আবাদ বাদ দিয়ে অন্যান্য ফসল আবাদ করবো। কোলা গ্ৰামের কৃষক আব্দুল খালেক বলেন,পাট চাষ করতে অনেক পরিশ্রম হয়। সেই পরিশ্রমের মূল্য পাওয়া যায় না। পাটপচানোর জায়গাও পাওয়া যায় না। অন্যদিকে ভালো জায়গায় পাট না পচালে পাটের ভালো কালার হয় না আর কালার না হলে ভালো দামে পাওয়া যায় না। এত কষ্ট করে আর পাটের আবাদ করা যাবে না।
পাটের আবাদ কমে যাওয়ার বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রসেনজিৎ তালুকদার বলেন, পাটের আবাদ কৃষকের জন্য আর লাভজনক আবার নয়।
যখন একটি ফসল বৃদ্ধি পায় তখন আরেকটি ফসল কমে যায়,ভুট্টা যদিও শীতকালীন আবাদ তারপরও এই উপজেলায় গ্রীষ্মকালেও ভুট্টার আবাদ অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে কৃষকরা পাটের আবাদ বাদ দিয়ে ভুট্টাসহ ভিন্ন ফসলের দিকেই অগ্রসর হচ্ছেন।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

সন্দ্বীপে এসইডিপি’র আওতায় পারফরমেন্স বেজড গ্র্যান্টস পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান সম্পন্ন

আত্রাইয়ে অন্য ফসলের দিকে ঝুঁকেছে কৃষক কমেছে পাটের আবাদ

পোস্ট হয়েছেঃ ১০:৫৩:০৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫
 ন‌ওগাঁর আত্রাইয়ে দিন দিন কমছে পাটের আবাদ।
লাভজনক ফসল হিসেবে ধান,সবজি,সরিষা,ভুট্টা ইত্যাদির দিকে ঝুঁকছেন যার কারণে পাটের আবাদ দিন দিন কমছে। এছাড়াও উৎপাদন খরচের তুলনায় লাভ কম হওয়া,পচানোর জন্য পানির অভাব এবং ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার কারণেও দিন দিন কৃষকরা পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলছেন,গ্রীষ্মকালীন ভুট্টার আবাদ বৃদ্ধির কারণে ভোটার আবার কিছুটা কমেছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে,উপজেলায় আবাদযোগ্য জমি২৪০৫০ হেক্টর,এর মধ্যে এক ফসলী জমি১০৯৪৫ হেক্টর, দুফসলী জমি৮৫৭৫ হেক্টর এবং তিন ফসলী জমি৪৩৬০ হেক্টর। গত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে উপজেলায় মোট পাটের আবাদ হয়েছিল ১শত ৬০ হেক্টর জমিতে। চলতি মৌসুমে ২০২৫-২০২৬ অর্থ বছরে পাটের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল১৩৫ হেক্টর। উৎপাদন হয়েছে১৫০ হেক্টর। এর মধ্যে তোষা জাতের১১৫ হেক্টর,মেস্তা জাতের২৫ হেক্টর এবং দেশী জাতের১০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় এ বছর পাটের আবাদ কম হয়েছে।
বৈঠাখালী গ্রামের কৃষক ইউসুফ আলী বলেন,আমি প্রতিবছর প্রায় পাঁচ বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করতাম। এ বছর এক বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছি,বাকি জমিতে অন্যান্য ফসল আবাদ করেছি। পাটের ন্যায্য মূল্য পাওয়া যায় না আবার লাভও অনেক কম।
উপজেলার কাসুন্দা গ্রামের কৃষক আব্দুল কালাম বলেন,আমি এ বছর তিন বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছিলাম। সময় মত আকাশে পানি না থাকায় আমার পাট খুব ভালো হয় নাই। খরচ অনেক বেশি হয়েছে,জানিনা কি পরিমান পাট হবে যা দেখছি তাতে খরচ উঠায় কষ্টকর হয়ে যাবে।
সাহাগোলা গ্ৰামের কৃষক সাইদ ইসলাম বলেন,গতকাল কিছু পাট কেটেছি,বন্যা না হ‌ওয়ার কারণে পাট কোথায় পচাবো সে জায়গায় খুঁজে পাচ্ছি না। পাটের আবাদে যা খরচ ভালো দাম না পেলে সামনে বছর থেকে আর পাটের আবাদ করা যাবে না।
বিশা গ্ৰামের মেহের আলী বলেন,আমি সাত বিঘা জমিতে তোষা জাতের পাট চাষ করেছি। শ্রমিকের অভাবে দুই বিঘা জমির পাট কাটতে পেরেছি। বাকি জমির পাট এখনো কাটতে পারিনি। শ্রমিক দিয়ে পাট কাটাও কষ্টকর তাদের মজুরি অনেক বেশি। সব মিলিয়ে পাট চাষ করা এখন কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই ভাবছি আগামী বছর থেকে পাটের আবাদ বাদ দিয়ে অন্যান্য ফসল আবাদ করবো। কোলা গ্ৰামের কৃষক আব্দুল খালেক বলেন,পাট চাষ করতে অনেক পরিশ্রম হয়। সেই পরিশ্রমের মূল্য পাওয়া যায় না। পাটপচানোর জায়গাও পাওয়া যায় না। অন্যদিকে ভালো জায়গায় পাট না পচালে পাটের ভালো কালার হয় না আর কালার না হলে ভালো দামে পাওয়া যায় না। এত কষ্ট করে আর পাটের আবাদ করা যাবে না।
পাটের আবাদ কমে যাওয়ার বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রসেনজিৎ তালুকদার বলেন, পাটের আবাদ কৃষকের জন্য আর লাভজনক আবার নয়।
যখন একটি ফসল বৃদ্ধি পায় তখন আরেকটি ফসল কমে যায়,ভুট্টা যদিও শীতকালীন আবাদ তারপরও এই উপজেলায় গ্রীষ্মকালেও ভুট্টার আবাদ অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে কৃষকরা পাটের আবাদ বাদ দিয়ে ভুট্টাসহ ভিন্ন ফসলের দিকেই অগ্রসর হচ্ছেন।